ময়মনসিংহ জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ময়মনসিংহ জেলা মৈমনসিংহ গীতিকা, মহুয়া, মলুয়া, দেওয়ানা মদীনা, চন্দ্রাবতী, কবিকঙ্ক, দীনেশচন্দ্র সেনের জন্য বিখ্যাত।
নামকরনের ইতিহাস:-
ময়মনসিংহ জেলার নাম নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রচলিত আছে। ষোড়শ শতাব্দীতেবাংলার স্বাধীন সুলতান সৈয়দ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ তাঁর পুত্র সৈয়দ নাসির উদ্দিন নসরত শাহ’র জন্যএ অঞ্চলে একটি নুতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই থেকে নসরতশাহী বা নাসিরাবাদ নামের সৃষ্টি।সলিম যুগের উৎস হিসেবে নাসিরাবাদ, নাম আজও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোথাও নাসিরাবাদ কথাটিউল্লেখ্য করা হচ্ছে না। ১৭৭৯ সালে প্রকাশিত রেনেল এর ম্যাপে মোমেসিং নামটি ‘ময়মনসিংহ’ অঞ্চলকেইনির্দেশ করে। তার আগে আইন-ই-আকবরীতে ‘মিহমানশাহী’ এবং ‘মনমনিসিংহ’ সকার বাজুহার পরগনাহিসেবে লিখিত আছে। যা বর্তমান ময়মনসিংহকেই ধরা হয়।
ভৌগোলিক সীমানা:-
ময়মনসিংহ জেলার উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে গাজীপুর জেলা, পূর্বে নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে শেরপুর, জামালপুর ও টাঙ্গাইল জেলা অবস্থিত।
ময়মনসিংহ জেলা ১৩টি উপজেলা
ত্রিশাল,
ঈশ্বরগঞ্জ,
গফরগাঁও,
গৌরীপুর,
তারাকান্দা,
ধোবাউড়া,
নান্দাইল,
ফুলপুর,
ফুলবাড়িয়া,
ভালুকা,
ময়মনসিংহ সদর
মুক্তাগাছা এবং
হালুয়াঘাট
কৃতি বাক্তিঃ-
জগদীশ চন্দ্র বসু
কানাহরি দত্ত (১২ – ১৩ শতক) – মনসামঙ্গল কাব্যের আদি কবি;
করম শাহ (? – ১৮১৩) – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি-বিরোধী আন্দোলনের ব্যক্তিত্ব;
হেমেন্দ্রমোহন বসু (১৮৬৬ – ২৮ আগস্ট ১৯১৬) – প্রখ্যাত বাঙালি ব্যবসায়ী;
কেদারনাথ মজুমদার(১৮৭০ – ১৯২৬)- বিখ্যাত ইতিহাসবিদ, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক;
হেমেন্দ্রকিশোর আচার্য চৌধুরী (২৮ মে ১৮৮১ – জুন ১৯৩৮) – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী;
ক্ষীরোদাসুন্দরী চৌধুরী (১৮৮৩ – ?) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা।
মুজিবুর রহমান খান ফুলপুরী (১৮৮৯ – ৫ জানুয়ারি ১৯৬৯) – সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মী;
চন্দ্রকুমার দে (১৮৮৯ – ১৯৪৬) – লেখক এবং ময়মনসিংহে প্রচলিত লোকগীতির সুবিখ্যাত সংগ্রাহক;
আনন্দকিশোর মজুমদার (১৮৯২ – ১৯৪০) – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী;
সুরেন্দ্রমোহন ঘোষ (২২ এপ্রিল ১৮৯৩ – ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬) – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী;
শ্রী নরেন্দ্রচন্দ্র ধর (১৮৯৬ – ১৯৭৮) – পণ্ডিত সন্ন্যাসী;
আবুল কালাম শামসুদ্দীন (৩ নভেম্বর ১৮৯৭ – ১৯৭৮) – সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং ভাষাবিদ;
আবুল মনসুর আহমেদ (১৮৯৮ – ১৮ মার্চ ১৯৭৯) – সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক;
জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা-জন্ম ১০ জুলাই ১৯২০, মৃত্যু ২৭মার্চ ১৯৭১। শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তিবাদী ও প্রগতিশীল শিক্ষক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হলের আবাসিক ভবনে থাকাকালে গুলিবিদ্ধ হন এবং ২৭ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
নরেশ রায় (২২ এপ্রিল ১৯৩০) – ভারত উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের ব্যক্তিত্ব এবং চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনে জড়িত বিপ্লবী;
হরুবালা রায় (৪ মে ১৯৪৪) – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী।
বিখ্যাত খাবারঃ-
মুক্তা-গাছার মন্ডা
বিখ্যাত স্থানঃ-
শশী লজ
গৌরীপুর লজ
আলেকজান্ডার ক্যাসেল
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা
স্বাধীনতাস্তম্ভ
ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী পার্ক
ময়মনসিংহ জাদুঘর
বোটানিক্যাল গার্ডেন
নজরুল স্মৃতি কেন্দ্র
মুক্তাগাছা জমিদারবাড়ি
মহারাজ সূর্যকান্তের বাড়ি
গৌরীপুর রাজবাড়ি
বীরাঙ্গনা সখিনার মাজার
রামগোপাল জমিদারবাড়ি
ফুলবাড়িয়া অর্কিড বাগান
চীনা মাটির টিলা
আবদুল জববার স্মৃতি জাদুঘর
কুমিরের খামার
তেপান্তর ফিল্ম সিটি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় – ময়মনসিংহ
কিভাবে যাবেনঃ-
সড়ক পথে ঢাকা হতে ময়মনসিংহের দূরত্ব ১২১ কিলোমিটার এবং রেলপথে ঢাকা হতে ময়মনসিংহ রেল স্টেশনের দূরত্ব ১২৩ কিলোমিটার। ঢাকার সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকে ময়মনসিংহে আসার সরাসরি দুরপাল্লার এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস আছে; এগুলোতে সময় লাগে ২.৩০ হতে ৪.০০ ঘন্টা।
ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনে সরাসরি ময়মনসিংহে আসা যায়। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন ময়মনসিংহের পথে যাতায়ত করে।