বাংলার নবাবী আমলে গাজী বংশের শেষ জমিদার শের আলী গাজী দশকাহনিয়া অঞ্চল বিজয় করে স্বাধীনভাবে রাজত্ব করেন। এই শের আলী গাজীর নামে দশ কাহনিয়ার নাম হয় শেরপুর। তখনও শেরপুর রাজ্যের রাজধানী ছিল গড়জরিপা। বর্তমান গাজীর খামার ইউনিয়নের গিদ্দা পাড়ায় ফকির বাড়িতে শের আলী গাজীর মাজার এবং নকলা উপজেলার রুনী গাঁয়ে গাজীর দরগাহ অবস্থিত।
“নাও, ঘোড়া এবং নারী যখন যার হাতে যায় তারই” কথা বলে কথা কিন্তু সত্য। নারীর লোভে কেউ হারায় সিংহাসন, কেউ হারায় জমিদারি আবার কেউ হারায় প্রাণ। শেরপুরের জমিদার শের আলী গাজীর জীবনে পদ্মবতীর আগমন ও বিচ্ছেদ এ রকম ঘটনা।
মুর্শিদাবাদ সরকারের অধিনস্ত শেরপুর অঞ্চলের জমিদার শের আলী গাজী। গাজী শের বংশের শেষ জমিদার শের আলী গাজী। তার নামানুসারে জেলার নামকরণ হয় শেরপুর। সম্পূর্ণ স্বাধীন চেতনার পুরুষ ছিলেন শের আলী গাজী। মুর্শিদাবাদ সরকারের অধিনতা ছিন্ন করে স্বাধীন ভাবে শেরপুরের জমিদারি শুরু করেন। গাজী শিকার করতে এবং ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করতেন। শিকারের উদ্দেশ্যে নদী পথে একদিন নৌকা নিয়ে বের হলেন। যেতে যেতে নদী তীরবর্তী “দর্শা” গ্রামে (ঘাটে) নৌকা থামে। ঘাটে এক অপরূপা সুন্দরী নাম তার পদ্মবতী (হিন্দু ধর্মাবলম্বী)। তাকে দেখে বিমুগ্ধ হলেন নৌকারোহী শের আলী গাজী। সে সময় অল্প বয়সে বিয়ে হতো মেয়েদের। পদ্মবতীর বেলায় বিকল্প হয়নি। ইতিপূর্বে পদ্মবতীর বিয়ে হয় রামভল্লব নন্দীর সাথে। পদ্মবতী শের আলীর প্রেম হয় এবং তাদের প্রেমের মিলন হয়। কিন্তু তাদের সুখ বেশি দিন টিকেনি। শুরু হয় তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। গাজীর বিরুদ্ধে পরস্ত্রী হরণ, জেনা এবং রামভল্লব হত্যার অভিযোগ আনে পদ্মবতীর নিকট আত্মীয় হিন্দুরা। মুর্শিদাবাদ নেজামতে গাজীর বিচার হয় এবং বিচারের রায় হয় গাজীর প্রাণ দন্ড।
কিভাবে যাবেন:-
সড়ক পথে ঢাকা হতে শেরপুরের দূরত্ব ২০৩ কিলোমিটার। ঢাকার মহাখালি বাস স্টেশন থেকে শেরপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা দুরপাল্লার বাসে শেরপুর আসা যায়। উপজেলা শেরপুর সদর হাসপাতাল থেকে সিএনজি/ রিক্সা করে আসা যায়| প্রতি জন ভাড়ার হার ৪০টাকা|