চার কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত। রয়েছে বনভূমি। সেখানে কেওড়া, সুন্দরী, গড়ান, হেঁতাল, গোলপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ শৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে। নিভৃত সোনার চরে শুধু নানান ধরনের বৃক্ষের সমাহারই নয়, রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রাণীও। হরিণ, শিয়াল, মহিষ, বন্য শুয়োর, বানর এ বনের বাসিন্দা। দ্বীপের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে আঁকাবাঁকা খাল, সেখানে দেখা মেলে নানা প্রজাতির হাজারো পাখির। এখানকার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য সবার চোখ জুড়িয়ে দেবে।
পটুয়াখালীর সর্বদক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের কোলে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য নিয়ে জেগে আছে সোনার চর, জায়গাটির বিবরণই দেয়া হয়েছে উপরে। জেলার গলাচিপা উপজেলা থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব এবং পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা থেকে ৪০ কিলোমিটার পূর্বে বুড়াগৌরাঙ্গ নদের মোহনায় বঙ্গোপসাগরে দ্বীপটির অবস্থান। সোনার চর পূর্ব-পশ্চিমে ৪ কিলোমিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে আড়াই কিলোমিটার। চরটির মোট আয়তন ১০ বর্গকিলোমিটার।
সারাবছরই সকাল-দুপুর-বিকেল পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা দ্বীপ। নদী আর সাগরের জল আছড়ে পড়েছে চারপাশে। সূর্যের আলোয় চিকচিক করে বালি। প্রকৃতির সাজে সজ্জিত এই দ্বীপটিতে উড়ে আসা অতিথি পাখিদের কলকাকলি সমুদ্র সৈকতের অপরূপ রূপকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। আর শোনা যায় ঝাউ বাগানের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা বাতাসের শোঁ-শোঁ শব্দ। সবসময় পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে এখানে, তবে সংখ্যাটা খুবই নগন্য। তবে শীত মৌসুমে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ে। পর্যটকরা সবুজ এই চরটির একদিকের বন ও অন্য দিকের নয়নাভিরাম সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য এবং সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখে বলতে পারবে অদ্ভুতদর্শন- এক সঙ্গে সুন্দরবন এবং কুয়াকাটা বা সেন্টমার্টিন!
শেষ বিকেলে সূর্যের রক্তিম আলো সৈকতে এসে পড়লে এক মনোরম দৃশ্য দেখা মেলে সোনার চরে। এখানে গাছপালা, ছোট ছোট খাল, সমুদ্রের ঢেউ আমার মন কেড়েছে। এখানের পরিবেশ একটা অন্যরকম অনুভুতির সৃষ্টি করে যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। নগরের কর্মচাঞ্চল্য থেকে বহুদূরে এই সৈকতের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য এখনো অনেকের কাছে অজানা। মূলত কাঙ্ক্ষিত সেবা আর যাতায়াত সমস্যার কারণে এখনো পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়নি বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই লীলাভূমি।
কিভাবে যাওয়া যায়:
সোনার চর পটুয়াখালি জেলার বিচ্ছিন্ন এক চরের নাম। পটুয়াখালির গলাচিপা থেকে সোনার চর যেতে পারবেন। আবার চর কুকরি-মুকরি বা চর কচ্ছপিয়া ফেরিঘাট থেকে সরাসরি সোনার চর যেতে পারবেন। গলাচিপা থেকে সোনার চরের দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। চর কুকরি-মুকরি বা চর কচ্ছপিয়া থেকে দূরত্ব প্রায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটারের মতো। সুতরাং সোনার চর যেতে হলে চর কচ্ছপিয়া বা চর কুকরি-মুকরি থেকেই সহজ যাত্রা