নর্থব্রুক হল (বর্তমানে স্থানীয়ভাবে লালকুঠি নামে পরিচিত) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রাচীন ও সৌন্দর্যময় স্থাপত্যিক একটি নিদর্শন যা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ওয়াইজ ঘাটে অবস্থিত। ১৮৭৪ সালে ভারতের গভর্নর জেনারেল জর্জ ব্যরিং নর্থব্রুক ঢাকা সফরে এলে এ সফরকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এই ভবনটি টাউন হল হিসেবে নির্মাণ করা হয়।
মোগল স্থাপত্যরীতির সঙ্গে ইউরোপীয় কারুকাজের সংমিশ্রণে গড়া ঢাকার অন্যতম প্রাচীন ও সৌন্দর্যমণ্ডিত একটি স্থাপনা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরের নর্থব্রুক হল। ১৮৭৪ সালে ভারতের গভর্নর জেনারেল জর্জ ব্যরিং নর্থব্রুকের ঢাকা সফর স্মরণীয় করে রাখার জন্য এই ভবনটি টাউন হল হিসেবে নির্মাণ করা হয়। জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়া বলছে, ১৮৭২ থেকে ১৮৭৬ সালের মধ্যে নর্থব্রুকের নামানুসারে এর নামকরণ হয়। পরবর্তীকালে হলটিকে একটি গণগ্রন্থাগারে রূপান্তর করে সঙ্গে জনসন হল নামে একটি ক্লাবঘর সংযুক্ত করা হয়।
নির্মাণের পর নর্থব্রুক হল থেকে বুড়িগঙ্গা নদী দেখা যেতো। তবে ১৯৩০ সালের মধ্যে এখান থেকে নদী দেখার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে এলাকাটি গুরুত্ব এবং আবাসিক ধরন হারিয়ে ফেলে এবং বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হয়। ১৯৯৮ সালে নর্থব্রুক হলের পাশে সরকারের শিক্ষা বিভাগের কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয় যেটির একাংশ বর্তমানে একটি ডেকোরেটোর সেবা প্রদানকারী সংস্থা ব্যবহার করছে। এছাড়া হলের উত্তরদিকের প্রবেশমুখে একটি পঞ্চভুজ ঝর্ণা স্থাপনের ফলে ভবনটি একেবারেই দৃষ্টিগোচর হয়না।
নর্থব্রুক হল একটি ইন্দো-সারাসেন ভবন যেখানে মুঘল এবং ইউরোপিয়ান রেনেসার স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। লালকুঠির উত্তরদিকের প্রবেশপথে রয়েছে অর্ধগোলাকার ঘোড়ার পায়ের নালের আকৃতির তোরণ। ভবনটির উত্তর দিকে অবস্থিত চারটি অষ্টকোন বিশিষ্ট মিনার, ছাদে অবস্থিত সজ্জিত তীক্ষ্ণ চূড়া এবং নকশা করা পাচিল থেকে মুসলিম ও মুঘলদের বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। ভবনটির দরজা, জানালা এবং দেয়ালের নকশা ইউরোপিয়ান কায়দায় করা হলেও ভবনের গম্বুজের নকশা করা হয়েছে মুসলিম স্থাপত্যের সাথে মিল রেখে।
কীভাবে যাবেন:
নর্থব্রুক হল যা লালকুঠি নামে পরিচিত(লাল রঙের কারনে ভবনটির এমন নামকরণ করা হয়) পুরাতন ঢাকার ফরাশগঞ্জ রোডে বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তরতীরে অবস্থিত। আপনি যেকোনো লোকাল অথবা কাউন্টার সার্ভিস বাসে করে পৌছে যেতে পারেন।