দেবতার পুকুর| ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1389

খাগড়াছড়ি নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক অপার লীলাভূমি। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি সড়কের কোল ঘেঁষে মাইসছড়ি এলাকার নুনছড়ি মৌজার আলুটিলা পর্বত থেকে নেমে এসেছে ছোট্ট নদী নুনছড়ি।এই নুনছড়ি মৌজায় অবস্থিত সমুদ্র সমতল হতে প্রায় ৭০০ ফুট উপরে ৫ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত হ্রদটিই আসলে দেবতার পুকুর নামে পরিচিত।

দেবতার পুকুরের অনেক বৈশিষ্ট্য। পুকুরের চতুর্দিকে মালভুমি দ্বারা বেষ্টিত বলে পাড়ে দাঁড়িয়ে এর সঠিক উচ্চতা অনুভব করা যায় না। দুই একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই পুকুরের পানিতে গাছের পাতা পড়ে না। যদিওবা পড়ে, তা চলে আসে কিনারে। শীত-গ্রীষ্মে কখনই পুকুরের জল শুকোয় না।। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির তীর্থক্ষেত্র এই দেবতার পুকুর রোগ-ব্যাধি, আপদ-বিপদ থেকে রক্ষা করে বলে তাদের বিশ্বাস।

কথিত আছে, বর্তমান দেবতা পুকুর এলাকা একসময় উঁচু পাহাড়ি অঞ্চল ছিল। ঐ পাহাড়ে জুম চাষ হতো। জুম চাষ করার এক পর্যায়ে ঐ পাহাড়ে আবাদ না করার জন্য একজনকে স্বপ্নে নিষেধ করা হয়। কিন্তু তিনি স্বপ্নের গুরুত্ব না দিয়ে এমনকি বারবার একইভাবে স্বপ্নে নিষেধ করা সত্ত্বেও যথারীতি জুম চাষ চালিয়ে যায়। শেষবারে তাকে নরবলী দিয়ে জুমের ফসল ভোগের জন্য বলা হয় এবং তা করলে সে আরও কিছু ধন লাভ করবে বলেও স্বপ্নে জানানো হয়। কিন্তু এ দাবি পূরণে চাষিটির বিশ্বাস এবং সামথ্য কোনটাই ছিল না। এর কিছুদিন পর অমাবশ্যার এক রাতে ঐ স্থানে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে আশেপাশের লোকেরা দেখতে পায় জুমের জায়গায় পাহাড়ের উপরে বিরাট এক জলাশয়। এরপর থেকে জলাশয়টির নাম ‘দেবতা পুকুর’ নামে পরিচিতি পায়।

যেভাবে যেতে হবে:-

ঢাকা থেকে প্রথমে যেতে হবে খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ি হতে মহালছড়ি যাবার পথে মাইসছড়ি। এখানে আলুটিলা হয়ে আরো সামনে এগিয়ে গেলে পিচঢালা পথ শেষে শুরু হবে ইটের রাস্তা। চান্দের গাড়ী নিয়ে সেই পথে আরও কিছুটা এগুলে গাড়ীর রাস্তা শেষ। তারপর পায়ে হেটে যেতে হবে প্রায় ২/৩ কিলো পথ।