হজরত শাহ জামালের (রহ.) মাজার, জামালপুর।

1433

প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্যে ভরা আমাদের এই বাংলাদেশ। এই দেশে পরিচিত অপরিচিত অনেক পর্যটক-আকর্ষক স্থান আছে। এর মধ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক মসজিদ এবং মিনার, পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত, পাহাড়, অরণ্য ইত্যাদি অন্যতম। এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি এলাকা বিভিন্ন স্বতন্ত্র্র বৈশিষ্ট্যে বিশেষায়িত। বাংলাদেশের এই ঐতিহ্যবাহী স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হল জামালপুরের হজরত শাহ জামালের (রহ.) মাজার।

এটি জামালপুর সদর উপজেলার শহরের ব্রহ্মপুত্র নদী তীরে ও  জামালপুর সদর থানার  পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত। এ অঞ্চলের সাধক পুরুষ হযরত শাহ জামাল-এর (রহঃ) সমাধি। এটি সমাধিক্ষেত্র ছাড়াও পুরনো একটি সুন্দর মসজিদ আছে।এখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা হয়।

জামালপুর সদরে চাপাতলি ঘাট সংলগ্ন হযরত শাহ জামাল (রহ)- এর মাজার শরিফ।  ১৫৮৬ খ্রি: সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে হযরত শাহ জামাল (রহ) ধর্ম প্রচারের জন্য অত্রাঞ্চলে আগমন করেন। এই সুফি দরবেশ সুদূর মধ্যপ্রাচ্যর ইয়েমেন থেকে এসে খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র নদতীরে আস্তানা স্থাপন করেন। হযরত শাহ জামাল (রহ) একজন পীর কামেল লোক ছিলেন। তার আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও অলৌকিক ক্ষমতার কথা দিল্লির মুঘল দরবার পর্যন্ত পৌছে যায়। ঐ সময় বাদশা আকবর হযরত শাহ জামাল (রহঃ) এর খানকার ব্যয়ভার বহন করতে ইচ্ছা পোষণ করে এবঙ সিংহজানির অধীনে কয়েকটি পরগনা পীরপাল দানের সনদ পাঠায়। এই লোভনীয় প্রস্তাব সুফি দরবেশ হযরত শাহ জামাল (রহঃ) অবজ্ঞাভরে প্রত্যাখ্যাণ করেন। পরবর্তীতে তার নামে অত্রাঞ্চলের নামকরণ জামালপুর হয়। এখানে প্রতি বছর ভক্তবৃন্দ সমবেত হয়ে ওরস মাহফিল পালন করেন।  র্তমানে আধুনিক নির্মাণ শৈলীতে আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। এখানে প্রতিদিন অসংখ্য ভক্ত জিয়ারত ও বিভিন্ন উদ্দেশ্যে মান্নতে ছিন্নি দিতে আসে।

কিভাবে যাওয়া যায়:

জামালপুর জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমানে খুবই ভাল। বৃটিশ আমল থেকেই ঢাকা থেকে বাহাদুরাবাদ এবং জগন্নাথগঞ্জ ঘাটের সাথে ট্রেণ যোগাযোগ ছিল। রেলপথে মানুষ স্বাচ্ছন্দে কম খরচে যাতায়াত করতে পারতেন। বর্তমানে ঢাকা থেকে রেল ও সড়ক পথে জামালপুরে যাতায়াত করা যায়। ঢাকা থেকে রেলপথে জামালপুরের দূরত্ব ১৭৭ কিঃমিঃ এবং সড়ক পথের দূরত্ব ২০০ কিঃমিঃ। ৪টি আন্ত:নগর ট্রেনসহ- বেসরকারী ট্রেন প্রতিদিন চলাচল করে।

জামালপুর রেল স্ট্রেশন থেকে অটো যোগে ১৫ টাকা এবং রিক্সা যোগে ২০ টাকায় যাওয়া যায়। রাজীব বাস স্ট্যান্ড থেকে অটো যোগে ১৫ টাকা এবং রিক্সা যোগে ২০ টাকায় যাওয়া যায়।