আমাদের দেশের ইতিহাস পড়তে গেলে কত রহস্যের মধ্যে যে আটকে যেতে হয়, হিসেব মেলা ভার। শুধু পড়লেই হয় না। সেসব রহস্য খুলতে গিয়ে মুখোমুখি হতে হয় আরও নতুন রহস্য। এরকম এক রহস্যময় অথচ ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় কানা রাজার সুড়ঙ্গ। কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনা নামক দুর্গম এলাকায় প্রাচীন ঐতিহ্যের রহস্য চাদরে ঢাকা রয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আঁধার মানিক। যা স্থানীয়ভাবে কানা রাজার সুড়ঙ্গ হিসেবে পরিচিত।
উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পাটুয়ারটেক সৈকতের নিকটে নিদানিয়া পাহাড়ের অভ্যন্তরে সুড়ঙ্গ গর্তের সমাহার এ কানারাজার গুহা। ৪০০ মিটার দীর্ঘ এই গুহা নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রচলিত নানা কিংবদন্তি। জনশ্রুতি অনুযায়ী, আরাকান রাজা চিন পিয়ান ব্রিটিশদের কাছে রাজ্য হারিয়ে উদ্বাস্তু জীবনের শেষ সময়গুলো এখানে কাটান। তাকে গ্রেফতার করতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৎকালীন ৫ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে। আত্মরক্ষায় রাজা এই পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নেন। সেই কারণে এর নাম ‘কানা রাজার সুড়ঙ্গ’। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের দিকে সর্বপ্রথম রাশিয়ান তাল-গ্যাস অনুসন্ধানী দল এ গুহাটি আবিস্কার করেন। ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রেলিয়ার এক বিশেষজ্ঞ দল এ অঞ্চলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান চালিয়েছিল। তবে কোন তেল-গ্যাস পাওয়া যায়নি।
গুহাটির দৈর্ঘ্য সাড়ে তিন শ ফুট। এর ৭০ ফুট যাওয়া যায় হেঁটে। এরপরই হামাগুড়ি দিতে হয়। আছে এক বড় বৈঠকখানা। সেখানে আবার চারটি সুড়ঙ্গপথ।দুটি পথ গেছে পাহাড়ের ওপরের দিকে, অন্য দুটি পথ গেছে নিচের দিকে। এটি কেবল সুড়ঙ্গ নয়, হাজার বছরের ইতিহাস। সুড়ঙ্গটির দৈর্ঘ্য কয়েক কিলোমিটার হতে পারে। দেয়ালে আছে নানা ছবি। ১৯৯০ সালে প্রকাশিত ‘কক্সবাজারের ইতিহাস’ গ্রন্থে এই সুড়ঙ্গের বর্ণনা আছে।কক্সবাজারের ইতিহাস গ্রন্থ ছাড়াও পাকিস্তান আমলে প্রকাশিত পর্যটন বিভাগের ট্যুরিস্ট গাইডে এই সুড়ঙ্গের কথা উল্লেখ ছিল।
যেভাবে যাবেনঃ-
প্রথমে আসতে হবে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলা তে।তারপর সিএনজি তে যেতে হবে কাউরখোপ ইউনিয়নের উখিয়ার ঘোনা এর ড্রোমর ঘোনা তে।এখানেই পেয়ে যাবেন কানা রাজার সুড়ঙ্গ(আধাঁর মানিক)