নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ঐতিহাসিক নিদর্শন গোয়ালদি মসজিদ। পৌরসভার গোয়ালদি গ্রামে স্বাধীন সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহর আমলে নির্মিত মসজিদটি পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। ১৫১৯ সালে মোল্লা হিজাবর আকবর খান এ মসজিদ নির্মাণ করেন। সে অনুযায়ী এটি আলাউদ্দিন হোসেন শাহর (১৪৯৪-১৫১৯) রাজত্বকালে নির্মিত। মোগল আমলে ঢাকায় রাজধানী স্থাপনের আগে সোনারগাঁয়ে বার ভূঁইয়া প্রধান ঈশা খাঁ, মুসা খাঁ ও এর আগের স্বাধীন সুলতানদের রাজধানী ছিল। সুলতানি আমলের গৌরবোজ্জ্বল মুসলিম ঐতিহ্যের অন্যতম সাক্ষী এ মসজিদ। ঐতিহাসিক এ পুরাকীর্তি দেখতে দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা এখানে ভিড় করেন। ১৯৭৫ সাল থেকে সরকার ঐতিহাসিক এ মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণসহ সার্বিক বিষয়ে দেখভাল করে আসছে।
সোনারগাঁয়ে হোসেন শাহের রাজত্বকালে যেসব লিপি পাওয়া যায় তার মধ্যে এই মসজিদ ও তার সংলগ্ন শিলালিপি অন্যতম। ভারতের গৌড়, পান্ডুয়া ও বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের ইমারতে ন্যায় এ মসজিদের ভেতর ও বাইরের দেয়ালের পাথর ও ইটের উপরে মুসলিম ঐতিহ্য গত আরবীয় অলংকরন লক্ষ্য করা যায়। এক গম্ভুজ বিশিষ্ট এ মসজিদের চার কোনায় চারটি গোলায়িত কর্ণার টাওয়ার রয়েছে। এ টাওয়ার গুলো সুলতানী রীতিতে ছাদের সীমানা শেষ হয়েছে।
মসজিদটির আয়তন ৭ দশমিক ৯২ মিটার এবং দেয়াল গুলো ১ দশমিক ৬১ মিটার প্রশস্থ। মসজিদের প্রবেশের জন্য পাঁচটি খিলান পথ রয়েছে। প্রধান প্রবেশপথ বরাবর কেন্দ্রীয় মিহরাবটি অবস্থিত। প্রধান মিহরাবে কালো পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। অপর দুটি মেহরাব ইটের তৈয়ারী।
দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশনের মধ্যে এক গম্ভুজ বিশিষ্ট ঐতিহাসিক এ মসজিদটির ইমারতের কর্ণার টাওয়ারে ব্যবহৃত অলংকৃত বাঁকানো ইটের গোলায়িত ব্যান্ড বাগের হাটের বিবি বেগমী মসজিদের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
এ মসজিদের টেরাকোটা নকশায় যে সব মোটিফ পাওয়া যায় সোনারগাঁয়ের সুলতান গিয়াস উদ্দিন শাহের প্রস্তর নির্মিত সমাধিতে তা প্রত্যক্ষ করা যায়। এ মসজিদের পুরু ইটের পৃষ্ঠ ভাগ টেরা কোটা অলংকরন রীতিতে খোদাই করা।
যেভাবে যাবেনঃ-
ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ গামী বাসে করে সরাসরি বিবি বেগমী মসজিদের সামনে চলে আসা যায়।