হজরত শাহানশাহ বাবা আদম কাশ্মিরির (রহ.) স্মৃতিবিজড়িত পুণ্যস্থান নাগরপুর।এখানকার একাধিক জমিদার বাড়ি, ১২ ঘাটলা বিশিষ্ট সরোবরসহ সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ার মতো স্থান হলো মসজিদ আর মন্দির। টাঙ্গাইল থেকে ২৫ কিলোমিটার সোজা দক্ষিণে নাগরপুর উপজেলা। তিনি এই অঞ্ছলের একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। বাবা কাশ্মিরীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য তার মাজারের সন্নিকটে গড়ে তোলা হয়েছে বিখ্যাত আতিয়া মসজিদ।
আলী শাহান শাহ্ বাবা আদম কাশ্মিরী (রঃ) বাংলাদেশে আগত একজন সুফি সাধক এবং ইসলাম ধর্মের। প্রচারক তিনি সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ-এর সময় আতিয়ার জায়গিরদার ছিলেন। তাঁর সম্মানার্থেই করটীয়ার জমিদার সাইদ খান পন্নী আতিয়া মসজিদ নির্মাণ করেছেন। তিনি দীর্ঘ ১৫০ বছর পরমায়ু লাভ করেছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। তিনি নিজের ব্যয়ের জন্য রাজকোষ থেকে সামান্য কিছু অর্থ গ্রহণ করে অবশিষ্ট অর্থ জনকল্যাণে যেমন : মক্তব, মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট তৈরিতে ব্যয় করতেন। শাহন শাহ্ বাবা কাশ্মিরী ১৬১৩ সালে মৃত্যুবরণ করলে আতিয়াতেই তাকে সমাহিত করা হয়।
বাবা আদম কাশ্মিরী ঠিক কখন এই অঞ্চলে আসেন সেই সম্পর্কে কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি, ধারণা করা হয় তিনি ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতের কাশ্মির হতে এতদ্বঞ্চলে আগম করেন। তবে কারো কারো মতে তিনি ১৫৯৮ সালে একই সঙ্গে সুলতান আলাউদ্দিন হুসায়েন শাহ কর্তৃক আতিয়ার জায়গিরদার এবং কররানী শাসক সোলাইমান কররানী কর্তৃক ধর্মীয় কাজের ব্যয় নির্বাহের জন্য এক বিশাল এলাকা ওয়াকফ্ হিসেবে লাভ করার ফলে সেই সময়ই এদেশে আসেন।
এই মসজিদের আতিয়া আয়তন দৈর্ঘ্য ৬৯ ফুট এবং প্রস্থ ৪০ ফুট। মিনারগুলো অলঙ্কৃত ও গম্বুজের আকৃতি সম্পন্ন। প্রবেশ পথের উপরাংশ প্রায় গোল গম্ভুজের আর দরজাগুলো কাঠের তৈরী। মসজিদের প্রবেশ পথের কাছে অলঙ্করণযুক্ত একটি শিলালিপি রয়েছে। ১৬০৯ খ্রি. এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
যেভাবে যাবেনঃ-
টাঙ্গাইল শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম দূরত্বে লৌহজং নামক নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে আতিয়া মসজিদ অবস্থিত। টাঙ্গাইল সদর থেকে সিএনজি করে সেখানে যেতে হয়।