নগর জীবনের ক্লান্তিকর একঘেঁয়েমি থেকে নগরবাসীকে একটু বিনোদনের ছোঁয়া দিতে ফয়’স লেকের পাশে সবুজে ঘেরা বনবীথির আবেষ্টনীতে ১৯৮৯ সালে তৈরি করা হয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। ছয় একর জায়গার উপর বানর, সিংহ, হরিণ ও হনুমান এই চার প্রজাতির ১৬টি প্রাণী নিয়ে যাত্রা শুরু হয় এই চিড়িয়াখানার। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার অবস্থিত চিড়িয়াখানা।[৩] এটি শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকে পাহাড়তলী ইউএসটিসি মেডিকেল কলেজের বিপরীত পাহাড়ের পাদদেশে ছয় একর ভূমির উপর অবস্থিত।
১৯৮৮ সালে, চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক এম এ মান্নান এবং চট্টগ্রামের অন্যান্য অভিজাত ব্যক্তিবর্গ প্রাথমিকভাবে ফয়েজ লেকে চিত্তবিনোদন, শিক্ষা এবং গবেষণার উদ্দেশ্যে চিড়িয়াখানা স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তিতে ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এই চিড়িয়াখানা সাধারণের জন্যে উন্মুক্ত করা হয়। প্রথমদিকে এক টিকিটেই চিড়িয়াখানা এবং ফয়স লেকে প্রবেশের সুযোগ থাকলেও ১৯৯৫ সালে দর্শনার্থীদের স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি বাড়তি লাভের বিষয়টি বিবেচনা করে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ দুইটি আলাদা গেটে পৃথক টিকিটের মাধ্যমে প্রবেশের ব্যবস্থা করে।
বর্তমানে এই চিড়িয়াখানায় ৭২ প্রজাতির মোট ২৮০টি প্রাণী রয়েছে। যার মধ্যে ৩০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৮ প্রজাতির পাখি ও ৪ প্রজাতির সরীসৃপ। ২০০০ সালে এখানকার প্রাণীর সংখ্যা ছিল ২৫০টি। গত ৭ বছরে মাত্র ৩০টি নতুন প্রাণী যোগ হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্যারা হরিণ, ধনেশ, তিতির, হনুমান প্রভৃতি।
বর্তমানে চিড়িয়াখানায় রয়েছে ভারতীয় সিংহ, মিঠাপানির কুমির, মুখপোড়া হনুমান, রেসাস বানর, তিতির, মেছো বিড়াল, বন বিড়াল, এশীয় কালো ভালুক, চিতা বিড়াল, মায়া হরিণ, চিত্রা হরিণ, সাম্বার হরিণ, প্যারা হরিণ, গন্ধগোকুল (হিমালিয়ান), বাঘডাস, খরগোশ, অজগর, উল্টো লেজি বানর, ময়ূর, ছোট কাক ধনেশ, রাজ ধনেশ, শকুন, কোকিল, ময়না, তিতির, তিলাঘুঘু, ভুবন চিল, তার্কি, কচ্ছপ, সজারু ও শিয়াল।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জনপ্রতি টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। তিন বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের টিকিট কাটতে হয় না।
যেভাবে যাবেনঃ
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা শহরতলীর মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় যে কোন স্থান থেকে অটো কিংবা রিক্সা করে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় যাওয়া যায়।