সুয়াপাড়া মিয়া বাড়ি মসজিদ

1013

মুন্সিগজ্ঞ জেলা প্রাচীন বাংলার গৌরবময় স্থান বিক্রমপুরের অংশ। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের দিক থেকে জেলাটি নিজ মহিমায়া উজ্বল। এ জেলার প্রাচীন নিদর্শনসমূহের সাথে জড়িয়ে আছে হাজারো গৌরব গাঁথা, সুখ-দু:খের নানা উপাখ্যান। তাদের মধ্যে অন্যতম একটি হল প্রাচীন দীঘির পশ্চিম পাড়ে সুয়াপাড়া মিয়া বাড়ি মসজিদ। এ মসজিদটি কবে, কখন, কীভাবে কে নির্মাণ করেন তার ইতিহাস কোথাও লিখা নেই। কেউ বলেন এটি গায়েবী মসজিদ। আবার কেউ মত দেন এটি সম্রাট শাহজাহান নির্মাণ করেন। আবার কয়েক জন বললেন মসজিটটি নির্মাণ করেন সম্রাট জাহাঙ্গীর। এ গ্রামের যাদের বয়স ৭০-৮০ এর মধ্যে তারা বলেন মসজিটি সম্রাটআকবর নির্মাণ করেন। সম্রাট আকবরের কোন নিদর্শন মুন্সীগঞ্জ জেলা বা প্রাচীন বিক্রমপুরে নেই। সম্রাট  শাহজাহান এর সময়ও কোন নেই। সম্রাট জাহাঙ্গীরের সেনাপতি ইসলাম খান চিশতী ঢাকা বিজয়ের আগে বিক্রমপুর জয় করেন। এ বিক্রমপুরে চাঁদরায় কেদার রায়ের সাথে ইসলাম খানের অন্তত পাঁচটি যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে ইসলাম খান জয়ী হন। ইসলাম খান মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের পাথরঘাটায় ‘বিক্রমপুর’ জয় করে মসজিদ নির্মাণ করেন। যা পাথরঘাটা মসজিদ নামে পরিচিত।

সুয়াপাড়ার এ প্রাচীন মসজিদটি পাঠান এবং মুঘল পেটার্নে নির্মিত। এ মসজিদটি খুব সম্ভবত কররানী শাসকদের সময় ব্রজযোগিনী গ্রামের সুয়াপাড়ায় নির্মিত হয়। ‘মসজিদটি ১৫৬৮Ñ১৫৭৫ সালে নির্মাণ হয় Ñ এমনমত বিক্রমপুর ইতিহাস পরিষদের।’ প্রাচীন এ মসজিদটির আয়তন ১৮ও১৫ ফুট। দেয়াল ৩ ফুট পুরো। মসজিদের ছাদে ১ টি গম্বুজ। পশ্চিম দেয়ালে ১টি মেহেরাব ও একটি মিম্বার রয়েছে। মসজিদের ৪ কোণে ৪টি টারেট রয়েছে। টারেটের উপরে ছোট ছোট মিনার রয়েছে। একটি প্লাটফর্মের উপর মসজিদের অবস্থান। এপ্রিল ২০০৩ সালে মসজিদটি পূর্বাংশে বৃদ্ধিও দ্বিতল করা হয়েছে। পুরাতন মসজিদটি সংরক্ষণ করে মসজিদটির সংস্কার করা হয়েছে।

যেভাবে যাবেনঃ-

ঢাকা থেকে মাত্র ২৬ কিলোমিটার দূরত্বে মুন্সিগঞ্জ জেলাটি অবস্থিত। ঢাকার গুলিস্তান হতে কয়েকটি কোম্পানির মিনিবাস ছেড়ে যায় এই জেলার উদ্দেশ্যে। বজ্রযোগিনী বাজার থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে সুয়াপাড়া প্রাচীন মসজিদ।