নবীনগর উপজেলার ইতিহাস প্রসিদ্ধ বিদ্যাকুট গ্রামের একটি স্থান। স্থানটি গ্রামের মাঝখানে অবস্থিত। স্থানটি ভুতুড়ে বাড়ির মত নির্জন একটি জায়গা। এখানে অবস্থিত প্রায় দুই শতাধিক বছরের পুরাতন জীর্ণ একটি মন্দির। মন্দিরটির নাম সতীদাহ মন্দির। এটি নির্মাণ করেছিলেন বিদ্যাকুটের প্রসিদ্ধ হিন্দু দেওয়ান বাড়ির লোক দেওয়ান রাম মানক। এদেশে হিন্দু সমাজে সতীদাহ প্রথা চালু ছিল। স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে মৃত স্বামীর সঙ্গে জীবন্ত দাহ করা হত। কোন কোনক্ষেত্রেই সদ্য বিধবারা স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করত। কিন্তু অধিকাংশক্ষেত্রেই বলপূর্বক দাহ করা হত। জীবন্ত সতী নারীর চিৎকার যেন না শুনা যায় সে জন্য খুব জোরে ঢাক এবং বাদ্য যন্ত্র বাজানো হত।
হিন্দু সমাজের এই অমানবিক এবং বীভৎস প্রথা ১৮২৯ সনে লর্ড উইলিয়াম বেনটিংক আইন করে বন্ধ করে দেন। লর্ড বেনটিংক কর্তৃক সতীদাহ নিষিদ্ধ ঘোষণার পর ভারতের অন্যান্য স্থানের মত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও এ প্রথাবন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ১৮৩৫ সনে রাম মানিকের মাতাকে এই সতীদাহ মন্দিরটিতে সর্বশেষ সতীদাহ বরণ কারিণীর শ্বেত পাথরের একটি নাম ফলক বসানো ছিল। গত স্বাধীনতা যুদ্ধেও সময় এটি বিনষ্ট হয়। বর্তমানে বিদ্যাকুটে তাদের বংশধরেরা না থাকায় সেই সতী নারীর নাম জানা যায়নি।
যোগাযোগ ব্যবস্থা:-
পৌরতলা থেকে রিক্সা কিংবা অটো করে গোকর্ণঘাট , গোর্কণ ঘাট বটগাছ এর নিচ থেকে বর্ষা মৌসুমে আর গোকর্ণ ঘাট ইটের ভাটার কাছ থেকে গ্রীষ্ম মৌসুমে সকাল ৭ টা থেকে প্রতিদিন ৪০ মিনিট পর পর বিদ্যাকুট এর উদ্দেশ্যে নৌকা যায়, সময় লাগে এক ঘন্টা ভাড়া ২০ টাকা। তাছাড়াও রসুলপুর থেকে মটর বাইকে বিদ্যাকুট বাজারে যাওয়া যায়। সময় আধা ঘন্টা এবং ভাড়া ৭৫ টাকা। বিদ্যাকুট নৌকা ঘাট থেকে রিক্সা বা অটোযোগে সতিদাহ মন্দির যেতে হবে, সময় লাগবে ১৫ মিনিট, ভাড়া ২৫ টাকা। বিদ্যাকুট বাজার থেকে রিক্সা বা অটোযোগে সতিদাহ মন্দির যেতে সময় লাগবে ৭ মিনিট, ভাড়া ১০ টাকা ।