বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দরর্য বিজরিত বিভাগ এই সিলেট। এই বিভাগের সংস্কৃতি, ভাষা, আবহাওয়া, পাড়াহ, চা বাগান বাংলাদেশের মানুষের নিকট এক অতি আগ্রহের জন্মদেয়। তাছাড়া পীর এবং আউলিয়াদের পূন্যভূমিও বলা হয় এই বিভাগকে। প্রতিবছর হাজারো মানুষ তাদের ভ্রমন পিপাসা মিটাতে এই বিভাগের বিভিন্ন জেলার দর্শনীয় স্থান হুলোতে যায়।
প্রশাসনঃ-
১৯৯৫ সালে সিলেটকে বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ বিভাগ হিসাবে ঘোষণা করা হয়। এর আগে সিলেট বিভাগের ৪টি জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত ছিল। সিলেট বিভাগে ৪টি জেলা (সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ) রয়েছে। এই বিভাগে মোট উপজেলা বা থানার সংখ্যা হলো ৩৮টি। তদুপরি এখানে রয়েছে ৩৪৫টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১০,২২৪টি গ্রাম এবং ১৮টি পৌরসভা।
জেলাসমূহ
১)সিলেট জেলা
২)মৌলভীবাজার জেলা
৩)সুনামগঞ্জ জেলা
৪)হবিগঞ্জ জেলা
সিলেট বিভাগ একটি প্রবাসী অধ্যুসিত জনপদ। যুক্ররাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র,অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও ইউরোপীয় দেশসমুহ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সিলেট বিভাগের মানুষের বসবাস রয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা এই বিভাগের প্রধান উত্স। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সিলেট জেলা সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রায় ২৩% এ জেলা অবদান রাখছে।[১৯] এছাড়া পাহাড়ে ও প্রান্তরে বেড়ে ওঠা কৃষি ব্যবস্থাপনা যেমন; চা, ধান, মাছ, কমলা, লেবু, আনারস, বাশঁ, আম, ইত্যাদি এই অঞ্চলের মানুষের অনন্য অবলম্বন। সিলেট বিভাগের চারটি জেলার মধ্যে তিনটিই (মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং সিলেট) চা উৎপাদনকারী জেলা।
শিল্প এবং সংস্কৃতিঃ-
বাংলাদেশের উত্তর পূর্ব দিগন্তে হাওর বাওর ও পাহাড় টিলায় বিস্তৃত সিলেট বিভাগে শিল্প সংস্কৃতির বিশাল ভাণ্ডার রয়েছে কথিত আছে, বহ্মযুদ্ধের পরই মণিপুরিরা শ্রীহট্ট ও কাছাড়ে আগমন করে এবং ঈশ্বর আরাধানার নিমিত্তে লাই নামে একপ্রকার নৃত্য পরিবেশন করতো। যা এই অঞ্চলের প্রাচীন সংস্কৃতির মধ্যে ধরা হয়। পরবর্তিতে আর্য জাতি সহ আরব, তুর্কী, ফার্সি প্রভৃতি ঔপনিবেশিকদের আগমনের মধ্য দিয়ে প্রাচীন সংস্কৃতিতে সম্মিলিত হয় ঔপভাষিক সংস্কৃত। রচিত হয় বিভিন্ন শাস্ত্রীয় গ্রন্থ সহ পুথিঁ, লোকসঙ্গীত, প্রবাদ প্রবচন, কিচ্ছা, ধাঁধাঁ ইত্যাদি।
নদ-নদীঃ-
সিলেট বিভাগের উল্লেখযোগ্য নদ-নদীসমূহ হচ্ছে
পিয়াইন গাং
সারি গোয়াইন
বাগরা গাং
নওয়া গাং
শেওলা
ধামালিয়া
মনাই
বড়দাল
জুরি
মনু্
ধলাই
লংলা
কারাঙ্গি
খোয়াই
সুতাং
কুশিয়ারা
মাধবপুর
মহাসিং
শিক্ষ্যাঃ-
সিলেট বিভাগে রয়েছে ২টি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় (১টি কৃষি)। ১টি সরকারী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। ৪টি বে-সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়। ৪টি মেডিকেল কলেজ। ৩টি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট। ১টি ইমাম ট্রেনিং একাডেমী।
দর্শনীয় স্থানঃ- বাংলাদেশের ভ্রমন পিয়াসু মানুষের অন্যতম পছন্দ এই সিলেট বিভাগ। এই অঞ্চলটিতে রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র চা বাগানের অঞ্চল। তাই এই বিভাগটিকে চা বাগানের দেশ বলা হয়। তাছাড়া এই বিভাগে রয়েছে অনেক পাহাড় যা ভ্রমন পিয়াসু মানুষের আগ্রহের অন্যতম আকর্ষন হিসাবে পরিগণীত হয়।
১)শাহ পরাণের মাজার
২)শ্রী শ্রী দুর্গা বাড়ী মন্দির ও ইকো পার্ক
৩)জাফলং
৪)লালাখাল
৫)হাকালুকি হাওর
৬)নীলাদ্রি লেক
৭)টাঙ্গুয়ার হাওর
৮)ভোলাগঞ্জ
৯)হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার
১০)মালনীছড়া চা বাগান
১১)লোভাছড়া পাথর কোয়ারী
১২)সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ
১৩)জাকারিয়া সিটি
১৪)এডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ড
১৫)ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা
১৬)রায়ের গাঁও হাওর
১৭)লাক্কাতুরা চা বাগান
১৮)মালনি ছড়া চা বাগান
১৯)হাকালুকি হাওর
২০)রাতারগুল
২১)বিছনাকান্দি
২২)পানথুমাই
২৩)কৈলাশটিলা
২৪)ড্রীমল্যান্ড বিনোদন পার্ক
যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ-
যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক থেকে এই বিভাগের প্রতিটা জেলাতে খুব সহজে যোগাযোগ বাহ যাতাযাত করা সম্ভব হয়। তাছাড়া সিলেট বিভাগ রেল, সড়কপথ, আকাশপথ সংযোগ ব্যবস্থা থাকায় যাত্রাসুবিধার প্রধান স্থল হিসাবে গণ্য করা হয় এই বিভাগকে। এই বিভাগের অন্তরগত জেল শহর গুলোর মদ্যেও যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত মানের এবং সহজতরো।