ঢাকা থেকে বরগুনা রুটে যে কয়েকটি লঞ্চ চলাচল করে লঞ্চগুলোর মধ্যে যুবরাজ – ২ একটি। এই লঞ্চটি ১৯৯০ সালে তৈরী করা হয়। কোম্পানীর মোট ৫ টি লঞ্চ রয়েছে। অন্যান্য লঞ্চগুলো হলো – যুবরাজ – ৩, যুবরাজ – ৪, যুবরাজ – ৬, এম.ভি চন্দন ।
ছাড়ার সময়সূচী
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের ৬ নাম্বার পল্টুন থেকে বরগুনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বিকাল ৫.০০ টায় এবং সন্ধ্যা ৬.০০ টায় এবং বরগুনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে সকাল ৬.০০ টায় এবং সকাল ৭.০০ টায়।। সাপ্তাহিক কোন বন্ধ নেই।
ধারণক্ষমতা
তিনতলা বিশিষ্ট এই লঞ্চটি মোট যাত্রী ধারণক্ষমতা ৫০০ জন এবং ১ টন মালামাল বহনে সক্ষম।
আসন সমূহ ও সুবিধা
বিলাসবহুল এই লঞ্চটিতে তিন ধরনের আসন সুবিধা রয়েছে। যেমন – ১ম শ্রেণী বা ভি.আই.পি আসন, ২য় শ্রেণী বা কেবিন এবং ৩য় শ্রেণী বা ডেক। ১ম শ্রেণীর যাত্রীদের কেবিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, রয়েছে রঙ্গিন টেলিভিশন, সিডি প্লেয়ার, পরিপাটি সজ্জার ডাবল বেড, এটার্চ বাথরুম। ২য় শ্রেণীর কেবিনগুলোতে রয়েছে রঙ্গিন টেলিভিশন, চেয়ার-টেবিল, ফ্যান, পরিপাটি ডাবল ও সিঙ্গেল বেড আর ৩য় শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য রয়েছে সুবিস্তৃত ডেক যেখানে যাত্রীরা নিজস্ব বিছানা পেতে শুয়ে বসে নিজ নিজ গন্তব্যে গমন করে থাকে।
টিকেট মূল্য
শ্রেণী | ভাড়া (টাকা) |
ভি.আই.পি | ২,৫০০/- |
ডাবল কেবিন | ১,৬০০/- |
সিঙ্গেল কেবিন | ৮০০/- |
৩য় শ্রেণী (ডেক) | ২৫০/- |
কেবিন সংখ্যা, বুকিং ও টিকেট
এই লঞ্চটিতে ২য় শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য ডাবল ও সিঙ্গেল মিলিয়ে মোট ৩০ টি কেবিন রয়েছে। অগ্রীম কেবিন বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ নাম্বার – ০১৭৩৬-৯৮০৫৬৩, ০১৭২৪-১৪০৬৭৮। বুকিং নিশ্চিত করার জন্য লঞ্চ ছাড়ার কমপক্ষে ১ ঘন্টা আগে লঞ্চে উপস্থিত হতে হবে।
যাত্রাকালে লঞ্চের বুকিং সেন্টারে যোগাযোগ করে টিকেট পাওয়া যায়। এছাড়া ফোনের মাধ্যমে অগ্রীম টিকেট বুকিং দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। যাত্রা বাতিল করতে চাইলে যাত্রার ১ ঘন্টা পূর্বে জানাতে হয়। উল্লেখ্য ১২ বছরের অনুর্ধ্ব শিশুদের টিকেট লাগে না।
লঞ্চের বিভিন্ন স্তরে কর্মরত কর্মচারীদের ফোন নাম্বার
লঞ্চ স্টাফদের ফোন নাম্বার | ০১৭৩৩-৫৮৫০৯৫, ০১৯১৪-৪৪২৪১০, ০১৯২৪-১৩২৩২৬, ০১৮১৪-৪৫৮৫৯৫ |
প্রথম শ্রেণীর চেয়ার সার্ভিসদের ফোন নাম্বার | ০১৭১২-৫৬১৫২০, ০১৭১২-৩১৩১৭৫, ০১৭৫২-১৩৪৮৫৮ |
কেবিন বয়দের মোবাইল নাম্বার | ০১৭৩৬-৯৮০৫৬৩, ০১৭২৪-১৪০৬৭৮ |
ক্যান্টিন
লঞ্চে আরোহিত যাত্রীদের খাবার সরবরাহের জন্য লঞ্চের নিচতলায় একটি ক্যান্টিন রয়েছে। ক্যান্টিনে চিপস, বিস্কুট, কলা, রুটি, কেক, সিঙ্গারা, সমুচা, চা ইত্যাদি পাওয়া যায়। চিপস – ১২/-, কলা – ৫/-, সিঙ্গারা – ৬/-, সমুচা – ৬/-।
মালামাল পরিবহন
প্রত্যেক যাত্রী নির্ধারিত টিকেট মূল্যের সাথে ১০ কেজি পরিমান মালামাল বহন করতে পারবে। তদুর্ধ্ব মালামালের জন্য নির্দিষ্ট হারে চার্জ প্রদান করতে হয়। লঞ্চের মালামাল পরিবহনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বার – ০১৭৩৬-৯৮০৬৫৩।
কেজি | ভাড়া (টাকা) |
২০ কেজি | ১০/- |
৩০ কেজি | ১৫/- |
৪০ কেজি | ৩০/- |
ঘাটের কুলিদের কেজি অনুযায়ী সার্ভিস চার্জ
কেজি | সার্ভিস চার্জ |
১০ কেজি | ১০/- |
অনধিক ২০ কেজি | ২০/- |
অনধিক ৩০ কেজি | ৩০/- |
অনধিক ৪০ কেজি | ৫০/- |
স্টীল বা কাঠের আলমারী | ১০০/- |
কাপড়ের গাইড | ৫০/- |
নামাজ ও প্রাথমিক চিকিৎসা
লঞ্চের ২য় তলায় আলাদা নামাজের জায়গা রয়েছে। যেখানে একসাথে ৩০-৩৫ জন মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারেন। এছাড়া জরুরী প্রয়োজনে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য ফার্স্ট এইড ব্যবস্থা রয়েছে।
টয়লেট
লঞ্চের প্রতি তলায় টয়লেট সুবিধা রয়েছে। ১ম শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য আলাদা, ২য় শ্রেণী বা কেবিন যাত্রীদের জন্য আলাদা এবং ডেক যাত্রীদের জন্য আলাদা টয়লেট রয়েছে। তবে মহিলা-পুরুষ আলাদা টয়লেট ব্যবস্থা নেই। এতে মোট ১৮ টি টয়লেট রয়েছে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
লঞ্চের যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা বিধানে লঞ্চটিতে আনসার সদস্যদের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক অন্যান্য কর্মচারীও নিয়োজিত রয়েছেন। লঞ্চের যাত্রী বীমকৃত নয়।
এছাড়া পথিমধ্যে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য রয়েছে লাইফ জ্যাকেট ৮ টি, বয়া ১৫০ টি ও টায়ার ১০ টি। একটি বয়া ৪ জন মিলে ব্যবহার করার নিয়ম রয়েছে। বয়া ও টায়ারগুলো প্রতি তলায় ছাদের অংশের সাথে এবং কেবিনের পাশে সংরক্ষিত রয়েছে।
বিবিধ
- এই রুটের লঞ্চটি নিয়মিত যাত্রা করে বিধায় এটি রিজার্ভ ভাড়া দেওয়া হয় না। তবে কোম্পানীর অন্যান্য লঞ্চ রিজার্ভ ভাড়া দেওয়া হয়।
- লঞ্চ চড়ে আটকে গেলে যাত্রীদের সাহায্য নেওয়া হয় নতুবা অন্য কোন লঞ্চের সাহায্য নেওয়া হয়।
- সাধারণত ৩ নাম্বার বিপদ সংকেত হলে যাত্রা করে না। ২ নাম্বার বিপদ সংকেতে যাত্রা অব্যাহত রাখে।
- লঞ্চের ছাদে বসার ব্যবস্থা রয়েছে।