গোপালগজ্ঞ জেলা

1119

গোপালগজ্ঞ মধূমতি নদীর অববাহিকায় গড়ে উঠা একটি জেলা। রাজা বল্লাল সেনের আমলে এ জেলার পূর্ব সীমানায় খাটরা গ্রামের অধিবাসী হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই এ অঞ্চলে প্রথম বসবাস শুরূ করে। বর্তমানে এই জেলাটি ঢাকা বিভাগের অন্তরভুক্ত একটি জেলা। প্রাচিনকাল থেকেই এঅঞ্চলের মানুষদের প্রধান পেশা কৃষি কাজ। ধান, আঁখ, পাট ও বাদাম এ অঞ্চলের কৃষিজ ফসল গুলোর মধ্যে অন্যমত। বিলুপ্ত প্রায় ফসল গুলোর মধ্যে আছে চিনা,কাউন ও আউশ ধান। এ জেলার প্রধার রপ্তানিজাত ফসল হলো পাট ও তরমুজ। প্রচীন কালে বিভিন্ন রাজা কিংবা শ্বাসক গোষ্ঠি এই অঞ্চলটিকে শ্বাসন করে।তাই বর্তামন সময়ে এ অঞ্চলে প্রাচীন সভ্যতার অনেক নিদর্শন রয়েছে যা ভ্রমন পিয়াসু মানুষেদের নিকট আকর্ষনের কেন্দ্র বিন্দু।

নাম করণের ইতিহাস:-

গোপালগজ্ঞ জেলার নাম করনের সুস্পষ্ট ঘটনা ও কারণ ইতিহাসে বর্ণীত আছে।প্রচীন কালের রাজগজ্ঞ বাজার আজকের গোপালগজ্ঞ জেলা। আজ থেকে প্রায় শতাব্দীকাল আছে শহর বলতে যা বুঝায় তার কিছুর ছিলো নাহ এ অঞ্চলটিতে। তবে ছোট বাজার হিসাবে মানুষের নিকট এর পরিচিত খুব বেশি ছিলো। উনবিংশ শতাব্দির দিকে এ অঞ্চলটি রাণী রাসমণির স্টেট জমিদারির অন্তরভুক্ত ছিলো।তখকালীন ইংরেজ সরকার রানী রাস মণিকে একজন উচ্চপদস্থ ইংরেজ কর্মকর্তার প্রাণ রক্ষার উপহার সরূপ এই অঞ্চলটির জমিদারিত্ব উপহার দেন।তিনি পরবর্তী কালে তার প্রিয় নাতি নব-গোপালের নামের গোপাল অংশ এবং রাজগজ্ঞের গজ্ঞ অংশটি একত্রিত করে এই অঞ্চলটির নাম করণ করেন গোপালগজ্ঞ।

ইতিহাস এবং ঐতিহ্য:-

অতিপ্রচীন কালে এই এলাকাটি বঙ্গ অঞ্চলের অন্তরর্গত ছিলো। সুলতানী মোঘল আমলে হিন্দু রাজারা এই অঞ্চলটির শ্বাসন করতো। তবে বিভিন্ন সময় গোপালগজ্ঞ জেলার এক এক অঞ্চল  বিভিন্ন মহকোমার অন্তরভুক্ত ছিলো।প্রাচীন ইতিহাস থেকে দেখা যায় এক সময় এই অঞ্চলটি বিস্তীর্ণ জলাভূমি ছিলো।তাই এই অঞ্চলে নৌ ডাকাতির উপক্রম ছিলো অনেক বেশি। ১৮০৭ সালের দিকে বর্তামান গোপালগজ্ঞ সদর এবং কোটালীপাড়া এলাকাটি ফরিদপুর জেলারর জালালপুরর পরগণাভুক্ত ছিলো। পরবর্তীতে এই অঞ্চলটিতে মাদারীপুর মহকুমা তৈরি হয়।১৮৭২ সালের দিকে মাদারীপুর মহকুমায় গোপালগজ্ঞ নামে একটি থাকা গঠিত হয়। কিছু সময় পর ১৯০৯ সালের শুরূর দিকে মাদারীপুর মহকুাম ভেঙ্গে গোপালগজ্ঞ মহকুমাতে রূপান্তর করা হয়। সুরেশ চন্দ্র সেন প্রথম গোপালগজ্ঞ মহকুমার প্রশাসক ছিলেন। ১৯২৫ সালের দিকে গোপালগজ্ঞে সিভিল কৌর্ট চালু হয়। তারপর বিভিন্ন সময় গোপালগজ্ঞের এক একটি এলাকাকে বিভক্ত করে নতুন নতুন থানা এবং উপজেলার রূপদানন করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৮৪ সালের ১লা ফেব্রুয়ারী গোপালগজ্ঞ মহকুমাকে পূর্নাঙ্গ জেলায় রূপান্তর করা হয়। এই অঞ্চলটির বিকাশ এবং উন্নতির ইতিহাসের প্রথম দিক থেকেই একজন মহা ব্যক্তীর নাম জড়িত রয়েছে।তিনি হলেন রানী রাসমনি। একসময়ে এই অঞ্চলটি তার জমিদারির অংশ ছিলো।তিনি এই অঞ্চলের মানুষের অধিকার রক্ষা এবং তাদের উন্নতির জন্য অনেক কাজ করে গেছেন। এক কথা ইতিহাসবিদ দের থেকে জানা যায় যে,তার প্রিয় নাতির নাম অনুসারেই এই অঞ্চলটির নাম করণ করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাস সমৃদ্ধ করেছে এমন অনেক ব্যক্তি বর্গ এই অঞ্চলেই জন্মগ্রহন করেন।তাদের মধ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথীকৃত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই অঞ্চলেই জন্মগ্রহন করেন।

দর্শনীয় স্থান:-

১)বহুতলি মসজিদ

২)বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ

৩)কোর্ট মসজিদ

৪)ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ি

৫)জমিদার গিরীশ চন্দ্র সেনের বাড়ী

৬)অন্যন্যা চন্দ্র ঘাট

৭)গোপালগঞ্জের চান্দার বিল

৮)বিলরুট ক্যানেল

৯)শুকদেবের আশ্রম

১০)খানার পাড় দীঘি

১১)উলপুর জমিদার বাড়ী

১২)মধুমতি বাওড়

১৩)সখীচরন রায়ের বাড়ি

১৪)আড়পাড়া মুন্সিবাড়ী

১৫)খাগাইল গায়েবী মসজিদ

১৬)থানা পাড়া জামে মসজিদ

১৭)রামদিয়া চন্দ্রনাথ বসুর আশ্রম

১৮)৭১ এর বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ (স্মৃতিস্তম্ভ)

১৯)শুকদেবের আশ্রম

২০)সর্বজনীন কালিমন্দির

২১)সেন্ট মথুরানাথ এজি চার্চ

২২)কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের পৈত্রিক নিবাস

বিখ্যাত খাবারঃ

রসগোল্লা এবং ছানার মিষ্টি