আমিয়াখুম জলপ্রপাত

1460

বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার অন্তর্গত  থানচি উপজেলার শেষ প্রান্তে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে, নাক্ষিয়ং নামক স্থানে অবস্থিত একটি জলপ্রপাত। মারমা ভাষায় খুম শব্দের অর্থ হলো জলপ্রপাত। তাই আমিয়াখুম এর অর্থ দাঁড়ায় – আমিয়া’র জলপ্রপাত। প্রাকৃতি সৌন্দর্যের জন্য একে বলা হয়ে থাকে ‘বাংলার ভূস্বর্গ’।কারো কারো মতে, এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাত। এর অবস্থান বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম নাক্ষিয়ং নামক স্থানে।

এই জলপ্রপাতের প্রধান আকর্ষণ, অরণ্য-সবুজ পাহাড়ি ধাপে নেমে আসা দুধসাদা ফেনাযুক্ত জলরাশি। এই জলরাশির চারপাশটা বেশ ফাঁকা থাকায়, পুরো জলপ্রপাতকে ক্যানভাসে আঁকা সজীব চিত্র মনে হয়।

এই জলপ্রপাতটি দুর্গম এলাকায়। এর নিকটবর্তী অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের কাছে পরিচিত থাকলেও বাইরের পৃথিবীর মানুষের কাছে অজ্ঞাত ছিল। পর্যটকদের আনাগোণা শুরু হয়েছে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের পরে। তারপরেও পথের দুর্গমতার জন্য খুব বেশি পর্যটক আমিয়াখুম আসতে চান না। তারপরেও বছরের প্রায় হাজার দশেক পর্যটক আমিয়াখুম দেখতে আসেন।

যেভাবে যাবেনঃ-

বান্দরবান থেকে বাস বা জীপে সোজা চলে যাবেন থানচিতে। থানচি যেতে প্রায় ৪/৫ ঘণ্টার মতো লাগে। থানচি নেমে প্রধান কাজ হলো একজন গাইড ঠিক করা। এবার থানচি থেকে নৌকা নিয়ে রেমাক্রি বাজারে চলে যান, থানচি থেকে রেমাক্রি প্রতিজন ২০০ টাকা করে তবে টুরিষ্টদের দেখলে রিজার্ভ ৩০০০/৪০০০ হয়ে যায়। যদি থানচি থেকে সকাল সকাল রওয়ানা দেন তাহলে রেমাক্রি নেমে হাঁটা ধরুন নাফাখুম ঝর্ণার উদ্দেশ্য। প্রায় আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা হাঁটলে আপনারা পেয়ে যাবেন নাফাখুম এর দেখা। এখানে কিছুক্ষণ ছবি তুলে, বিশ্রাম নিয়ে এবার সাজাই পাড়ার দিকে রওয়ানা হয়ে যান।

নাফাখুম ঝর্ণা থেকে হাঁটা শুরু করলে ৩/৪ টা ঘণ্টার মধ্যেই আপনারা পৌঁছে যাবেন সাজিয়াপাড়া। সাজিয়াপাড়াতে রাতটুকু কাটিয়ে পরদিন সকাল সকাল উঠে পড়ুন এবং সাজিয়াপাড়া থেকে একজন গাইড নিয়ে রওয়ানা হয়ে যান আমিয়াখুমের উদ্দেশ্যে। এক্ষেত্রে গাইডকে ৫০০ টাকার মত দিতে হবে।

প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা অসাধারণ সব রাস্তা দিয়ে হাঁটলেই পেয়ে যাবেন আমিয়াখুম ঝর্ণা। আমিয়াখুম দেখে আবার ফিরে চলুন সাজিয়াপাড়া, রাতটুকু সাজিয়াপাড়া কাটিয়ে সকালে আবার আগের রাস্তায় ফিরে আসতে পারেন থানচিতে।