পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী

1726

বাংলাদেশের জেলা গুলোর মধ্যে টাঙ্গাইল জেলাতে সব থেকে বেশি জমিদার বাড়ি রয়েছে। পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী তাদের মধ্যে অন্যতম। টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলায় এই বাড়িটি অবস্থিত। প্রায় ৫৪ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ জমিদার বাড়িতে আরো সাত-আটটি ভবন রয়েছে। তবে বর্তমানে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ির ৩টি ভবন আজও অবিকৃত অবস্থায় টিকে আছে। এই বাড়ির দক্ষিণ দিকে আছে বিশাল দীঘি, নাম উপেন্দ্র সরোবর। রায় বাহাদুর সতীশ চৌধুরীর বাবার নামে এ নামকরণ করা হয়। বর্তমানে এই বাড়িটি অধিগ্রহণের পর এখানে বিসিআরজি ডিগ্রী কলেজ গড়ে তোলা হয়েছে।

ইংরেজ আমলের শেষ দিকে এবং পাকিস্তান আমলের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তৎকালীন বৃটিশ রাজাধানী কলকাতার সাথে মেইল স্টিমারসহ মাল এবং যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিস চালু ছিল। একপর্যায়ে নাগরপুরের সাথে কলকাতার একটি বানিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীতে পশ্চিম বঙ্গ কলকাতা থেকে আসেন রামকৃষ্ণ সাহা মন্ডল (ধনাঢ্য ব্যক্তি)।ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে তিনি পাকুটিয়ায় জমিদারী শুরু করেন। প্রায় ১৫ একর এলাকা জুড়ে একই নকশার পর পর তিনটি প্যালেস বা অট্টালিকা নির্মাণ করা হয় (১৯১৫)। তখন জমিদার বাড়িটি তিন মহলা বা তিন তরফ নামে পরিচিত ছিল।

প্রতিটি বাড়ীর মাঝ বরাবর মুকুট হিসাবে লতা ও ফুলের অলংকরণে কারুকার্য মন্ডিত পূর্ণাঙ্গ দুই সুন্দরী নারী মূর্তি রয়েছে। এবং প্রতিটি মহলের রয়েছে নিজস্ব সৌন্দর্য। রেলিং টপ বা কার্নিশের উপর রয়েছে বিভিন্ন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য সুন্দর সুন্দর ছোট আকৃতির নারী মূর্তি। এই অট্টালিকা গুলো পাশ্চাত্য শিল্প সংস্কৃতির এক অনন্য সৃষ্টি, যার লতাপাতার চমৎকার কারুকাজ গুলো মুগ্ধ করার মতো। এছাড়া পূজা মন্ডপের শিল্পিত কারুকাজ শতবছর পর এখনও পর্যটককে মুগ্ধ করে।

যেভাবে যাওয়া যায়:

ঢাকা থেকে ঢাকা-আরিচা রোডে কালামপুর স্ট্যান্ড হতে সাটুরিয়া হয়ে সোজা উত্তরে ১৫কি.মি এলেই পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী । এবং টাঙ্গাইল শহর হতে দক্ষিণে দেলদুয়ার হয়ে লাউহাটি এবং লাউহাটি হতে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী।