একটি দেশের প্রত্নতাতিক নিদর্শন কিংবা ইতিহাস বিজড়িত বস্তু জাদুঘরে সকলের প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ কর হয়। ঠিক তেমনি “বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর” বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জাদুঘর ও সংগ্রহশালা। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৫৬ সালে দি ঢাকা নিউজ পত্রিকায় প্রথম ঢাকায় একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু উনিশ শতকে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তেমন কোনো অগ্রগতি হয় নি। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ অপ্রত্যাশিতভাবে ঢাকায় জাদুঘর স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং জাদুঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯১৩ সালে ঢাকা জাদুঘর নামে এর যাত্রা শুরু করে এবং ৭ আগস্ট, ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর তারিখে এটিকে জাতীয় জাদুঘরের মর্যাদা দেয়া হয়। বর্তমানে রাজধানী ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র শাহবাগে ৮.৬৩ একর জমির উপর একটি চারতলা ভবনে জাদুঘরটি অবস্থিত। প্রতি দিন দেশ বিদেশের হাজারো মানুষ আসে এই জাদুঘরে।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে মোট ৪৪টি প্রদর্শনী কক্ষ, তিনটি অডিটোরিয়াম, একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার ও দুটি অস্থায়ী প্রদর্শনী কক্ষ রয়েছে। ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব, জাতিতত্ত্ব, শিল্পকলা, প্রাকৃতিক ইতিহাস প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কিত নিদর্শনাদি জাতীয় জাদুঘরের সংগ্রহে রয়েছে। ২০০৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় জাদুঘরের সংগ্রহভুক্ত মোট নিদর্শনের সংখ্যা প্রায় ৮৬,০০০।
জাতীয় জাদুঘরের প্রধান আকর্ষণীয় দিক হলো প্রাচীন যুগের হিন্দু-বৌদ্ধ ভাস্কর্য। অলংকরণ ও কারুকার্যে এসব ভাস্কর্য সারা পৃথিবীতে অনন্য। এছাড়াও প্রাচীন ও মধ্যযুগের ভবনগাত্রের অলংকরণে ব্যবহূত বিভিন্ন ধরণের পোড়ামাটির ফলক বিশেষ করে মহাস্থান, ময়নামতী, পাহাড়পুর ও মধ্যযুগের মন্দির, মসজিদে ব্যবহূত অলংকৃত পোড়ামাটির ফলকগুলি এ বিভাগের গ্যালারির অন্যতম আকর্ষণীয় দৃশ্যপট।
এখানে নৃতত্ব, চারুকলা, ইতিহাস, প্রকৃতি এবং আধুনিক ও বিশ্ব-সভ্যতা- ইত্যাদি বিষয়ে আলাদা প্রদর্শনী রয়েছে। এছাড়া এখানে একটি সংরক্ষণাগারও রয়েছে।
যেভাবে যাবেনঃ
জাতীয় জাদুঘর ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত। ঢাকা শহরের যেকোন প্রান্ত থেকে খুব সহজেই বাসে করে ছলে আসা যায়।
প্রবেশমূল্যঃ পাচ টাকা করে জন প্রতি।
সময়সূচীঃ
শনিবার থেকে বুধবার- সকাল ১০.৩০ থেকে বিকাল ৪.৩০
শুক্রবার বিকাল ৩.৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকে।
বৃহস্পতিবার ও অন্যান্য সরকারী ছুটির দিন সমূহ জাদুঘর বন্ধ থাকে।