পেদা টিং টিং, শব্দটি শুনলেই হাসি পায়। তবে হাস্যকর কিছুই কিছু নয়।এটি চাকমা ভাষায় একটি ঐতিহ্যবাহী রেষ্টুরেন্টের নাম। পেদা টিং টিং চাকমা শব্দগুচ্ছ। এর ভাবগত অর্থ হচ্ছে – পেট টান টান। অর্থাৎ, মারাত্মকভাবে খাবার পর পেটের যে টান টান অবস্থা থাকে, সেটাকেই বলা হয় পেদা টিং টিং। রাঙ্গামাটি শহর থেকে দূরে পেদা টিংটিং দ্বীপ কাপ্তাই লেকে অবস্থিত। স্বচ্ছ পানির জন্য এই দ্বীপটির খ্যাতি রয়েছে। পর্যটকদের জন্য এখানে কিছু সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া এখানে আদিবাসীদের পরিচালিত একটি ছোট রেস্টুরেন্টও রয়েছে যেখানে আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী খাবারসহ নানা পদের খাবার পাওয়া যায়।
উল্যেখযোগ্য খাবারঃ– বাম্বু চিকেন বিশেষ পদ্ধতিতে রান্না করা মুরগির মাংস যাকে বাঁশের পাত্রে পরিবেশন করা হয়। বিগল বিচি, বিগল বিচি দেখতে ছোট ছোট দানার মতো- হালকা করে তেলে ভাজা হয়। এমনিতে এর কোনো স্বাদ নেই। এটি মূলত খেতে হয় শুটকি মাছ ও কাঁচামরিচের ভর্তার সাথে। তখনই আসল স্বাদ পাওয়া যায়। কচি বাঁশের তরকারী এটি একটি অসাধারণ আইটেম। রাঙ্গামাটি এসে এই খাবারটি হতে কেউ বঞ্চিত হতে চায় না। অসাধারণ স্বাদ! পুঁই বা অন্যান্য শাকের সাথে এটি রান্না করা যায়, অথবা ভাজি। যে ভাবেই খান না কেন এটি হবে আপনার জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা। কচি বাঁশ খেতে খুবই নরম- মুখে দেওয়া মাত্র গলে যায়। আসলে এগুলোর স্বাদ বলে বুঝানো যাবে না! বুঝতে হলে অবশ্যই খেতে হবে! কেবাং এটি আসলে খাবার রান্নার একটি পদ্ধতি। শক্তসামর্থ বাঁশের খোলের ভেতর শূকর ভরে সেখানে তেল-মশলা দিয়ে বাঁশটিকে পোড়ানো বা ঝলসানো হয়েছে। তবে আপনি শুকর খেতে না চাইলে কাঁচকি বা অন্যান্য মাছ, মাংস ইত্যাদির কেবাং করে খেতে পারেন। এর স্বাদ এবং অভিজ্ঞতা আপনার স্মৃতির পাতায় থাকবে সারাজীবন। কাঁচকি ফ্রাই এটি অবশ্য আদিবাসী কোন খাবার নয়। তবে এর স্বাদ অতুলনীয়। সাধারণ পদ্ধতিতেই বড় বড় কাচকি মাছ তেলের উপর ভাজা হয়। গরম গরম খেতে ভীষন মজার খাবার এটি। রাঙ্গামাটির অনেক হোটেলেই এই খাবারটি পাবেন।
যাবেন যেভাবেঃ–
রাঙ্গামাটি নেমে নৌকা ভাড়া করে এই দ্বীপে যাওয়া যায়। রাঙ্গামাটি থেকে নৌকা ভাড়া করে আপনাকে পেদা টিংটিং দ্বীপে যেতে হবে।