লালমনিরহাট দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি জেলা। উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে রংপুর জেলা, পূর্বে কুড়িগ্রাম ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, পশ্চিমে নীলফামারী ও রংপুর জেলা। লালমনিরহাটকে ছিটমহলবেষ্টিত জেলা বলা যায়। এ জেলায় ৩৩ টি ছিটমহল রয়েছে। এ জেলার বৃহত্তম ছিটমহল দুটি হচ্ছে দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা। তিন বিঘা করিডরের মাধ্যমে এই দুই ছিটমহলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কৃষি নির্ভর এই জেলায় ৯০% মানুষ কোন না কোন ভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল।লালমনিরহাট দিগন্ত বিস্তৃত সমতল ভুমিতে প্রতি বছর প্রচুর পরিমানে ধান, গম, আলু, তামাক এবং বিভিন্ন প্রকার ফসল উৎপন্ন হয়। এই জেলায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা সেচ প্রকল্প সেচ ও সম্পুরক সেচ সুবিধা দিয়ে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
নামকরনের ইতিহাস:-
লালমনিরহাট নামকরণ নিয়ে জনশ্রুতি আছে যে, বৃটিশ সরকারের আমলে বর্তমান লালমনিরহাট শহরের মধ্যে দিয়ে রেলপথ বসানোর সময় উল্লিখিত অঞ্চলের রেল শ্রমিকরা বন-জঙ্গল কাটতে গিয়ে জনৈক ব্যক্তি’লালমনি’ পেয়েছিলেন। সেই লালমনি থেকেই পর্যায়ক্রমে লালমনিরহাট নামের উৎপত্তি হয়েছে। অন্য একসূত্র থেকে জানা যায়, বিপ্লবী কৃষক নেতা নুরুল দীনের ঘনিষ্ঠ সাথী লালমনি নামে এক ধনাঢ্য মহিলা ছিলেন। যার নামানু সারে লালমনিরহাট নাম করণ করা হয়েছে।
ভৌগোলিক সীমানা:-
লালমনিরহাট জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে রংপুর জেলা ও কুড়িগ্রাম জেলা, পূর্বে কুড়িগ্রাম জেলা এবং পশ্চিমে নীলফামারী জেলা অবস্থিত।
লালমনিরহাট জেলায় ৫টি উপজেলা
আদিতমারী
কালীগঞ্জ
পাটগ্রাম
লালমনিরহাট সদর এবং
হাতীবান্ধা
কৃতি ব্যক্তিত্ব:-
শেখ ফজলল করিম (১৮৮২ বাংলা ৩০শে চৈত্র ১২৮৯ – সেপ্টেম্বর ২৮, ১৯৩৬) একজন স্বনামধন্য বাঙালি সাহিত্যিক
ফকির মজনু শাহ
বিখ্যাত স্থান:-
তিন বিঘা করিডোর ও দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল
তিস্তা ব্যারাজ ও অবসর রেস্ট হাউস
বুড়িমারী স্থলবন্দর
শেখ ফজলল করিমের বাড়ি ও কবর
তুষভান্ডার জমিদারবাড়ি
কাকিনা জমিদারবাড়ি
নিদাড়িয়া মসজিদ
হারানো মসজিদ
সিন্দুরমতি দীঘি
কালীবাড়ি মন্দির ও মসজিদ
বিমানঘাঁটি
তিস্তা রেলসেতু
হালা বটের তল
লালমনিরহাট জেলা জাদুঘর
দালাইলামা ছড়া সমন্বিত খামার প্রকল্প
কিভাবে যাবেন:-
সড়ক পথে ঢাকা হতে লালমনিরহাটের দূরত্ব ৩৪৩ কিলোমিটার এবং রেলপথে ঢাকা হতে লালমনিরহাট রেল স্টেশনের দূরত্ব ৫৮০ কিলোমিটার। ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ, শ্যামলী, কল্যানপুর, কলাবাগান, ফকিরাপুল – প্রভৃতি বাস স্টেশন থেকে লালমনিরহাট আসার সরাসরি দুরপাল্লার এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস আছে; এগুলোতে সময় লাগে ৬.৩০ হতে ৮ ঘন্টা।
ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ট্রেনে সরাসরি এখানে আসা যায়। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
লালমনিরহাটে সরাসরি আকাশ পথে আসা যায় না; যদিও এখানে একটি পরিত্যক্ত বিমান বন্দর রয়েছে। ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের সাথে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে সৈয়দপুর বিমানবন্দর হয়ে – বিমানে সৈয়দপুর এসে তারপর সড়ক পথে লালমনিরহাট আসতে হয়।