অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত একদল রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ ভ্রমণে জাল ভিসা দেওয়া নিয়ে ক্যানবেরায় বাংলাদেশের হাই কমিশনের এক কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তদন্ত করছে দেশটির পুলিশ।
বাংলাদেশ দূতাবাসের ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ভ্রমণে আসার জন্য তিনি অর্থের বিনিময়ে ভুয়া পর্যটন ভিসা দেওয়ার সঙ্গে জড়িত।এরকম ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করার পর বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরতও পাঠিয়েছে ঢাকার কর্মকর্তারা।
অস্ট্রেলিয়ার এসবিএস গণমাধ্যমে প্রকাশ, বাংলাদেশে কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয় যে ওই রোহিঙ্গারা জাল ভিসা নিয়ে দেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন। পরে তাদেরকে আটক করে ফেরত পাঠানো হয়। এরকম ভুক্তভোগী কয়েকজন রোহিঙ্গা অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পর বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে তারা।
গত মাসে এরকম অন্তত ২০ জন রোহিঙ্গাকে ঢাকায় বিমানবন্দরে আটক করা হয় যারা পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছিলেন। এদের অনেকেরই পরিবারের সদস্যরা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন।
এসবিএস এর খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ হাই কমিশনে একজন কর্মকর্তা ভিসা পেতে সহায়তা করতে পারেন এমন কথা তারা অন্য রোহিঙ্গাদের মুখ থেকেই শুনেছিলেন। এর পরই তারা বাংলাদেশের ভিসা নিয়েছিলেন। বাংলাদেশ ভ্রমণে আগ্রহী এই রোহিঙ্গাদের বলা হয় যে ভিসা পেতে তাদেরকে ভ্রমণের কাগজপত্রসহ ৩৫০ ডলার করে তার বাড়ির ঠিকানায় পাঠাতে হবে।তবে অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইফুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত তারা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না যে ক্যানবেরায় দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তা এ ধরনের ভিসা দেওয়ার সঙ্গে জড়িত।
ফারুক নামের এক রোহিঙ্গার নাম উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য ভিসা পেয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তাকে ঢুকতে দেয়নি। গত ছয় বছর ধরে শরণার্থী হিসেবে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন। তার মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে রয়েছেন।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে ফারুক গত বছর ৯ ডিসেম্বর ঢাকায় আসেন। তিনি ভেবেছিলেন দূতাবাস থেকে পর্যটন ভিসা দেওয়া হয়েছে যা দিয়ে তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর জাল ভিসা সন্দেহে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে।
অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, শুধু ফারুক নয়, এরকম অন্তত ২০ জন রোহিঙ্গাকে সম্প্রতি আটক করে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ যাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর ২০ ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা বলেন যে ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে তারা ভিসা নিয়েছিলেন।
সুত্রঃ ডেইলি স্টার।