লক্ষ্মীপুর জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল,এই অঞ্চলটি বাংলাদেশের রাজনীতি এবং অর্থনীতির দিক থেকে, বিখ্যাত একটি শহর। এর আয়তন সমূহ বাংলাদেশে লক্ষ্মীপুরের . অবস্থান, পশ্চিমে ভোলা উত্তরে চাঁদপুর পূর্বে নোয়াখালী দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর।
অবস্থান ও আয়তন:-
এর মোট আয়তন ১৪৫৫.৯৬ বর্গ কিমি। এটির উত্তরে চাঁদপুর জেলা, দক্ষিণে ভোলা ও নোয়াখালি জেলা, পূর্বে নোয়াখালি জেলা এবং পশ্চিমে বরিশাল ও ভোলা জেলা এবং মেঘনা নদী দ্বারা পরিবেষ্টিত।
নামকরনের ইতিহাস:-
লক্ষ্মীপুর নামকরণ হয়েছে তা নিয়ে কয়েকটি মতপ্রচলিত রয়েছে। লক্ষ্মী, ধন-সম্পদ ও সৌভাগ্যের দেবী (দূর্গা কন্যা ও বিষ্ণু পত্মী) এবং পুর হলো শহর বা নগর। এ হিসাবে লক্ষ্মীপুর এর সাধারণ অর্থ দাঁড়ায় সম্পদ সমৃদ্ধ শহর বা সৌভাগ্যের নগরী। ঐতিহাসিক কৈলাশ চন্দ্র সিংহ ‘রাজমালা’ বা ‘ত্রিপুরা’র ইতিহাস লিখতে গিয়ে তৎকালীন নোয়াখালীর পরগণা ও মহালগুলোর নাম উল্লেখ করেছেন। এতে দেখা যায়, বাঞ্চানগর ও সমসেরাবাদ মৌজার পশ্চিমে ‘লক্ষ্মীপুর’ নামে একটি মৌজা ছিল। আজকের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর মৌজাই তৎকালীন লক্ষ্মীপুর মৌজা। আবার অন্যমতে, সম্রাট শাহজাহানের পুত্র শাহ সুজা আরাকান পলায়নের সময় ১৬২০ খ্রিস্টাব্দের ৬ মে ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি ধাপা ও শ্রীপুর হয়ে ৯ মে ‘লক্ষ্মীদাহ পরগনা’ ত্যাগ করে ভূলুয়া দূর্গের ৮ মাইলের মধ্যে আসেন। ১২ মে ভূলুয়া দূর্গ জয় করতে না পেরে আরাকান চলে যান। সেই লক্ষ্মীদাহ পরগনা থেকে লক্ষ্মীপুর নামকরণ করা হয়েছে বলে কেউ কেউ ধারণ করেন। লক্ষ্মীপুর শহরের পূর্ব পাশে শাহ সুজার নামানুসারে একটি সড়কের নামকরণ করা হয় ‘সুজা বাদশা সড়ক’। বিখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক সানা উল্লাহ নূরী ‘সুজা বাদশা সড়ক’ নামে একটি ইতিহাস গ্রন্থও রচনা করেছেন। ১৬১৪ খ্রিস্টাব্দে মগ ও ফিরিংগীদের মিলিত বাহিনী ভূলুয়া, ভবানীগঞ্জ ও ইসলামাবাদ আগুন দিয়ে পুড়ে দেয়। স্যার যদুনাথ সরকার এ সংক্রান্ত বর্ণনায় লিখেছেন, ইসলামাবাদ চাটগাঁ শহর নয়। ভূলুয়ার পশ্চিমে একটি দূর্গ সমৃদ্ধ শহর। ঐতিহাসিক ড. বোরাহ ইসলামাবাদকে লক্ষ্মীপুর বলে ধারণা করেছেন। এভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় যে, তৎকালীন লক্ষ্মীপুর মৌজার অংশ মেঘনা পাড়ের দুর্গ সমৃদ্ধ কামানখোলাই ইসলামাবাদ নামের মগ ও ফিরিংগীদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিল। শ্রী সুরেশ চন্দ্রনাথ মুজমদার ‘রাজপুরুষ যোগীবংশ’ নামক গবেষনামূলক গ্রন্থে লিখেছেন দালাল বাজারের জমিদার রাজা গৌর কিশোর রায় চৌধুরী ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী থেকে রাজা উপাধি পেয়েছেন। তাঁর পূর্বপুরুষরা ১৬২৯-১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে দালাল বাজার আসেন। তাঁর বংশের প্রথম পুরুষের নাম লক্ষ্মী নারায়ন রায় (বৈষ্ণব) এবং রাজা গৌর কিশোরের স্ত্রীর নাম লক্ষ্মী প্রিয়া। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, লক্ষ্মী নারায়ন রায় বা লক্ষ্মী প্রিয়ার নাম অনুসারে লক্ষ্মীপুরের নামকরণ করা হয়।
সীমানা:-
রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১৫৭ কিলোমিটার। এ জেলার উত্তরে চাঁদপুর জেলা; পূর্বে ও দক্ষিণে নোয়াখালী জেলা এবং পশ্চিমে মেঘনা নদী, ভোলা জেলা ও বরিশাল জেলা অবস্থিত। লক্ষ্মীপুর শহর রহমতখালি নদীর তীরে অবস্থিত।
লক্ষ্মীপুর জেলায় মোট ৫টি উপজেলা:-
০১ কমলনগর
০২ রামগঞ্জ
০৩ রামগতি
০৪ রায়পুর
০৫ লক্ষ্মীপুর সদর
বিখ্যাত খাবার:-
সুপারি
বিখ্যাত স্থান:-
দালালবাজার জমিদারবাড়ি
কামানখোলা জমিদারবাড়ি
তিতা খাঁ জামে মসজিদ
জ্বীনের মসজিদ
খোয়া সাগর দীঘি
মটকা মসজিদ
মজু চেীধুরী ঘাট
যোগাযোগ ব্যবস্থা:-
লক্ষ্মীপুর জেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক হল ঢাকা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়ক এবং চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর মহাসড়ক। সব ধরণের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়।