ব্রিটিশ আমলে তৈরী এম ভি সেলা ঢাকা-মোড়লগঞ্জ-ঢাকা রুটে নিয়মিত চলাচল করে আসছে। শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার এই লঞ্চটি খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিআইডব্লিউটিসির তত্ত্বাবধানে লঞ্চটি পরিচালিত হয়ে থাকে। সাধারণত ২ মাত্রার বিপদ সংকেত পর্যন্ত চলাচল করলেও ৩ মাত্রার বিপদ সংকেতে এটি বন্ধ থাকে।
যোগাযোগ
ঢাকার সদরঘাটে গিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়। তাছাড়া মোবাইলের মাধ্যমেও যোগাযোগ করা যায়।
ফোন নম্বর:+৮৮-০২-৯৫৫৯৭৭৯
সময় সূচী
শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন ঢাকা থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০ টায় এবং পরের দিন মোড়লগঞ্জ থেকে সকাল ৯.৩০ টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।
ধারণ ক্ষমতা
২ তলা বিশিষ্ট এম ভি সেলা লঞ্চটির আয়তন ২১৬০ বর্গফুট। এই লঞ্চটি সর্বমোট ২৮৫ জন যাত্রী বহন করে থাকে। এতে মাত্র ৯টি কেবিন রয়েছে। লঞ্চের ছাদে ব্রিজের পিছনে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে ১৫ থেকে ২০ জন একসাথে নামাজ পড়তে পারে।
ভাড়ার হার
শিশু থেকে ৩ বছর পর্যন্ত ফ্রি, ৩ থেকে সাড়ে ১২ বছর পর্যন্ত হাফ ভাড়া এবং ১২ বছরের উপর প্রত্যেক যাত্রীর সম্পূর্ণ ভাড়া প্রদান করতে হয়। গন্তব্য অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণীর ভাড়ার হার নিম্নরুপ।
গন্তব্যস্থল | ১ম শ্রেণী (ভাড়া) | ২য় শ্রেণী (ভাড়া) | ৩য় শ্রেণী (ভাড়া) |
ঢাকা টু মোড়লগঞ্জ | ৮৮৫ টাকা | ৫৪৫ টাকা | ১৪০ টাকা |
ঢাকা টু মংলা বন্দর | ১০৩০ টাকা | ৬২৫ টাকা | ১৬০ টাকা |
ঢাকা টু খুলনাঘাট | ১১৯০ টাকা | ৭২০ টাকা | ১৮০ টাকা |
অগ্রিম বুকিং
অগ্রিম বুকিং বা রিজার্ভের জন্য বিআইডব্লিউটিএ- এর ৫, দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, মতিঝিল, ঢাকা (২য় তলা) রকেট রিজার্ভেশন শাখায় যোগাযোগ করতে হয়। ফোন নম্বর ৯৫৫৯৭৭৯। রিজার্ভ বাতিল করলে অবশ্যই ২৪ ঘন্টা আগে কর্তৃপক্ষকে অবগত করতে হয়।
নিরপত্তা
লঞ্চের আইন শৃঙ্খলা জনিত নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ৭ জন আর্মড পুলিশ দায়িত্ব পালন করে থাকে। যাত্রীদের জীবনের নিরপত্তার জন্য এখানে ৬০ টি লাইফ বয়া, ৫২ টি লাইফ জ্যাকেট এবং ৩২ টি টায়ার রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে যাত্রী বীমা।
লঞ্চের ষ্টাফ
এই লঞ্চে ১ জন ইনচার্জ মাস্টার অফিসার, ১ জন ইনচার্জ মাস্টার এবং ২ জন ড্রাইভার রয়েছে। অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যে আরও রয়েছে হুইল সুগানী, টালী সুগানী, কেরানী, গিরিজার, ভান্ডারী, সুইপার এবং খালাসী । এই লঞ্চে সর্বমোট ১৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারী আছে।
মালামালের ভাড়া
মালামালের বিবরণ | পরিমাণ | লঞ্চের চার্জ | কুলির মজুরি |
বিভিন্ন ধরনের লাগেজ, ব্যাগ রাস্তা থেকে স্টিমার বা লঞ্চ পর্যন্ত (একজন শ্রমিক) | অনাধিক ১০ কেজি (১ টি ব্যাগ)
অনাধিক ২০ কেজি (১ টি ব্যাগ) অনাধিক ৩০ কেজি (২ টি ব্যাগ) অনাধিক ৪০ কেজি (১ টি ব্যাগ) অনাধিক ৪০ কেজি (২ টি ব্যাগ) অনাধিক ৬০ কেজি (২ টি ব্যাগ) |
দরকার পড়ে না | ১০ টাকা
২০ টাকা ৩০ টাকা ৩০ টাকা ৪০ টাকা ৫০ টাকা |
ষ্টীল বা কাঠের আলমারি (একাধিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে) | প্রতিটি সর্বোচ্চ ওজন ১০০ কেজি | ৩০০ টাকা | ১০০ টাকা |
কাপড়ের গাইড (একাধিক শ্রমিক) | প্রতিটি ৫০ কেজি। ৫০ কেজির বেশি হলে ২০ কেজির জন্য | ১৫০ টাকা | ৫০ টাকা
১০ টাকা |
কাঠের বা ষ্টীলের খাট | প্রতিটি | ৩০০ টাকা | ১০০ টাকা |
কাঠের, ষ্টিলের, বেতের চেয়ার, টেবিল | প্রতিটি | ১৫০ টাকা | ২০ টাকা |
ফ্রিজ সকল আয়তনের | প্রতিটি | ২৫০ টাকা | ৫০ টাকা |
টেলিভিশন সকল ধরনের | প্রতিটি | ১০০ টাকা | ২০ টাকা |
হাডওয়ার/ অন্যান্য মালামাল/ কার্টুন/ ফ্যান/ ঝুড়ি | ৫০ কেজি প্রতিটি | ২০০ টাকা | ৪০ টাকা |
মোটর সাইকেল (প্রতিটি) | প্রতিটি | ১০০ টাকা | ২৫০ টাকা |
সিলিং ফ্যান, টেবিলফ্যান | প্রতিটি | দরকার পড়ে না | ২০ টাকা |
নিরাপত্তা ও দুর্যোগ মোকাবেলা
লঞ্চে আরোহিত যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আনসার বাহিনীর সদস্য ও নিজস্ব কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। যেকোন দুর্যোগে যাত্রীদের জীবন রক্ষার জন্য ১২০ টি বয়া রয়েছে। এগুলো প্রতি ফ্লোরের দুই দিকে ছাদের অংশে এবং কেবিনের পাশে সারিবদ্ধভাবে সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতিটি বয়া ৪ জন যাত্রী বহন করতে পারে।
ক্যান্টিন
লঞ্চে আরোহিত যাত্রীদের খাবার সুবিধার্থে লঞ্চের নিচতলায় একটি ক্যান্টিন রয়েছে। ক্যান্টিনে সাধারণ চা-বিস্কুটের পাশাপাশি ভাত-তরকারীও পাওয়া যায়। ক্যান্টিনে রুম সার্ভিস ব্যবস্থা বিদ্যমান।
চা (প্রতি কাপ) | ৬/- |
বিস্কুট (প্রতি পিস) | ৪/- |
কেক (প্রতি পিস) | ১০/- |
ভাত (প্রতি প্লেট) | ১৫/- |
সিদ্ধ ডিম | ২০/- |
ইলিশ মাছ (প্রতি পিস) | ৯০/- |
গরুর মাংস ভুনা (হাফ) | ১২০/- |
মুরগীর মাংস | ১৬০/- |
মিনারেল ওয়াটার (১ লিটার) | ৩০/- |
কোমল পানীয় (১ লিটার) | ৭০/- |
চিপস | ১৫/- |
নামাজ আদায়
লঞ্চে আরোহনকারী যাত্রীদের জন্য আলাদা স্থানে নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা রয়েছে। লঞ্চের ৩য় তলায় এই স্থানটি সংরক্ষিত যেখানে একসাথে ১০ জন মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারেন। নামাজের বিছানা লঞ্চের ৩য় তলায় মাস্টার ব্রীজ – এ সংরক্ষিত থাকে।
টয়লেট
এই লঞ্চে মোট ৬ টি টয়লেট রয়েছে। কেবিন যাত্রীদের জন্য প্রতি ফ্লোরে ১ টি করে ২ টি টয়লেট রয়েছে এবং ডেক যাত্রীদের জন্য নিচতলায় মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা ২ টি করে ৪ টি টয়লেট রয়েছে।
বিবিধ
- জরুরি প্রয়োজনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেবার ব্যবস্থা থাকে।
- লঞ্চ চরে আটকে গেলে অনেক সময় অন্য লঞ্চের সাহায্য নেয়া হয়। অনেক সময় লঞ্চ উদ্ধারের জন্য যাত্রীদেরও এগিয়ে আসতে হয়।
- দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত ২ নম্বর সতর্ক সংকেত পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল করতে পারে। ৩ নম্বর সংকেত দেখানো হলে আর চলাচল করে না।