পাথরঘাটা নিমাই পীরের মাজারের পার্শ্বে একটি পাথরের দন্ড পোঁতা আছে । এটা পীর সাহেবের আশা বলে পরিচিত । একটি সিংহমুখাকৃতি কারুকার্য খচিত পাথরের উপর উপবেশন করে তিনি একত্ববাদের বাণী প্রচার করতেন ।
চৈত্র মাসের প্রথম সোমবারে এখানে মাযার জিয়ারত উপলক্ষে ইসালে সওয়াব এবং মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় । ইসালে সওয়াবের কয়েক দিন পর এখানে স্মান উপলক্ষে হাজার হাজার হিন্দু নর-নারীর সমাবেশ ঘটে। এ উপলক্ষে এখানে এক বিরাট মেলা হয় । এটি পাথরঘাটার মেলা নামে পরিচিত । এখানে ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত বহু পাথর পড়ে থাকতে দেখা যায় । বলা হয় যে, নিমাই পীরের আস্তানা হতে পাথরে বাঁধা একটি ঘাট ছিল। এই রাস্তায় তুলসী গংগা নদীর তীরে একটি পাথরের সেতু ছিল। সেতুটি বহু পূর্বে ভেঙ্গে গেছে । সেতুটি প্রায় ১৫০ ফুট দীর্ঘ ছিল । নদীর পূর্ব তীরে পাথর ও ইটের গাঁথুনি দেখা যায় । অনেকে সেতুটির খিলান বলে মনে করেন। পীর সাহেব উপস্থিত ভদ্রমন্ডলীকে একখন্ড করে পাথর বসে দিতেন । প্রবাদ আছে,পীর সাহেব পাথরগুলি অলৌকিক উপায়ে নদীপথে এখানে এনেছিলেন । বহুদূর বিস্তৃত পাথরের এই ধ্বংশাবশেষের জন্য পাথরঘাটা নামকরণ সার্থক হয়েছে ।
হিন্দুদের কাছে এটা নিমাই সন্নাসী মাজার আর মুসলমানদের কাছে এটা নিমাই শাহ্ -এর মাজার । এটা সকল ধর্মের কাছে সন্মানীয় একটা মাজার ।
জনশ্রুতিতে আছে মহীপাল ছিল একজন অত্যাচারী রাজা । তার রাজত্বের শেষ দিকে হযরত মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন শাহ্ (রাঃ) এখানে এসে আস্তানা গারেন । তার আধ্যাতিক ক্ষমতা ও সুব্যবহারে এলাকার মানুষ মুগ্ধ হয়ে এখানে দলে দলে আসতে থাকে । রাজার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ও তা থেকে পরিত্রানের বিষয়ে হিন্দু, মুসলিম উভয় ধর্মের মানুষ নাসির উদ্দিন শাহ্ (রাঃ) শরণার্পন্ন হয় ।
তিনি তার আধ্যাতিক ক্ষমতা ও এলাকার মানুষকে একত্র করে রাজার এই অত্যাচারের প্রতিবাদ করেন । এতে অবশ্য কাজ হয় । তাই তিনি হিন্দু, মুসলিম সকল ধর্মের কাছে সন্মানীয় ।
যেভাবে যাবেনঃ-
ঢাকা থেকে সরাসরি বাস কিংবা ট্রেইনে চেপে সরাসরি জয়পুরহাট জেলা শহরে পৌঁছানো যায়। ঢাকার গাবতলি,সায়দাবাদ,মহাখালি বাস টার্মিনাল গুলো থেকে বাস পাওয়া যায়।কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেইন যাত্রা শুরু হয়।জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে রিক্সা কিংবা সি এন জি করে নিমাই পীরের মাজারে যাওয়া যায়।