রাঙামাটি জেলা| ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1604

রাঙামাটি জেলা বাংলাদেশের একটি জেলা যা চট্টগ্রাম বিভাগ এর অন্তর্গত। রাঙ্গামাটির উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম, দক্ষিণে বান্দরবান, পূর্বে মিজোরাম ও পশ্চিমে চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি। এ জেলা আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ জেলা। দেশের এক মাত্র রিক্সা বিহীন শহর, হ্রদ পরিবেষ্টিত পর্যটন শহর এলাকা। এ জেলায় চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মুরং, বোম, খুমি, খেয়াং, চাক্, পাংখোয়া, লুসাই, সুজেসাওতাল, রাখাইন সর্বোপরি বাঙ্গালীসহ ১৪টি জনগোষ্ঠি বসবাস করে।

নামকরনের ইতিহাস:-

রাঙামাটি জেলা নামকরণ সম্পর্কে বিলু কবীরের লেখা ‘বাংলাদেশ জেলা : নামকরণের ইতিহাস’ বই থেকেজানা যায় তা হলো- এই এলাকায় পর্বতরাজি গঠিত হয়েছিল টারশিয়রি যুগে। এই যুগের মাটির প্রধানব্যতিক্রম এবং বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর রঙ লালচে বা রাঙা। এই এলাকার গিরিমৃত্তিকা লাল এবং মাটিও রাঙাবলেই এই জনপদের নাম হয়েছে রাঙামাটি। প্রকৃতি সূচক এই নামকরণটির বিষয়ে অন্য প্রচলিত কথা পরম্পরা হলো- বর্তমান রাঙামাটি জেলা সদরের পূর্বদিকে একটি ছড়া ছিল, যা এখন হ্রদের মধ্যেনিমজ্জিত। এই হ্রদের স্বচ্ছ পানি যখন লাল বা রাঙামাটির উপর দিয়ে ঢাল বেয়ে প্রপাত ঘটাতো, তখনতাকে লাল দেখাতো। তাই এই ছড়ার নাম হয়েছিল ‘রাঙামাটি’। এই জেলা সদরের পশ্চিমে আরও একটিছাড়া ছিল। অনুরূপ কারণে তার নাম দেয়া হয়েছিল ‘রাঙাপানি’। এই দুই রাঙা ছড়ার মোহনার বাঁকেইগড়ে উঠেছে বর্তমান জেলা শহর। যা মূলত ছিল অনাবাদী টিলার সমষ্টি এবং বহু উপত্যকার একনয়নাভিরাম বিস্ময়ভূমি। এই দুটি ছড়া রাঙামাটি ও রাঙাপানি হতে ‘রাঙামাটি’ জেলার নামকরণ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ১৯৮৩ সালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা গঠন

 

আয়তন:-

রাঙ্গামাটি জেলার মোট আয়তন ৬১১৬.১৩ বর্গ কিলোমিটার।এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা।

অবস্থান ও সীমানা:-

রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ৩০৮ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার। এ জেলার দক্ষিণে বান্দরবান জেলা, পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলা ও খাগড়াছড়ি জেলা, উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ এবং পূর্বে ভারতের মিজোরাম প্রদেশ ও মায়ানমারের চিন প্রদেশ অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র জেলা, যার সাথে ভারত ও মায়ানমার দুটি দেশেরই আন্তর্জাতিক সীমা রয়েছে।

রাঙ্গামাটি জেলায় মোট ১০টি উপজেলা:-

কাউখালী

কাপ্তাই

জুরাছড়ি

নানিয়ারচর

বরকল

বাঘাইছড়ি

বিলাইছড়ি

রাঙ্গামাটি সদর

রাজস্থলী

লংগদু

কৃতী ব্যক্তিত্ব:-

জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) –– প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম।

দীপংকর তালুকদার –– প্রাক্তন সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।

কামিনী মোহন দেওয়ান (১৮৯০-১৯৭৬) –– পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সর্বপ্রথম প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্য।

রাজমাতা বিনীতা রয় (১৯০৭-১৯৯০) –– কথা সাহিত্যিক।

সুবিমল দেওয়ান (১৯১৬-২০০৯) –– জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবী সমাজকর্মী।

সাজিদ-বিন-জাহিদ(মিকি) –– জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবী সমাজকর্মী।

কল্প রঞ্জন চাকমা –– প্রাক্তন সংসদ সদস্য ও প্রথম পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী।

বিনয় কুমার চাকমা –– প্রাক্তন সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী।

চাইথোয়াই রোয়াজা (১৯৩০-১৯৯৪) –– প্রাক্তন সংসদ সদস্য।

মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (১৯৩৯-১৯৮৩) –– প্রাক্তন সংসদ সদস্য।

মনি স্বপন দেওয়ান –– প্রাক্তন সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপমন্ত্রী

বিখ্যাত খাবার:-

আনারস

কাঠাল

কলা

বিখ্যাত স্থান:-

কর্ণফুলী হ্রদ

পর্যটন মোটেল ও ঝুলন্ত সেতু

সুবলং ঝরনা

উপজাতীয় জাদুঘর

কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান

জেলা প্রশাসক বাংলো

জেলা প্রশাসক এলএইচ নিবলেটের সমাধি

স্বপ্নের কাপ্তাই

রাইক্ষ্যংয়ের উজান বেয়ে পানছড়ি

পেদা টিং টিং

রাইংখ্যং পুকুর

বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্সেনায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি ভাস্কর্য

ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার রাজবাড়ি

যোগাযোগ ব্যবস্থা:-

রাঙামাটি জেলা সরাসরি ঢাকার সাথে যুক্ত বলে একানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক আধুনিক মানের।ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে করে রাঙামাটি জেলাতে পৌছানো যায়।