ঠাকুরগাঁও এখন বিভিন্ন মসজিদ মন্দির ও পুরাকীতি স্থাপনার জন্য সকলের কাছে পরিচিত। এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনেক মিন্দিরের মাঝে একটি হচ্ছে গোরক্ষনাথ মন্দির। নেকমরদ থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে ঠাকুরগাঁওয়ের আরো একটি ইতিহাস সমৃদ্ধ স্থান হলো প্রাচীন গোরক্ষনাথ মন্দির। এ মন্দিরের সাথে মিশে আছে অনেক ইতিহাস ও অলৌকিক ঘটনা। যা আপনাকে মুগ্ধ করবে।
এখানে রয়েছে মোট পাঁচটি মন্দির। রয়েছে তিনটি শিবমন্দির ও একটি কালি মন্দির। নাথ মন্দিরটি চত্বরের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত। মন্দিরের পেছনে রয়েছে একটি বৈচিত্রময় কূপ। কূপের একবারে নিচু অংশটুকু পর্যন্ত পাথর দিয়ে বাঁধানো। কূপটি বড় বড় কালো পাথরের খণ্ড দ্বারা নির্মিত। কূপের পূর্ব দিকে একটি দরজা ও পশ্চিম দিকে অপর একটি দরজা রয়েছে। ওই দরজা দিয়ে আগতরা কূপের পানি নিয়ে পূণ্যস্নান করে থাকে। হাজারো নরনারীর পূণ্যস্নান করার পরও ওই কূপের পানি এক ইঞ্চিও কমে না বলে কথিত আছে।
বলা হয় যে, গোরক্ষনাথ ছিলেন নাথ পন্থীদের ধর্মীয় নেতা খীননাথের শিষ্য। নবম-দশম শতাব্দির মধ্য ভাগে গোরক্ষনাথের আবির্ভাব ঘটে। তিনি ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এখানে মন্দির স্থাপন করেন। এই নাথপন্থি ধর্ম সম্প্রদায়ের গুরু গোরক্ষনাথের স্মৃতিবাহী গোরক্ষনাথ মন্দির ও আশ্রমটি রাণীশংকৈলের গোরকুইয়ের একটি মৃত নদীর তীরে উঁচু জমির উপর অবস্থিত।
মন্দিরের উত্তর চত্বরে টিনের চাল বিশিষ্ট যে আশ্রম রয়েছে তার দরজায় একটি শিলালিপি বা ফলক ছিল। এই শিলালিপিটি বর্তমানে দিনাজপুর যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। এর সম্পূর্ণ পাঠোদ্ধার করা সম্ভব না হলেও বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক আবু তালিবের মতে, এই শিলালিপিটি বাংলা অক্ষরে উৎকীর্ণ এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত শিলালিপিগুলোর মধ্যে প্রাচীনতম।
যেভাবে যাবেন:
রানীশংকৈল উপজেলা থেকে ছয় কি.মি. উত্তরে রাণীশংকৈল-বালিয়াডাঙ্গী সড়কের পাশে অবস্থিত ঐতিহাসিক স্থান নেকমরদ। আর নেকমরদ হতে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে গোরকই নামক স্থানে রয়েছে গোরক্ষনাথ মন্দির। নেকমরদ হতে যেকোনো লোকাল বাহনে করে যেতে পারবেন ঐতিহাসিক গোরক্ষনাথ মন্দিরে।