রাজবন বিহারের পূর্ব পার্শ্বে ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার রাজবাড়ি অবস্থিত। বিহার ও রাজবাািড়র মাঝে আছে হ্রদ। রাজবন বিহারর ঘুরে ইচ্ছে করলে নৌকাযোগে হ্রদ পার হয়ে রাজবাড়িতে যাওয়া যায়। বাংলা নববর্ষের শুরুতে ঐতিহ্যবাহী রাজপুণ্যাহ্ অনুষ্ঠিত হয়। চাকমাদের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠানও এসময় চলতে থাকে। উপজাতীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতির দেখা মিলবে এ সময়।
রাজদরবার, কাচারি, সজ্জিত কামানসহ দেখার মতো অনেক কিছু আছে। উপজাতীয় পোশাকও পাওয়া যায় এখানে। নৌকায় পার হয়ে খুব সহজেই যাওয়া যায় এই বাড়িতে। আঁকা-বাঁকা সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠে গাছের ছায়ায় ইট বাঁধানো পথের মাথায় এ সুন্দর বাড়িটি। এখানে আরো রয়েছে চাকমা সার্কেলের প্রশাসনিক দফতর। চারিদিকে হ্রদ বেষ্টিত এই রাজবাড়ি পুরনো হলেও দেখেতে ও বেড়াতে ভীষণ ভালো লাগে। রাজদরবার, কাচারি, সজ্জিত কামানসহ দেখার মতো অনেক কিছু আছে।
বাড়িটি এখন লতাগুল্মে আচ্ছাদিত। ইট-সুরকি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল এই লোহাবিহীন অট্টালিকা। এটি বায়ান্ন একর জায়গাজুড়ে। দেয়ালগুলো প্রস্থে দুই হাতেরও বেশি। দেয়ালগুলোতে এখন নানা রকম আগাছা ও লতা জন্মেছে। খসে পড়ছে ছাদ। রোদ-বৃষ্টিতে প্রাসাদটির একেবারে নড়বড়ে অবস্থা। এরই মধ্যে প্রায় হারিয়ে গেছে প্রাসাদটির রাজদরবার, হাতিঘোড়ার পিলখানা, বিখ্যাত সাগরদিঘি, পুরাকীর্তি, বৌদ্ধ-বিহারসহ গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। এখন পর্যন্ত প্রাসাদটি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। চাকমা রাজার বংশধর হিসেবে প্রমতোষ দেওয়ান ২০ বছর ধরে রাজপ্রাসাদটি আঁকড়ে পড়ে ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি মারা গেছেন।
ঐতিহ্যবাহী রাঙামাটি জেলার অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান চাকমা রাজার রাজবাড়ি দর্শনের সময় দর্শনার্থীদের নিকট থেকে কোন প্রকার ফি নেওয়া হয় না। চাকমা রাজার রাজবাড়ি সকলের জন্য সম্পুর্ণরূপে উম্মুক্ত।
কিভাবে যাওয়া যায়:
ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম হয়ে রাঙ্গামাটি আসতে হবে। অটোরিক্মা কিংবা প্রাইভেট গাড়িযোগে কে.কে.রায় সড়ক হয়ে হ্রদের এই পাশে যেতে হবে। অতঃপর নৌকাযোগে হ্রদ পার হয়ে রাজবাড়িতে যাওয়া যাবে। কাপ্তাই হ্রদের মাধ্যমে নৌপথেও এ স্থানে আসা যায়।