মনসা মন্দির বা ধনুকা মনসামন্দির শরীয়তপুর জেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মন্দির ও বাংলাদেশের অন্যতম একটি সরক্ষিত পুরাকীর্তি। এটি শরীয়তপুর সদরের ধানুকা নামক গ্রামে অবস্থিত। মন্দিরটি ময়ূর ভট্টের বাড়িতে অবস্থিত। এ বাড়িতে আরও বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে। সবগুলো মন্দির নিয়ে গঠিত বাড়িটিকে একত্রে স্থানীয়রা ময়ূর ভট্টের বাড়ি নামে ডেকে থাকেন সুলতানী ও মোগল আমলের নির্মাণ শৈলিতে নির্মিত এ বাড়িতে ৫টি ইমারত আছে ।
৬শ বছরের প্রাচীন এ বাড়িটিকে ঘিরে রয়েছে নানান অলৌকিক ও কিংবদন্তী লোক কথা কথিত আছে, বাড়ির এক কিশোরের অভ্যাস ছিল প্রত্যুষ বাগানে গিয়ে ফুল কুড়ানো। একদিন প্রত্যষেু ফুল কুড়াতে গিয়ে সে দেখতে পায় বাগানে মস্তবড় এক সাপ। ভয় পেয়ে সে ঘরে ফিরে আসে। পরদিন আবার যথা রীতি ওই কিশোর ফুল কুড়াতে যায় বাগানে। সেদিনও মুখোমুখি হয় সেই সাপের। সাপটি কিশোরের পিছু পিছু বাড়ির আঙিনায় প্রবেশ করে তাকে ঘিরে নৃত্য করতে শুরু। বাড়ির লোকজন প্রত্যক্ষ করে সে দৃশ্য। রাতে তাদের সামনে স্বপ্নে আর্বিভূত হয় মনসা দেবী। দেবী তাদের মনসা পূজা করার নির্দেশ দেন। এর পরই বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয় মনসা মন্দিও। আর সেই থেকেই ময়ূও ভট্রের বাড়ি রূপান্তর হয় মনসা বাড়িতে ।
এটা একটা পুরতন ঐতিহ্য বাড়ি। চন্দ্রমনি ন্যায়, ভুবন হরচন্দ্র চুড়ামনি ও মহোপাধ্যায়, শ্রীযুক্ত বামাচরণ ন্যায় প্রভৃতির জন্মস্থান ধানুকায়। এখানকার শ্যামমূর্তি জাগ্রত দেবতা বলে কিংবদন্তী রয়েছে। মূল রাস্তা থেকে বাড়িটির প্রবেশ মুখে একটি বড় পুকুর রয়েছে। পুকুরে পশ্চিম পাড় থেকে শুরু রয়েছে মূল বাড়ির সীমানা । মন্দির বাড়ির পশ্চিম সীমানার মাঝামাঝি পূর্বদিকে মূখ করে দাঁড়িয়ে আছে বাংলো প্যাটার্নের দোচালা ছাদবিশিষ্ট ইমারত। এটাই একসময় মনসা মন্দির হিসাবে ব্যবহার হতো। উওরের প্রান্তসীমায় দক্ষিন দিকে মুখ করে অপেক্ষাকৃত বড় একটি ইমারত রয়েছে। এটি দোচালা ছাদবিশিষ্ট । এটি দূর্গা মন্দিও হিসেবে চিহ্নিত।
যেভাবে যাবেনঃ-
ধনুকা মনসামন্দির শরীয়তপুর জেলা সদরে অবস্থিত। শরীয়তপুর সদর থেকে রিক্সয় ধানুকার মনসা বাড়ি যাওয়া যায়। ভাড় ১০-২০ টাকা।