মজু চৌধুরীর হাটটি মেঘনা নদীর কোল ঘেঁেষ প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য বেষ্টিত মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। এখানে রয়েছে ফেরী ও লঞ্চঘাট বা টার্মিনাল। ঘন্টায় ঘন্টায় আসে বিভিন্ন জেলা থেকে ২ তলা ৩ তলা উন্নতমানের লঞ্চ। এখানে যাত্রী সাধারণের কোলাহল ও ভীড় রাতদিন লেগেই থাকে। আরও রয়েছে নদীতে হাজারো জেলের রঙ্গিন পাল তোলা নৌকার অপরূপ দৃশ্য। রহমতখালী থেকে মেঘনা নদী পর্যন্ত নদীর দু’ধারে রয়েছে নানা জাতের গাছ লাগানো সবুজ ছায়াঘেরা দৃশ্য, যা মন কেড়ে নেয়।
মেঘনার ইলিশ শুধু বাংলাদেশ নয়, বিদেশেও এর সুনাম রয়েছে। সেই মেঘনা নদীতে জেলেদের ঐতিহ্যবাহী রূপালী ইলিশ মাছ ধরার কৌশল স্বচক্ষে দেখার দৃশ্য দেখতে হলে এবং আনন্দ উপভোগ করতে হলে এখানে এসে যান্ত্রিক নৌকা/ট্রলারে চড়ে ঘুরে ঘুরে বেড়ানো যায় মনের আনন্দে। একদিকে গায়ে নির্মল হাওয়া লাগিয়ে অপরদিকে দু’নয়নে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাখেলা উপভোগ করা যায়। সেই সাথে মনের আনন্দে উপভোগ করা যায় পড়ন্ত বিকেলে লাল আভায় সূর্য অস্ত যাওয়ার এক অপূর্ব মনোরম দৃশ্য। মজু চৌধুরীর ঘাট স্লুইচ গেট (রেগুলেটর) পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড রহমতখালী নদীর উপর পানি নিষ্কাশনের জন্য ১৪ জানালা বিশিষ্ট সøুইচ গেট নির্মাণ করেছে। পানি নিষ্কাশনের সময় যখন সইচ গেটের জানালাগুলো খুলে যখন পানি বের করা হয়, তখন পানির স্রোতের দৃশ্য এবং শোঁ শোঁ সুরের আওয়াজ শুনতে এক অনাবিল আনন্দ অনুভব হয়। স্লুইচ গেটের পশ্চিম পাশে জেলেদের নানা কৌশলে মাছ ধরার দৃশ্যও দেখার মতো। কেউ জাল দিয়ে, কেউ বড়শি দিয়ে আবার কেউ কেউ ডুব দিয়ে মাছ ধরেন। স্লুইচ গেটের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে রয়েছে কোস্টগার্ডের নৌ-ঘাটি ও জাহাজ। কোস্ট গার্ডের সৈনিকরা মজু চৌধুরী ঘাটের নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। এখানে আরও রয়েছে জাহাজের ডক। এই ডকে যান্ত্রিক ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চ-ট্রলার ও ফেরী জাহাজের মেরামত করা হয়, যা দেখার মতো।
এখানে রয়েছে অনেকগুলি মাছের হ্যাচারী। এতে উৎপাদন করা হয় নানা প্রজাতির রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিয়া, পাঙ্গাস ইত্যাদি মাছ।
যেভানে যাবেন:
সড়ক পথে লক্ষ্মীপুর জেলা সদর তেমুহনী মোড় থেকে সিএনজি এবং বাস টার্মিনাল থেকে বাস চলাচল করে। অপরদিকে ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে মজু চৌধুরী ঘাটের দূরত্ব ২৬ কিলোমিটার এবং বরিশাল থেকে ৭৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বর্তমানে লক্ষ্মীপুর অংশের সড়ক যোগাযোগ উন্নত।