এক ইতিহাসখ্যাত নগরী হচ্ছে। প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধন জনপদের অংশ রাজশাহীর জনবসতি হাজার বছরের ঐতিহ্য বহন করছে। মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন, মোগল, ইংরেজরা এ অঞ্চলে শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। এই জেলার নামকরণ নিয়ে প্রচুর মতপার্থক্য রয়েছে। রাজাশাহী শব্দটি বিশ্লেষণ করলে দুটি ভিন্ন ভাষার একই অর্থবোধক দুটি শব্দের সংযোজন পরিলতি হয়। সংস্কৃত ‘রাজ’ ও ফারসি ‘শাহ’ এর বিশেষণ ‘শাহী’ শব্দযোগে ‘রাজশাহী’ শব্দের উদ্ভব, যার অর্থ একই অর্থাৎ রাজা বা রাজা-রাজকীয় বা বাদশাহ বা বাদশাহী। তবে ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়র মতে রাজশাহী রাণী ভবানীর দেয়া নাম। অবশ্য মিঃ গ্রান্ট লিখেছেন যে, রাণী ভবানীর জমিদারীকেই রাজশাহী বলা হতো এবং এই চাকলার বন্দোবস্তের কালে রাজশাহী নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।
অবস্থান ও আয়তন:-
রাজশাহী জেলার উত্তরে নওগাঁ জেলা, দক্ষিণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, কুষ্টিয়া জেলা ও পদ্মা নদী, পূর্বে নাটোর জেলা, পশ্চিমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। দেশের প্রধানতম নদী পদ্মা এই জেলার সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই জেলার মোট আয়তন ২৪০৭.০১ বর্গকিলোমিটার।
নামকরনের ইতিহাস:-
এই জেলার নামকরণ নিয়ে প্রচুর মতপার্থক্য রয়েছে। তবে ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়র মতেরাজশাহী রাণী ভবানীর দেয়া নাম। অবশ্য মিঃ গ্রান্ট লিখেছেন যে, রাণী ভবানীর জমিদারীকেই রাজশাহীবলা হতো এবং এই চাকলার বন্দোবস্তের কালে রাজশাহী নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। পদ্মার উত্তরাঞ্চল বিস্তীর্ন এলাকা নিয়ে পাবনা পেরিয়ে ঢাকা পর্যন্ত এমনকি নদীয়া, যশোর, বর্ধমান, বীরভূম নিয়ে এই এলাকা রাজশাহী চাকলা নামে অভিহিত হয়। অনুমান করা হয় ‘রামপুর’ এবং ‘বোয়ালিয়া’ নামক দু’টি গ্রামের সমন্বয়ে রাজশাহী শহর গ’ড়ে উঠেছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে ‘রামপুর-বোয়ালিয়া’ নামে অভিহিত হলেও পরবর্তীতে রাজশাহী নামটিই সর্ব সাধারণের নিকট সমধিক পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে আমরা যে রাজশাহী শহরের সঙ্গে পরিচিত, তার আরম্ভ ১৮২৫ সাল থেকে। রামপুর-বোয়ালিয়া শহরের নাম করণ রাজশাহী কী করে হলো তা নিয়ে বহু মতামত রয়েছে। রাজাশাহী শব্দটি বিশ্লেষণ করলে দুটি ভিন্ন ভাষারএকই অর্থ বোধক দুটি শব্দের সংযোজন পরিলতি হয়। সংস্কৃত ‘রাজ’ ও ফারসি ‘শাহ’ এর বিশেষণ ‘শাহী’শব্দযোগে ‘রাজশাহী’ শব্দের উদ্ভব, যার অর্থ একই অর্থাৎ রাজা বা রাজা-রাজকীয় বা বা বাদশাহ বাবাদশাহী। তবে বাংলা ভাষায় আমরা একই অর্থের অনেক শব্দ দু-বার উচ্চারণ করে থাকি। যেমন শাক-সবজি, চালাক-চতুর, ভুল-ভ্রান্তি, ভুল-ত্র“টি, চাষ-আবাদ, জমি-জিরাত, ধার-দেনা, শিক্ষা-দীক্ষা, দীন-দুঃখী,ঘষা-মাজা, মান-সম্মান, দান-খয়রাত, পাহাড়-পর্বত, পাকা-পোক্ত, বিপদ-আপদ ইত্যাদি। ঠিক তেমনিকরে অদ্ভূত ধরনের এই রাজশাহী শব্দের উদ্ভবও যে এভাবে ঘটে থাকতে পারে তা মোটেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। এই নামকরণ নিয়ে অনেক কল্পকাহিনীও রয়েছে। সাধারণ ভাবে বলা হয় এই জেলায় বহু রাজা-জমিদারের বসবাস, এজন্য এ জেলার নাম হয়েছে রাজশাহী। কেউ বলেন রাজা গণেশের সময়(১৪১৪-১৪১৮) রাজশাহী নামের উদ্ভব। ১৯৮৪ সালে রাজশাহীর ৪টি মহকুমাকে নিয়ে রাজশাহী, নওগাঁ,নাটোর এবং নবাবগঞ্জ- এই চারটি স্বতন্ত্র জেলায় উন্নীত করা হয়।
উপজেলা সমূহ:-
গোদাগাড়ী উপজেলা
তানোর উপজেলা
মোহনপুর উপজেলা
বাগমারা উপজেলা
দুর্গাপুর উপজেলা
বাঘা উপজেলা
চারঘাট উপজেলা
পবা উপজেলা
পুঠিয়া উপজেলা
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব:-
চারু মজুমদার
মাদার বক্স
প্রভাসচন্দ্র লাহিড়ী
শহীদ এ.এইচ.এম. কামারুজ্জামান রাজনীতিবিদ
অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
রাণী ভবানী
মহারাণী হেমন্ত কুমারী দেবী
হাসান আজিজুল হক (কথাসাহিত্যিক)
সেলিনা হোসেন (কথাসাহিত্যিক)
বিখ্যাত খাবার:-
আম
বিখ্যাত স্থান:-
হজরত শাহ মখদুম রূপোষের (রহ.) দরগা
পুঠিয়া রাজবাড়ি
পুঠিয়া বড় আহ্নিক মন্দির
পুঠিয়া বড় শিবমন্দির
পুঠিয়া দোলমন্দির
পুঠিয়া গোবিন্দ মন্দির
বাঘা মসজিদ
দুই গম্বুজবিশিষ্ট কিসমত মাড়িয়া মসজিদ
এক গম্বুজবিশিষ্ট রুইপাড়া (দুর্গাপুর) জামে মসজিদ
বাগধানী মসজিদ (পবা)
তিন গম্বুজবিশিষ্ট ভাগনা (তানোর) জামে মসজিদ
হজরত শাহ্ সুলতান (র.)-এর মাজার
দেওপাড়া প্রশস্তি
বড়কুঠি (অষ্টাদশ শতাব্দী)
তালোন্দ শিব মন্দির
রাজশাহী বড়কুঠি
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
রাজশাহী কলেজ
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী
বিখ্যাত বস্ত্র:-
রাজশাহী সিল্ক শাড়ী
যেভাবে যাবেনঃ-
ঢাকা থেকে সরাসরি বাস কিংবা ট্রেইনে চেপে সরাসরি রাজশাহী জেলা শহরে পৌঁছানো যায়। ঢাকার গাবতলি,সায়দাবাদ,মহাখালি বাস টার্মিনাল গুলো থেকে বাস পাওয়া যায়।কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেইন যাত্রা শুরু হয়।