বাংলাদেশে যে কয়টি জমিদার বাড়ী সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাথে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে তাদের মধ্যে টাঙ্গাইল জেলার করটিয়া জমিদার বাড়ি অন্যতম। টাঙ্গাইল জেলার অন্তর্ভুক্ত করটিয়া ইউনিয়নে এই ঐতিহাসিক জমিদার বাড়িটি অবস্থিত। টাঙ্গাইলের করটিয়ায় পুটিয়া নদীর পাশে ওয়াজেদ আলী খান পন্নী এই বিখ্যাত জমিদারবাড়িটি নির্মাণ করেন। ১০০০ মিটার x ৫০০ মিটার এলাকায় অবস্থিত জমিদারবাড়ির আশেপাশে বেশকিছু প্রাচীন ভবন ও পুকুর রয়েছে। জমিদারবাড়ির মূল ফটকটি বর্তমানে তালাবদ্ধ রাখা হয় এবং বাইরের কাউকে এখানে ঢুকতে দেওয়া হয়না। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায় যে, বাংলা বৈশাখ মাসের এক এবং বারো তারিখে ছাড়াও দুই ঈদের দিন জমিদারবাড়িটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

প্রাকৃতিক এবং নিরিবিলি পরিবেশের এই জমিদার বাড়ীটি প্রায় ১ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ০.৫ কিলোমিটার প্রস্থ বিশিষ্ট প্রাচীরঘেরা যেখানে রয়েছে লোহার ঘর, রোকেয়া মহল, রাণীর পুকুরঘাট, ছোট তরফ দাউদ মহল এবং বাড়িসংলগ্ন মোগল স্থাপত্যের আদলে গড়া মসজিদ একটি ঐতিহাসিক স্থাপত্য। মোগল ও চৈনিক স্থাপত্যের মিশেলে নির্মিত জমিদার বাড়ীটি প্রথম দর্শনেই আপনার মন কেড়ে নেবে। করটিয়া জমিদার বাড়ির দক্ষিণে রয়েছে প্রায় ১৪০ বছরের পুরনো একটি মসজিদ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন সময়ে সমপ্রসারিত এই মসজিদটি ৩টি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশ ৩ গুম্বজ বিশিস্ট ছিল। দ্বিতীয় অংশে রয়েছে ৫টি গুম্বজ | তৃতীয় অংশে কোন গুম্বজ নেই। মসজিদের উপরে উত্তরে এবং দক্ষিণে রয়েছে ৪টি করে ছোট গুম্বজ । ১৮৭১ সালে হাফেজ মাহমুদ আলী খান পন্নী মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদের সমানে রয়েছে ত্রিকোণ বিশিষ্ট মিনার। মিনারের দু’পাশে সিড়ি। মসজিদের মূল অংশে ৫টি দরজা। দ্বিতীয় অংশে উত্তর ও দক্ষিণে ১টি করে দরজা এবং তৃতীয় অংশের পূর্ব দিকে রয়েছে ৫টি দরজা। ভেতরে প্রাচীন আমলের ৩টি ঝুলন্ত ঝাড় এবং ১টি সিন্ধুক। প্রবেশ পথ বরাবর দেয়ালে ৩টি মেহরাব যেগুলোর কারুজাকগুলি সকলেরই দৃষ্টি কাড়ে।
যেভাবে যাবেনঃ-
ঢাকার মহাখালী থেকে বেশ কয়েকটি পরিবহনের বাস টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সেগুলোতে চড়ে আপনি করটিয়া বাইপাস এর কাছে নেমে গিয়ে একটি রিকশা নিয়ে চলে যান করটিয়া জমিদার বাড়ি। বাস ভাড়া ১৫০-১৭০ টাকা, আর রিকশা ভাড়াটা ১৫-২০ টাকা পরবে।














