রংপুর বিভাগ

রংপুর বিভাগ বাংলাদেশের একটি প্রশাসনিক বিভাগ। এটি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পূর্ব থেকেই (অর্থাৎ, পাকিস্তান আমল থেকেই) বৃহত্তর রংপুর (সাবেক রংপুর জেলা) ও বৃহত্তর দিনাজপুর (সাবেক দিনাজপুর জেলা) ছিল রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত; পরবর্তীকালে সরকারের প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস কার্যক্রমের সূত্রে ২০১০ সালে ২৫ জানুয়ারি বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুরের আটটি জেলা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, রংপুর ও লালমনিরহাট নিয়ে বাংলাদেশের সপ্তম বিভাগ রংপুর গঠিত হয়।

সীমানাঃ-

এর উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট, বগুড়া ও ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর জেলা; পূর্বে ভারতের আসাম রাজ্য এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অবস্থান। রংপুর বিভাগ কৃষি, প্রাকৃতিক সম্পদ, খনিজ সম্পদ ইত্যাদিতে সমৃদ্ধ।

ইতিহাসঃ-

বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক পূণর্বিন্যাসসংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (National Implementation Committee for Administrative Reform:NICAR) ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি তারিখে রংপুরকে দেশের সপ্তম বিভাগ হিসেবে অনুমোদন দেয়। এর আগে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ জুলাই তারিখে মন্ত্রীসভার বৈঠকে রংপুরকে বিভাগ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে একটি কমিটি তৈরি করা হয় এবং কমিটি ২১ জুলাই তারিখে প্রতিবেদন জমা দেয়।

জেলাসমূহঃ-

৮টি জেলা নিয়ে গঠিত এই বিভাগটি; এগুলো হলোঃ

১)কুড়িগ্রাম,

২)গাইবান্ধা,

৩)ঠাকুরগাঁও,

৪)দিনাজপুর,

৫)নীলফামারী,

৬)পঞ্চগড়,

৭)রংপুর এবং

৮)লালমনিরহাট।

খাওয়া দাওয়াঃ-

‘সিদল ভর্তা’ রংপুরের জনপ্রিয় খাবার, যা কয়েক ধরনের শুঁটকির সঙ্গে নানা ধরনের মসলা মিশিয়ে বেটে তৈরি করা হয়। এছাড়াও রয়েছে বিখ্যাত “হাড়িভাঙ্গা” আম, তামাক ও আখ। এখানে সাধারণভাবে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়।

দর্শনীয় স্থান

১)তাজহাট জমিদার বাড়ি

২)বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র

৩)স্বপ্নপুরী

৪)বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি

৫)কান্তজীউ মন্দির

৬)রামসাগর

৭)তিন বিঘা করিডোর ও দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল

৮)তিস্তা ব্যারেজ

৯)চা বাগান

১০)রক মিউজিয়াম

১১)চান্দামারী মসজিদ

১২)উত্তরা ইপিজেড

১৩)নীলসাগর

শিক্ষাঃ-

রংপুর বিভাগে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করার জন্য অনেক গুলো বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ রয়েছে। তাছারা এই অঞ্চলে অনেক গুলো ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

অর্থনিতিঃ-

রংপুর একটি কৃষি প্রধান বিভাগ। এই বিভাগের অধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজ করে তাদের জিবিকা নির্বাহ করে। বাংলাদেশে উৎপাদিত মোট ধান এবং সবজির এক বিরাট অংশ উৎপাদিত হয় এই অঞ্চলে। তাছাড়া এই অঞ্চলে কিছু শিল্প কারখানা রয়েছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ-

যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক থেকে এই বিভাগের প্রতিটা জেলাতে খুব সহজে যোগাযোগ বাহ যাতাযাত করা সম্ভব হয়। তাছাড়া রংপুর বিভাগে রেল, সড়কপথ, আকাশপথ সংযোগ ব্যবস্থা থাকায় যাত্রাসুবিধার প্রধান স্থল হিসাবে গণ্য করা হয় এই বিভাগকে। এই বিভাগের অন্তরগত জেল শহর গুলোর মদ্যেও যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত মানের এবং সহজতরো।