ভৈরব সেতু

1745

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় এখানে রেল কিংবা সড়ক সংযোগ তৈরি করার জন্য বড় বড় সেতু নির্মাণ করতে হয়। বাংলাদেশের অন্য সকল সেতুর মতো গুরুত্ব পূর্ণ একটি সেতু “ভৈরব সেতু”। এই সেতুর প্রাতিষ্ঠানিক নাম সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু, কিন্তু স্থানীয় মানুষের নিকট এটি ভৈরব সেতু নামে পরিচিত। ভৈরব ও আশুগঞ্জের মধ্যে মেঘনা নদীর উপর নির্মিত এই সেতু। এই সেতুটি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল সিলেটের সাথে ঢাকার যোগাযোগ উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। এই সেতুটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অংশ। এই সেতুর পাশেই ভৈরব রেল সেতু অবস্থিত।

চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে একটি রেলপথ সংযোগের জন্য আসামের চা উৎপাদনকারীদের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে, আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে১৮৯১ সালে বঙ্গের পূর্বাঞ্চলে একটি রেলওয়ে ট্রাক নির্মাণ শুরু করে। চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লায় ১৫০ কিলোমিটার একটি পথ ১৮৯৫ সালে চালু করা হয়। কুমিল্লা–আখাউড়া-কুলাউড়া-বদরপুর অংশ ১৮৯৬-৯৮-এ চালু করা হয় এবং ১৯০৩ সালে লামডিং পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়। মেঘনা নদীর পশ্চিম তীরের রেল ব্যবস্থার সাথে পূর্ব প্রান্তকে সংযোগ করার জন্য, ১৯১০ এবং ১৯১৪ সালের মধ্যে টঙ্গী-আখাউড়া লাইন নির্মাণ করা হয়। যাইহোক, ঐসময়ে মেঘনা নদীর উপর কোন সেতু ছিলনা। আর তখনি প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে ভৈরব সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেতুটির নির্মাণকাজ ১৯৯৯ সালে শুরু হয় ও ২০০২ সালে সম্পন্ন হয়। সেতু নির্মাণে ৬৩৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়। প্রথমে এই সেতুর নাম বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য মৈত্রী সেতু রাখা হয়, পরে ২০১০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে নামকরণ করা হয়।

প্রধান সেতুটির দৈর্ঘ্য ১.২ কিলোমিটার ও প্রস্থ ১৯.৬০ মিটার। এতে সাতটি ১১০ মিটার স্প্যান এবং দুটি ৭৯.৫ মিটার স্প্যান রয়েছে। এটি একটি টোল সেতু, সেতু কর্তৃপক্ষ পারাপার হওয়া যানবাহন থেকে টোল সংগ্রহ করে।

যেভাবে যাবেনঃ-

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব দূর্জয় মোড় থেকে রিক্সাযোগে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর নীচের মধ্যবর্তী স্থানে যাওয়া যায়।