বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর প্রতিটি ঘড়ে ঘড়ে রবীন্দ্রনাথ পরিচিত এবং জনপ্রিয়। বিশ্ব কবি রবিন্দ্রনাথের নীলকুঠি যেমনি সকলের নিকট আগ্রহের বিষয় বস্তু তেমনি তার শ্বশুরালয়ও সাধারন মানুষের আগ্রহের অন্যতম একটি স্থান। প্রতি বছর শত শত মানুষ এই স্থানটিতে ঘুরতে যায়। এই স্থানটি খুলনা জেলাতে অবস্থিত।বাড়িটির বর্তমান নামকরণ করা হয়েছে দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স।
খুলনা শহর থেকে ১৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে দক্ষিণডিহি গ্রাম। গ্রামের ঠিক মাঝখানে একসময়ের জাঁকজমকপূর্ণ রায় বাড়িই হলো রবিঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি। বর্তমানে ‘রবীন্দ্র কমপ্লেক্স’ নামে পরিচিত। একটা সময় রবীন্দ্র কমপ্লেক্স প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ১৯৯৫ সালে এটির স্মৃতি রক্ষার্থে সংস্কার করা হয়। ১৯৯৯ সালে এটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে স্বীকৃতি পায়। তবে বাড়ির তেমন কোনো স্মৃতিচিহ্ন রাখা সম্ভব হয় নি। বর্তমানে এটিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কবিপত্নীর আবক্ষ ভাস্কর্য, আর তাদের ছবি রয়েছে। এছাড়া এর ভেতরে রবীন্দ্রনাথের সাথের সকল রচনার বইসহ একটি পাঠকক্ষ রয়েছে। প্রয়োজনে মানুষজন বই নিয়ে পড়তে পারেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং দক্ষিণডিহির সম্পর্ক নিবিড়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মা সারদা সুন্দরী দেবী জন্ম গ্রহণ করে ছিলেন এই দক্ষিণডিহি গ্রামে। রবীন্দ্রনাথের কাকী ত্রিপুরা সুন্দরী দেবী এই গ্রামেরই মেয়ে। রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী মৃণালিনী দেবী দক্ষিণ ডিহির -ই মেয়ে। তাঁর ভালো নাম ভবতারিণী, বিবাহের পর তাঁর নাম রাখা হয় মৃণালিনী দেবী। ১৯৮২ পুজার ছুটির সময় জ্ঞানদানন্দিনী দেবী উৎসাহী হয়ে বাস্তভিটা দেখবার অযুহাতে যশোরের নরেন্দ্রপুর যান। উদ্দেশ্য কাছাকাছি পীরালী পরিবারের মধ্য হতে বধু সংগ্রহ জ্ঞানদানন্দিনীর সঙ্গে কাদম্বী দেবী, বালিকা ইন্দ্রানি, বালক সুরেন্দ্র নাথ ও রবীন্দ্রনাথ আসেন পুরাতন ভিটা দেখতে সে সময় ফুলতলা গ্রামের বিনিমাধব রায় চৌধূরীর কন্যা ভবতারিনীকে তারা দেখেন। যৌবনে কবি কয়েক বার তাঁর মায়ের সঙ্গে দক্ষিণডিহি গ্রামের মামা বাড়িতে এসেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের শ্বশুর ছিলেন বেণীমাধব রায় চৌধুরী। তিনি জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের জমিদারী এস্টেটের কর্মচারী ছিলেন।যেভাবে যাবেনঃ-
যেভাবে যাবেনঃ-
দেশের যে কোনো স্থান থেকে খুলনা মহানগরীতে এসে ১৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম ফুলতলা উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে গেলে দক্ষিণডিহি গ্রাম। গ্রামের ঠিক মধ্যখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে রবীন্দ্র-মৃণালিনীর স্মৃতিধন্য একটি দোতলা ভবন। এটাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুর বাড়ি। খুলনা শহর থেকে বাস বা সিএনজি তে করে প্রথমে ফুলতলা এবং তারপরে সেখান থেকে ভ্যান বা অটো তে করে সহজেই চলে যেতে পারবেন দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্সে।