বাংলাদেশ সৃষ্টির আগে থাকেই এই অঞ্চলে অনেক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়। তেমনি দেশের উত্তরাঞ্চলের সীমান্ত জেলা জামালপুরের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহীভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান জিল বাংলা সুগার মিলস লিঃ। ১৯৫৮ সনে তৎকালীনপাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এটি জেলা শহরথেকে ৪০ কিঃমিঃ উত্তরে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায়স্থাপিত হয়। স্থাপনাকালে এর নাম ছিল জিল পাক সুগার মিলস লিঃ।
স্বাধীনতার পরপ্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে জিল বাংলা সুগার মিলস লিঃ করা হয়।বর্তমানে বাংলাদেশ সুগার এন্ড ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ করপোরেশনের অধীনে অত্রমিলটি পরিচালিত হয়ে আসছে।সাধারণত নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যমত্ম ক্রাশিং কার্যক্রম চলে। ক্রাশিং কালে তা প্রত্যক্ষ করার জন্য দূর-দূরান্তথেকে অসংখ্য নারী পুরুষ সমবেত হন।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে জিলবাংলা সুগার মিল স্থাপিত হয় ১৯৫৮ সালে। ৫৪ বছরের পুরনো এই মিলটির যন্ত্রপাতির আয়ুষ্কাল নেই। প্রতিবছর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে সচল রাখলেও বর্তমানে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে উৎপাদন খরচবেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া জাতীয় পে-স্কেল ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন করায় বেতন ভাতাদি খাতে প্রায় দ্বিগুণ খরচ বৃদ্ধি, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে নিয়োগকৃত মিলের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকরা অধিক সংখ্যক অবসর গ্রহণ করায় তাদের নতুন বেতন ও মজুরি কাঠামোতে গ্রাচুইট পরিশোধ বাবদ বিপুল অঙ্কের খরচ বেড়ে গেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে বন্ধ থাকায় এখন এর এই কারখানা পরিদর্শন করতে কোন পর্যটক কিংবা ভ্রমণকারী আসে না। তবে এই স্থাপনাটি বাংলারবুকে তার ইতিহাস এবং ঐতিহ্য নিয়া সারা জীবন টিকে থাকবে এই আসাই ব্যাক্ত করি।
যেভাবে যাবেনঃ-
জামালপুর জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমানে খুবই ভাল। বৃটিশ আমল থেকেই ঢাকা থেকে বাহাদুরাবাদ এবং জগন্নাথগঞ্জ ঘাটের সাথে ট্রেণ যোগাযোগ ছিল। রেলপথে মানুষ স্বাচ্ছন্দে কম খরচে যাতায়াত করতে পারতেন। বর্তমানে ঢাকা থেকে রেল ও সড়ক পথে জামালপুরে যাতায়াত করা যায়। ঢাকা থেকে রেলপথে জামালপুরের দূরত্ব ১৭৭ কিঃমিঃ এবং সড়ক পথের দূরত্ব ২০০ কিঃমিঃ। ৪টি আন্ত:নগর ট্রেনসহ- বেসরকারী ট্রেন প্রতিদিন চলাচল করে। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে এটি অবস্থিত। জামালপুর থেকে এর দুরত্ব ৪৭ কিঃ মিঃ। জামালপুর থেকে সিএনজি করে যাওয়া যায়।