চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। জানা ইতিহাসের শুরু থেকে চট্টগ্রামে আরাকানী মঘীদের প্রভাব লক্ষনীয়। ফলে গ্রামীণ সংস্কৃতিতেও এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। ওয়ালী খান মসজিদ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত একটি মসজিদ। ১৮শ শতকে নির্মিত এই মসজিদটি চট্টগ্রাম মহানগরের চকবাজার এলাকায় অবস্থিত। তবে মসজিদ এলাকাটি মসজিদটির নাম অনুসারে ওয়ালী খাঁ মোড় নামে পরিচিত। চকবাজার গোলজার মোড় থেকে মাত্র ১০০ গজ উত্তর দিকেই মসজিদটির অবস্থান। চট্টগ্রামের মোগল ফৌজদার ওয়ালী বেগ খান ১৭১৩ হতে ১৭১৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। ওয়ালী খান চকবাজারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেশ কিছু জমিও দান করেন।
মোগল আমলের ঐতিহ্য ও প্রায় ৩০৫ বছরের পুরানো ‘অলি খাঁ শাহী জামে মসজিদ’। অনিন্দ্য সৌন্দর্যে সজ্জিত এ মুসলিম স্থাপনার আসল সৌন্দর্য বাহির থেকে তেমনটা বোঝা যায় না। তবে ভেতরের অংশটা অনেক চমকপ্রদ। মুল মসজিদের দেয়ালগুলো অনেক পুরু। দেয়ালের পুরত্ব প্রায় ১ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত। দেয়ালের গায়ে রয়েছে ছোট ছোট খোপ। যেগুলোতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখা হতো বলে ধারনা করা হয়। বর্তমানে এই খোপগুলোতে পবিত্র কোরআন শরীফসহ বিভিন্ন জিনিস রাখা আছে। মসজিদের জন্য নির্ধারিত জায়গা প্রায় ১৮ শতক। তবে মুল মসজিদটি নির্মিত হয়েছে প্রায় ৬ থেকে ৭ শতক জায়গার উপর। মুল মসজিদের রয়েছে বিশাল বিশাল ৬টি গুম্বুজ (চারটি বড় এবং দুইটি ছোট)। এই গুম্বুজগুলোই মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে।
চট্টগ্রামে প্রাচীন মুসলিম স্থাপনার মধ্যে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ (১৬৬৯), নবাব ইয়াসিন খান নির্মিত কদম মোবারক মসজিদ (১৭১৯), নবাব ওয়ালী বেগ খান নির্মিত অলি খাঁ মসজিদ (১৭১৩), হামজা খাঁ মসজিদ, হাটহাজারী (১৬৮২), রাস্তি খাঁ মসজিদ (১৪৭৪) নসরত বাদশা মসজিদ (১৫৬৭) সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সময়ের ও কালের ঐতিহ্য এ মসজিদের মধ্যে অনেকগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। মাত্র কদম মোবারক মসজিদটি, আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ ও নবাব ওয়ারী বেগ খাঁর অলি খাঁ মসজিদ ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
যেভাবে যাবেন:-
দেশের যেকোন অঞ্চল থেকে সড়ক, নৌ বা রেলপথে চট্টগ্রাম শহরে চলে আসুন। চট্টগ্রাম শহরতলীর চকবাজার এলাকায় ওয়ালী খান মসজিদ অবস্থিত হওয়ায় যে কোন স্থান থেকে অটো কিংবা রিক্সা করে ওয়ালী খান মসজিদে যাওয়া যায়।