গাংগাটিয়া জমিদার বাড়ি

1644

বাংলাদেশে যে কয়টি জমিদার বাড়ি আজও তাদের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য নিয়ে টিকে রয়েছে তাদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার গাংগাটিয়া জমিদার বাড়ি অন্যতম। গাংগাটিয়া জমিদার বাড়িটির গোড়াপত্তন হয় ব্রিটিশ শাসনামল শুরুর দিকে। বর্তমানে মানব বাবুর জমিদার বাড়ি নামে এটি পরিচিত। এখান থেকে প্রাচীন হিন্দু সম্প্রদায় তাদের জমিদারী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এই জমিদার বাড়ির আছে অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্য।

জমিদার বাড়িতে বর্তমানে অবস্থানরত উত্তরসূরি মানব বাবুর মাধ্যমে জানা যায়, এই জমিদার বাড়ি ও এর সাথে জড়িত এক গর্বিত ইতিহাস। প্রায় ৬০০ বছর আগে কাইন্নকব্জীয় হতে হোসেনপুর এর গাংগাটিয়ায় তাঁরা বসতি স্থাপন করেন। জাতে ছিলেন উচ্চ শ্রেণীর রক্ষণশীল ব্রাম্মণ এবং ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের প্রধান বা পুরোহিত হিসেবে তাঁরা ছিলেন সমাজে বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন। পরবর্তীতে এবংশের প্রথম উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি ভোলানাথ চক্রবর্তী পারিবারিক পেশা পুরহিত পেশার বিপরীতে গিয়ে ময়মনসিংহ এর প্রথম ডিপি হিসেবে নাম লেখায়। ব্রিটিশ আমলের শুরু থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁদের জমিদারিত্ব। পরবর্তীতে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ এর মাধ্যমে তা শেষ হয়। তবে এই জমিদার বাড়িটি জীবিত রয়েছে তার সৌন্দর্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ইতিহাসের মধ্য দিয়ে।

গাংগাটিয়া জমিদার বাড়ির সম্মুখভাগে রোমান স্থাপত্যের কলাম রয়েছে। সামনে থেকে এই জমিদার বাড়িটির স্থাপত্যশৈলী এক কথায় অসাধারণ। এখানে খুব কম পর্যটক বেড়াতে আসেন। ছোট এই জমিদার বাড়িটি বিশাল এলাকার উপর অবস্থিত। জমিদার বাড়ির সম্মুখ দরজাটি নকশায় পরিপূর্ণ।

জমিদার বাড়ির সামনে রয়েছে একটি দীঘি। জমিদার বাড়ির পাশে ও লাখোহাটি এলাকায় রয়েছে মানব বাবুর দুটি ফিসারী। মানব বাবুর ফিসারী তে এরোপ্লেন যোগে বাংলাদেশে প্রথম তেলাপিয়া ও পাংগাস মাছ এনে চাষ করা হয়। প্রথম ফিসারী স্থাপন এবং প্রথম ফ্লোটিং ফীড এর শুরু করার জন্য মানব বাবুর ফিসারী বিখ্যাত হয়ে আছে।

যেভাবে যাবেনঃ-


কিশোরগঞ্জ থেকে ৯কিঃমিঃ পশ্চিমে গোবিন্দপুর ইউনিয়নে এই জমিদার বাড়িটি অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ আখড়া বাজার থেকে অটো রিক্সা অথবা সিএনজি যোগে উক্ত স্থানে যাতায়াত করা যায়।হোসনেপুর হাসপাতাল মোড় থেকে টমটম, নসিমন, অটো রিক্সা, রিক্সা এসকল যানবাহনযোগে উক্ত স্থানে যাতায়াত করা যায়।