রুদ্রকর জমিদার বাড়ি মঠ

1390

বাংলাদেশ জুড়ে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। তেমনি শরীয়তপুর জেলায় অবস্থিত এক নিদর্শন রুদ্রকর জমিদার বাড়ি মঠ। স্থাপত্যশৈলীর এক অপূর্ব প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন এ মঠ। কথিত ইতিহাসে রুদ্রকর জমিদার বাড়ি মঠ হিসেবে পরিচিতি থাকলেও মূলত এটি একটি মন্দির। মন্দিরের একটি প্রস্তরলিপি থেকে জানা যায়, রুদ্রকর এলাকার বাবু গুরুচরণ চক্রবর্তী নামের একজন হিন্দু ব্যক্তি ধাপে ধাপে এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন।

জমিদার নীলমণি চক্রবর্তী ওই জমিদারির গোড়াপত্তন করেন। তবে তারা কোথা থেকে এসে এখানে জমিদারি শুরু করেছিলেন, তা জানা যায়নি। জমিদার বাড়িটি প্রায় বার থেকে তের একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। জমিদারবাড়ির প্রবেশপথে প্রথম ইমারতের মূল ফটকের ওপরে লেখা ‘শ্রী শ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ ও নীলমণি চক্রবর্তী মহাশয়কৃত দালানের পুনঃসংস্কার, ১৮৯৮ বঙ্গাব্দ। রুদ্রকর জমিদারবাড়িতে আট থেকে দশটি পাশাপাশি ভবন ছিল, যা বাড়ির মঠ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এর মধ্যে তিনতলা ভবনগুলো ছিল আবাসস্থল। বাকিগুলোয় ছিল জমিদারদের দরবার কক্ষ, গুদাম ঘর, রন্ধনশালা ও নৃত্যশালা। মঠসংলগ্ন একটি ভবন ছিল উপাসনালয়। বাবুবাড়িতে মাটির নিচে কয়েকটি গোপন কুঠরি ছিল, যেগুলো মাটিধসে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়দের ধারণা, মাটি খুঁড়লে এখনো সেই গোপন কুঠরির অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে।

মঠটির সামনে রয়েছে বড় একটি পুকুর। জমিদারবাড়ির মন্দির (মঠটি) তৈরির সময় এ পুকুরটি তৈরি করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। মঠটির বাহিরে ও ভেতরে অসাধারণ ও সমসাময়িক কারুকাজে শোভিত। তবে মূল স্থাপত্য সৌন্দর্য্যরে মাঝে আনন্দ জাগায় মঠটির বিভিন্ন অংশে টিয়া পাখির বাসা। আর সাথে রয়েছে পাখির কলকাকলি। বিশেষ করে টিয়া পাখির কিচিরমিচির মুগ্ধ করছে এলাকাবাসী ও পর্যটকদের।

যেভাবে যাবেনঃ-

মঠটি দেখতে হলে যেতে হবে শরীয়তপুর জেলা শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ডামুড্যা-শরীয়তপুর মহাসড়কের পাশে রুদ্রকর ইউনয়িন পরিষদ কার্যালয়ে। এর উত্তর দিকে রাস্তায় পা বাড়ালেই রুদ্রকর জমিদার বাড়ি (বাবুবাড়ি)। এর পাশেই বিশাল পুকুর লাগোয়া সুউচ্চ মঠ।