পিরোজপুর জেলা | ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1417

পিরোজপুর জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ১৭৯০ সালে গভর্নর জেনারেল লর্ড কর্নওয়ালিশ ভারতে শাসন সংস্কারের মাধ্যমে প্রশাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটান। তারই প্রেক্ষাপটে বাকেরগঞ্জে ১০টি থানা স্থাপন করা হয়। তার মধ্যে ১৭৯০ সালে পিরোজপুরের অদূরে পাড়েরহাটের নিকটবর্তী টগরা গ্রাম সংশ্লিষ্ট  টগরা থানা স্থাপিত হয়। একই সংগে পিরোজপুর থানার উত্তর পার্শ্বে কলাখালীর নিকট কেওয়ারী থানা এবং কাউখালীতে কাউখালী থানা স্থাপিত হয়। পরে ১৮৫৯ সালে পিরোজপুরে মহকুমা স্থাপিত হলে মহকুমা সদরে টগরা থেকে থানা স্থানান্তরিত হয় এবং পিরোজপুর থানা হিসাবে তা গণ্য হয়। থানাগৃহ বর্তমান ঈদগা মাঠের উত্তরে শামছুন্নেছা মুসলিম হলের অবস্থানে স্থাপিত হয়। থানা গৃহের উত্তর পার্শ্বে অস্থায়ীভাবে জেলখানা গৃহ প্রতিষ্ঠিত হয়। গত শতাব্দীর প্রথমদিকে থানা গৃহ পিরোজপুর সদর রাস্তর বর্তমান  অবস্থানে স্থানান্তরিত হয়।

নামকরনের ইতিহাস:-

“ফিরোজ শাহের আমল থেকে ভাটির দেশের ফিরোজপুর, বেনিয়া চক্রের ছোয়া লেগে পাল্টে হলোপিরোজপুর”

এ কথা থেকে পিরোজপুর নামকরণের একটা সূত্র পাওয়া যায়। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠিরজনৈক হেলাল উদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেয় বংশধর হিসেবে দাবি করেছিলেন বলে জানাযায়। বাংলার সুবেদার শাহ।। সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসে আত্মগোপন করেন। এক পর্যায়ে নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পাড়ে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয়, শাহ সুজা তাঁর দুই কন্যা সহ আরাকান রাজ্যে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময়তাঁর স্ত্রী ও এক শিশুপ্রত্র রেখে যান। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে ধীরে পশ্চিমে চলেআসে এবং বর্তমান পিরোজপুরের পাশ্ববর্তী দামোদর নদীর মুখে আস্তানা তৈরি করেন। এ শিশুর নাম ছিলফিরোজ এবং তাঁর নামানুসারে হয় ফিরোজপুর। কালের বিবর্তনে ফিরোজপুরের নাম হয় ‘পিরোজপুর’।পিরোজপুর ১৯৫৯ সালের ২৮ অক্টোবর পিরোজপুর মহকুমা এবং পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে জেলার রূপান্তরিত হয়।

ভৌগোলিক সীমানা:-

পিরোজপুরের উত্তরে বরিশাল জেলা ও গোপালগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে বরগুনা জেলা, পূর্বে ঝালকাঠি জেলা ও বরগুনা জেলা এবং পশ্চিমে বাগেরহাট জেলা ও সুন্দরবন অবস্থিত। পশ্চিমে বলেশ্বর নদী পিরোজপুরকে বাগেরহাটের থেকে আলাদা করেছে।

পিরোজপুর জেলা ৭টি উপজেলা

১ কাউখালী

২ নাজিরপুর উপজেলা

৩ নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা

৪ পিরোজপুর সদর উপজেলা

৫ ভাণ্ডারিয়া উপজেলা

৬ মঠবাড়িয়া উপজেলা

৭ ইন্দুরকানী উপজেলা।

বিখ্যাত খাবার:-

পেয়ারা

নারিকেল

সুপারি

আমড়া

বিখ্যাত স্থান:-

রায়েরকাঠি জমিদারবাড়ি

মঠবাড়িয়ার সাপলেজা কুঠিবাড়ি

প্রাচীন মসজিদ

মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ

শ্রীরামকাঠি প্রণব মঠ সেবাশ্রম

গোপালকৃষ্ণ টাউন ক্লাব

শেরেবাংলা পাবলিক লাইব্রেরি

মাঝের চর মঠবাড়িয়া

কিভাবে যাবেনঃ-

নদ-নদী ও সমুদ্র বেষ্টিত এই জেলায় যাতায়াতের জন্য নৌ-পথই সবচেয়ে সহজ যোগাযোগ মাধ্যম। এছাড়া সড়ক পথেও এই জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকা সদরঘাট নদী বন্দর লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছেড়ে যায়। ঢাকা থেকে ঝলকাঠির উদ্দেশ্যে যেসব গাড়ি ছেড়ে যায় গুলিস্তান থেকে। ঢাকার সায়েদাবাদ ও গাবতলী উভয় বাস টার্মিনাল থেকেই ঢাকা-পিরোজপুর রুটের ফেরি পারাপার গাড়ি রয়েছে। সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো মাওয়া সংলগ্ন পদ্মা নদী পার হয়ে পিরোজপুর যাতায়াত করে। আর গাবতলী থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো পাটুরিয়া সংলগ্ন পদ্মা নদী পার হয়ে পিরোজপুর রুটে চলাচল করে।ে