পুঠিয়া রাজবাড়ি| ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1598

রাজশাহী জেলার অন্যতম উপজেলা পুঠিয়া। প্রাচীনত্বের দিক দিয়ে পুঠিয়ার রাজবংশ বৃহত্তর রাজশাহী জেলার জমিদার বংশগুলোর মধ্যে তৃতীয়। পুঠিয়া রাজবাড়ির বিশাল চত্বরে রয়েছে বেশ কয়েকটি নজরকাড়া প্রাচীন মন্দির। এ ছাড়াও আছে রাজবাড়ি, পুকুর-দিঘিসহ নানান প্রাচীন স্থাপনা। পুঠিয়ার সব থেকে আকর্ষণীয় স্থাপনা হল রাজবাড়ি।

১৮৯৫ সালে মহারানী হেমন্তকুমারী দেবী আকর্ষনীয় ইন্দো ইউরোপীয় স্থাপত্যরীতিতে আয়তাকার দ্বিতল বর্তমান রাজবাড়ীটি নির্মাণ করেন। ভবনের সম্মুখ ভাগের স্তম্ভ, অলংকরন, কাঠের কাজ, কক্ষের দেয়ালে ও দরজার উপর ফুল ও লতাপাতার চিত্রকর্ম চমৎকার নির্মাণ শৈলীর পরিচয় বহন করে। রাজবাড়ীর ছাদ সমতল, ছাদে লোহার বীম, কাঠের বর্গা এবং টালি ব্যবহৃত হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য রাজবাড়ির চারপাশে পরিখা খনন করা হয়েছিল। রাণী ভূবনময়ী বিশাল একটি জলাশয়ের সম্মুখে ভূবনেশ্বর শিবমন্দির নির্মাণ করেন (১৮২৩-১৮৩০)। এটি পঞ্চরত্ন শিবমন্দির নামেও খ্যাত। বাংলাদেশে বিশালাকারের সুউচ্চ ও বহু গুচ্ছচূড়া বিশিষ্ট শিবমন্দিরগুলোর মধ্যে পুঠিয়ার পঞ্চরত্ন শিবমন্দিরটি স্থাপত্যশৈলীতে শ্রেষ্ঠত্বের দাবী রাখে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান একটি স্থাপত্য নির্দশন। এই এলাকায় ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে আরও কিছু প্রাচীন স্থাপনা আবিস্কৃত হয়েছে। রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলাধীন কিসমতমারিয়া ও রাইপাড়া এবং মোহনপুর উপজেলার টাঙ্গনবরাইল গ্রামের মসজিদগুলোর স্থাপত্যশৈলীতে রয়েছে মুঘল রীতির প্রতিফলন। এগুলো সংস্কার করলে পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বেড়ে পাবে।

পুঠিয়ার জমিদার/রাজাগণ প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য এবং ধর্মীয় কার্যাদি সম্পন্নের জন্য বিভিন্ন স্থাপত্য কাঠামো ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মন্দির নির্মাণ করেন, যা আজও কালের সাক্ষী হিসাবে টিকে আছে। পুঠিয়ায় অবস্থিত অধিকাংশ মন্দিরে পোড়ামাটির ফলক স্থাপিত আছে। এখানকার পুরাকীর্তির মধ্যে পাঁচআনি রাজবাড়ী বা পুঠিয়া রাজবাড়ী, চারআনি রাজবাড়ী ও ১৩টি মন্দির রয়েছে। পুঠিয়ার প্রত্ননিদর্শনের মধ্যে ১৪টি স্থাপনা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসাবে ঘোষনা করেছে।

যেভাবে যাবেনঃ-

ঢাকা থেকে সরাসরি বাস কিংবা ট্রেইনে চেপে সরাসরি রাজশাহী জেলা শহরে পৌঁছানো যায়। ঢাকার গাবতলি,সায়দাবাদ,মহাখালি বাস টার্মিনাল গুলো থেকে বাস পাওয়া যায়।কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেইন যাত্রা শুরু হয়। রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলায় অবস্থিত স্থাপনাটি রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে অবস্থিত। রাজশাহী শহর থেকে বাস ও অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়।