বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রাচীন জনপদ বাগেরহাট জেলা। এই জেলাতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের আগমন ঘটে। তারা প্রায় সকলেই ধর্ম প্রচারের জন্য এই অঞ্চলে আসেন। তারা অনেকেই এই জনপদের বিভিন্ন স্থানে মসজিদ কিংবা ধর্মের বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেন। যেগুলোর অস্তিত্ব এখন টিকে আছে। বাগেরহাট জেলাতে অসংখ্য মসজিদ রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম একটি মসজিদ হলও সিঙ্গাইর ( এক গম্বুজ) মসজিদ। ঐতিহ্য গত দিক থেকে এই মসজিদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সিঙ্গাইর মসজিদ একটি মধ্যযুগীয় ঐতিহাসিক মসজিদ। মসজিদটির নির্মানশৈলী দেখে ধারনা করা হয় এটি পঞ্চদশ শতকে নির্মিত। আরো ধারনা করা হয় যে মসজিদটি মুঘল শাসনামলে খান জাহান আলী (রঃ) নির্মান করেন। ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে মাএ ২৫ মিটার দক্ষিন-পূর্বে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের পাশে সুন্দরঘোনা গ্রামে অবস্থিত এ মসজিদটি। সিঙ্গাইর মসজিদটি একটি একগম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। বর্গাকারে নির্মিত সিঙ্গাইর মসজিদের আয়তন (১২.০৪ x ১২.০৪) মিটার এবং দেয়ালগুলোর পুরুত্ত গড়ে ২.১০ মিটার। প্রত্যেক কোনে বাইরের দিকে গোলাকারে বর্ধিত একটি করে সংলগ্ন বুরুজ রয়েছে।
বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয় যে, মসজিদের চর্তুরদিকের কার্ণিশগুলো বক্রাকার। মসজিদের পূর্ব দেওয়ালে ৩টি খিলান যুক্ত দরজার এবং উত্তর ও দক্ষিণের দেয়ালে রয়েছে ১টি করে খিলান দরজা। পূর্বের দেওয়ালের মাঝের দরজাটি আকারে অন্যগুলোর চেয়ে বড়। এ থেকে ধরে নেওয়া হয় এটাই ছিলো মসজিদের প্রধান ফটক মসজিদের ভিতরে পশ্চিম দেয়ালের মাঝা-মাঝি অংশে একটি অলংকৃত মেহরাব আছে অনুরুপ অলংকৃত পোড়া মাটির সাজ চোখে পড়ে দরজাগুলোর দু’পাশে। অন্যান্য সাধারন
বৈশিষ্ট্য ষাটগম্বুজ মসজিদের অনুরুপ। কেবলমাএ চার কোনের সংলগ্নে চারটি গোলাকার বরুজ মসজিদের কার্ণিস পর্যন্ত উঠানো । সিঙ্গাইর মসজিদটির অবস্থান ষাটগম্বুজ মসজিদের কাছাকাছি হওয়াতে ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখতে যাওয়ার সময় পাশাপাশি সিঙ্গাইর মসজিদটিও ঘুরে দেখে আসা যাবে।
যেভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে সরাসরি বাস কিংবা ট্রেইনে চেপে সরাসরি বাগেরহাট জেলা শহরে পৌঁছানো যায়। ঢাকার গাবতলি,সায়দাবাদ,মহাখালি বাস টার্মিনাল গুলো থেকে বাস পাওয়া যায়। সিঙ্গাইর মসজিদটি বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলাতে অবস্থিত। জেলার বাসস্ট্যান্ড নামা আক্তু হাঁটলেই এই মসজিদটি চোখে পড়বে।