ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা | ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1968

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। শিক্ষা সংস্কৃতির পীঠস্থান রুপে পরিচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হয়।বাংলাদেশের সংস্কৃতি কে আজও ধারন করে এই জেলা। ১৯৮৪ সালে ব্রাক্ষ্মবাড়িয়া জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তার আগে এটি কুমিল্লা জেলার একটি মহকুমা ছিল।

নামকরনের ইতিহাস:-

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নামকরণ নিয়ে একাধিক মত প্রচলিত আছে। লোকমুখে শোনা যায় যে সেন বংশের রাজত্ব্যকালে এই অঞ্চলে অভিজাত ব্রাহ্মণকুলের বড়ই অভাব ছিল। যার ফলে এ অঞ্চলে পূজা অর্চনার জন্য বিঘ্নতর সৃষ্টি হতো। এ সমস্যা নিরসনের জন্য সেন বংশের শেষ রাজা রাজা লক্ষণ সেন আদিসুর কন্যকুঞ্জ থেকে কয়েকটি ব্রাহ্মণ পরিবারকে এ অঞ্চলে নিয়ে আসেন। তাদের মধ্যে কিছু ব্রাহ্মণ পরিবার শহরের মৌলভী পাড়ায় বাড়ী তৈরী করে। সেই ব্রাহ্মণদের বাড়ির অবস্থানের কারণে এ জেলার নামকরণ ব্রাহ্মণবাড়ীয়া হয় বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। অন্য একটি মতানুসারে দিল্লী থেকে আগত ইসলাম ধর্ম প্রচারক শাহ সুফী হযরত কাজী মাহমুদ শাহ এ শহর থেকে উল্লেখিত ব্রাহ্মণ পরিবার সমূহকে বেরিয়ে যাবার নির্দেশ প্রদান করেন , যা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করা হয় । ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ ‘বাওনবাইরা’ । ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিকৃত নাম ‘বি-বাড়িয়া’ বহুল প্রচলিত । যার ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ হচ্ছে । এ অবস্থার উত্তরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন হতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে এবং ২০১১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন হতে সকল ক্ষেত্রে বি-বাড়িয়ার পরিবর্তে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ লেখার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় ।

অবস্থান ও আয়তন:-

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আয়তন ১৯২৭.১১ বর্গ কিলোমিটার। এর উত্তরে হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে কুমিল্লা জেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ও হবিগঞ্জ এবং পশ্চিমে মেঘনা নদী, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলার অবস্থান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ৯টি উপজেলা:-

১ আশুগঞ্জ উপজেলা

২ আখাউড়া উপজেলা

৩ কসবা উপজেলা

৪ নবীনগর উপজেলা

৫ নাসিরনগর উপজেলা

৬ বাঞ্ছারামপুর উপজেলা

৭ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা

৮ সরাইল উপজেলা

৯ বিজয়নগর উপজেলা

কৃতি ব্যক্তিত্ব:-

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ (১৮৬২ – ১৯৭২) – খ্যাতিমান সঙ্গীতজ্ঞ

আলী আকবর খান – বিশ্ববিখ্যাত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী

অন্নপূর্ণা দেবী – সেনিয়া-মাইহার ঘরানার শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী

বাহাদুর খান – (১৯৩১-১৯৮৯) – বিখ্যাত সরোদ বাদক এবং চলচ্চিত্র সুরকার

কিরীট খান – (১৯৫৫-২০০৬) – বিখ্যাত সেতার বাদক

ফকির আফতাব উদ্দিন খাঁ (১৮৬২ – ১৯৩৩) – গীতিকার,সুরকার,গায়ক

ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান (১৯২৯-১৯৯৬) – সেতারবাদক,সুরকার ও সংগীত পরিচালক

ওস্তাদ খাদেম হোসেন খান (১৯২২-১৯৯২) – সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক

ওস্তাদ মীর কাশেম খান (১৯২৮-১৯৮৪) – সেতারশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক

শেখ সাদী খান – বাংলাদেশের আধুনিক সঙ্গীতের স্থপতিদের একজন

ওস্তাদ খুরশিদ খান (১৯৩৫-২০১২) – সেনীয়া-মাইহার ঘরানার বিখ্যাত সেতার বাদক

ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খসরু – উচ্চাঙ্গসঙ্গীতশিল্পী

মনমোহন দত্ত – মলয়া সংগীতের জনক ও মরমী সাধক

আনন্দ চন্দ্র নন্দী- সঙ্গীতজ্ঞ ও সাধক

রামদুলাল মুন্সী – সঙ্গীতজ্ঞ ও সাধক

বিখ্যাত দলিল লেখক = রামরাইলের তারামোহন সুএধর (মুহুরি)

মহেন্দ্র চন্দ্র নন্দী (১৮৫৩-১৯৩২)- সঙ্গীতজ্ঞ,সাধক,ডাক্তার ও শিল্প উদ্যোক্তা

অমর পাল – প্রখ্যাত লোকসংগীতশিল্পী । ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর কাছ থেকে দীক্ষা নেন

গিরীণ চক্রবর্তী – প্রখ্যাত লোকসংগীতশিল্পী

সুবল দাস (১৯২৭-২০০৫) – বিখ্যাত চলচ্চিত্র সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার ।

বিখ্যাত খাবার:-

তালের বড়া

ছানামুখী

রসমালাই

বিখ্যাত স্থান:-

কালভৈরব

সৌধ হীরণ্ময়

হাতিরপুল

কেল্লা শহীদ মাজার

গঙ্গাসাগর দীঘি

উলচাপাড়া মসজিদ

কাজী মাহমুদ শাহ (রহ.) মাজার

ছতুরা শরীফ

নাটঘর মন্দির

বিদ্যাকুট সতীদাহ মন্দির

লক্ষীপুর শহীদ সমাধিস্থল

ফারুকী পার্কের স্মৃতিস্থম্ভ

কচুয়া মাজার

জয়কুমার জমিদার বাড়ী

গুনয়াউক বাগান বাড়ি

যোগাযোগ ব্যবস্থা:-

কিশোরগজ্ঞ জেলাটি সরাসরি ঢাকার সাথে যুক্ত বলে একানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক আধুনিক মানের।ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে করে কিশোরগজ্ঞ জেলাতে পৌছানো যায়।তাছাড়া এই জেলাতে রেল সংযোগও রয়েছে।প্রতিদিন শত শত যাত্রী ট্রেনে করে যাতাযাত করে।