টলেন্টিনির সাধু নিকোলাস গির্জা

1050

বাংলাদেশে পুরনো যে কয়টি গির্জা রয়েছে তার সংখ্যা হাতে গুনে বলে দেওয়া যায়। পর্যটক তাভারনিয়ার ও মানরিকের বর্ণনা মতে, সবচেয়ে পুরনো গির্জাটি ১৬১২ সালে অগাস্টিয়ানদের নির্মিত। তবে সে গির্জার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায়নি। দ্বিতীয় পুরনো গির্জাটি টলেন্টিনির সাধু নিকোলাস বা নাগরী গির্জা। যেটি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের নাগরী গ্রামে ১৬৬৩ সালে নির্মিত। গির্জাটি এই উপমহাদেশেরও অন্যতম প্রাচীনতম গির্জা। স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে ও পর্তুগীজ ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তায় সাধু নিকোলাস গির্জাটি নির্মাণ করেন। গির্জা  এলাকায় বিশাল ২টি সমাধী এলাকা রয়েছে। পুরাতন গির্জাটির পাশেই বিশাল এলাকা জুড়ে আধুনিকভাবে নতুন গির্জা ভবন নির্মিত হয়েছে।

বর্তমান পুরনো ভবনটি ১৬৬৩ সালে নির্মিত কিনা তা নিয়ে রয়েছে মতান্তর। তবে সবচেয়ে প্রচলিত মত হচ্ছে ভবনটির স্থানে পূর্বে কাঠ-খড় দিয়ে নির্মিত একটি গির্জা ছিল। একদা তা আগুন ধরে পুরো গির্জা পুরে গেলে বর্তমান ভবনটি পুরে যাওয়া গির্জার স্থানে প্রতিস্থাপিত করা হয়। বর্তমান পাকা ভবনটি ১৮০০ সালের মাঝামাঝি কোনো এক সময় নির্মিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

পর্তুগীজ ভাষায় বাংলা ভাষার প্রথম যে ব্যাকরণ ও ডিকশনারি রচনাকারী পাদ্রী ম্যানুয়েল দ্যা অ্যাসুম্পসাও এই গির্জারই পাদ্রী ছিলেন এবং এ গির্জাতেই তিনি সে গ্রন্থ রচনার কাজ করেছিলেন।

স্থানীয়দের অধিকাংশই টলেন্টিনির সাধু নিকোলাসের গির্জাকে নাগরী গির্জা নামে চেনেন। টলেন্টিনির সাধু নিকোলাস গির্জা বা নাগরী গীর্জার খুব কাছেই পানজোড়া গির্জা বা সাধু এন্টোনিস চার্চ। যেখানে প্রতি বছর সাধু আন্তুনির তীর্থোত্সব অনুষ্ঠিত হয়। তবে দর্শনার্থীদের বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে এটি জীবিত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। তাই ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট হয় এমন আচরনের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

যেভাবে যাবেন:

নিজস্ব বাহন থাকলে রাজধানী ঢাকা থেকে ‘টলেন্টিনির সাধু নিকোলাসের গির্জা’ যেতে ৫০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা সময় লাগে। ৩০০ ফিট থেকে কাঞ্চন ব্রীজ পর্যন্ত ২০ মিনিট, তারপর বাইপাসে উঠে গাজীপুর মীরের বাজার দিকে ২০ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে পানজোড়া মোড়ে যেতে হবে। সেখান থেকে সাধু নিকোলাসের গির্জা ১০ মিনিটের পথ। সেখানে গেলেই দেখা যাবে দৃষ্টিনন্দন নাগরী টলেন্টিনির সাধু নিকোলাসের গির্জা।