বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে মানুষের অবস্থান অনেক। তাছাড়া প্রতি বছর হাজারো মানুষ ঢাকা শহরে আসে তাদের জীবিকার খোজে। এই অতিরিক্ত জন মানুষের তুলনায় ঢাকা শহরে বিনোদন কেন্দ্র কিংবা সবুজ এর অরণ্য খুবই কম। ঢাকা শহরে বিনোদনের জন্য যে কয়েকটি পার্ক আছে তার মধ্যে রমনা পার্ক সকলের কাছে সুপরিচিত এবং অন্যতম। শহরের ক্লান্ত মানুষ বিশ্রাম ও বিনোদনের জন্য এই পার্কে ছুটেঁ আসে। এই পার্কটি ঢাকা শহরের কেন্দ্র স্থল রমনা এলাকায় অবস্থিত। প্রতিবছর এই পার্কে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান দেখতে হাজির হয় হাজার হাজার নর-নারী।
মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে ১৬১০ সালে বাংলার সুবেদার ইসলাম খাঁর হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় রমনা পার্কের। তখন রমনা পার্কের বর্তমান এলাকাটি ছিল ঢাকা নগরের উত্তরাংশ। তবে ১৮২৫ সাল থেকে ব্রিটিশ কালেক্টর ডাউইজের সময় ঢাকা নগর উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় যার অন্যতম ছিল রমনা এলাকার উন্নয়ন। এ সময় এলাকার একটি অংশ ঘেরাও করে ঘোড়দৌড় বা রেসকোর্সের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আর অন্য অংশটিকে রমনা গ্রিন নাম দিয়ে যাত্রা শুরু করে আজকের রমনা পার্ক। ১৯০৮ সাল থেকে পার্কের দ্রুত উন্নতি ঘটতে থাকে যা চলে ১৯২৮ সাল পর্যন্ত তখন পার্কের আয়তন ছিল প্রায় ৮৯ একর। ৭১ প্রজাতির বৃক্ষের সমারোহে রমনা ছিল এক সবুজ অরণ্য।র্তমানে ৭১ প্রজাতির ফুল জাতীয় গাছ, ৩৬ প্রজাতির ফলদ গাছ, ৩৩ প্রজাতির ঔষধি গাছ, ৪১ প্রজাতির বনজ গাছ এবং ১১ প্রজাতির বিবিধ গাছ নিয়ে রমনা পার্ক ঢাকাবাসীর একটি প্রিয় গন্তব্য। আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসেরও অংশ এই রমনা পার্ক। প্রতিবছর বাংলা নববর্ষের দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মেলাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সব পথ যেন এই রমনা পার্কে এসে মেশে।
যেভাবে যাবেনঃ
রমনা পার্কটি ঢাকা শহরের ঠিক কেন্দ্র স্থলে অবস্থিত হওয়ায় সাধারন মানুষের জন্য পার্কে এসে পৌঁছানোটি কুব সহজ ব্যাপার। ঢাকার যেকোন প্রান্ত থেকে বাসে করে রমনা পার্কে আসা যায়। শাহবাগ কিংবা কাকরাইলগামী যেকোন বাস রমনা পার্কের সামনে দিয়ে যায়।