সুলতান কমপ্লেক্স | ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1451

এই বাংলায় যে কয়জন গুনিব্যাক্তি জন্মগ্রহন করে তার নিজ কর্ম দ্বারা এই দেশকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান। তিনি তার চিত্রকল্পের মধ্যদিয়ে এই বাংলার রুপ তুলে ধরেছেন। তার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ লন্ডনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮২ সালে শিল্পী সুলতানকে কৃতী মানবদের একজন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আমৃত্যু অকৃতদার এসএম সুলতান ছিলেন আত্মপ্রচারবিমুখ ও সংসারবিরাগী। বাংলাদেশ সরকার তার স্মৃতি ধরে রাখার জন্য সুলতান কমপ্লেক্স তৈরি করেন। যেখানে তার চিত্রকল্প গুলো প্রদর্শিত রয়েছে।

নড়াইল শহরের মাছিমদিয়া এলাকায় চিত্রা নদীর পাড়ে ২০০৩ সালে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় সুলতান কমপ্লেক্স। বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস.এম. সুলতানের বাড়িতে গড়ে তোলা হয়েছে সুলতান কমপ্লেক্স। প্রায় ২৭ একর জায়গার উপরে প্রতিষ্ঠিত এ কমপ্লেক্সের ভেতরেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন শিল্পী। এখানকার একটি গ্যালারিতে প্রদর্শিত হচ্ছে শিল্পীর দুর্লভ কিছু চিত্রকর্ম ও তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র। তাছাড়া আছে দুর্লভ নানা প্রজাতির গাছের সমারহ। শিল্পী শিশুদের ছবি আঁকা শেখানোর জন্য ‘শিশুস্বর্গ’ নামে যে বজরা তৈরি করেছিলেন, সেটিরও দেখা মিলবে কমপ্লেক্সের পাশেই চিত্রা নদীতে। সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিনই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে সুলতান কমপ্লেক্স। ১০ আগস্ট শিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবছর চিত্রা নদীতে বর্ণাঢ্য নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়া প্রতিবছর সুলতান কমপ্লেক্সে আয়োজন করা হয় সাতদিনব্যাপী ‘সুলতান মেলা’র।

কমপ্লেক্সের আর্ট গ্যালারিতে ৩৮ ফুট লম্বা ‘ঐতিহাসিক চিত্রকর্ম’, ‘সভ্যতার ক্রমবিকাশ’, ‘গাঁতা চাষ’সহ সুলতানের মোট ২৩টি ছবি রয়েছে। আর্ট গ্যালারি তৈরি হওয়ার পর তিন বছর পর্যন্ত ছবিগুলো ঘরের মধ্যে বন্ধ পড়ে ছিল। ফলে অধিকাংশ ছবিই নষ্ট হয়ে যায়। এর মধ্যে মাত্র দুটি ছবি শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে রেস্টোরারের (চিত্রকর্মের চিকিৎসক) মাধ্যমে সংস্কার করা হয়। বাকি ছবিগুলো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। সুলতানের অসমাপ্ত ছবিগুলো বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, এখানকার আবহাওয়া অনুযায়ী এ গ্যালারি আরো উঁচু হওয়া উচিত ছিল। এছাড়া শিল্পীর ব্যবহার্য জিনিসপত্রের কিছু রয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, আর কিছু আছে এলোমেলো অবস্থায় পুরনো একতলা ভবনে। একটি ঘরে শিল্পীর ব্যবহূত খাট, আলনা, বাক্স, ড্রেসিং টেবিল অযত্নে ফেলে রাখা হয়েছে। দর্শনার্থীরা এলেও ঘরটি খোলা হয় না।

যেভাবে যাবেনঃ-

ঢাকা থেকে সরাসরি বাস কিংবা ট্রেইনে চেপে সরাসরি নড়াইল জেলা শহরে পৌঁছানো যায়। ঢাকার গাবতলি,সায়দাবাদ,মহাখালি বাস টার্মিনাল গুলো থেকে বাস পাওয়া যায়। সুলতান কমপ্লেক্স নড়াইল সদরে অবস্থিত হওয়ায় জেলা শহর থেকে রিক্সা যোগে সুলতান কমপ্লেক্স পৌঁছানো যায়।