জগন্নাথ দিঘী| ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

2319

বাংলাদেশে ঐতিহাসিক দিঘীগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ দিঘী। কুমিল্লা জেলার তথা সারা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দিঘী হচ্ছে পরীর দিঘী খ্যাত এই জগন্নাথ দিঘী।ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ্বে অবস্থিত প্রায় ২৫০ বছরেরও পুরোনো এই দিঘী আয়তনে বিশাল।

 

কথা সাহিত্যিক জহির রায়হান তাঁর “হাজার বছর ধরে” উপন্যাসে এই দিঘীকে বিশালত্বের জন্য পরীর দিঘী হিসেবে উল্লেখ করলেও ইতিহাস মতে এই দিঘী খনন করা হয় তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের উদয়পুরের জমিদার পরবর্তীতে ত্রিপুরা রাজ্যের এক যুগেরও বেশি সময়ের মহারাজা বাঙলার বাঘ বা ভাঁটির বাঘ খ্যাত সমশের গাজী।(তাঁর উত্থানের ইতিহাস অনেক বড় যা এখানে বর্ণনা করা সম্ভব নয়।পরবর্তীতে দেয়া হবে।)১৭৩৯ সালের দিকে শাসনভার নেয়ার পর ত্রিপুরা রাজ্য শাসনের সময় তাঁর বহু জনহৈতিষী কাজের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তালুকদার জগন্নাথ সেনের নামানুসারে নামকরনকৃত জগন্নাথ এলাকায় এই দিঘী খনন।

এই দিঘীর পাড়ে তৎকালীন সময়ে শাহ সূজা রাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে আরাকান রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার সময় একটি রাস্তা বেঁধে যান কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত।যা এখন ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক।চলাচল সুবিধা হওয়ায় দিঘীর পাড়ে গড়ে উঠে জনবসতি।কালের পরিক্রমায় বাঙলাদেশ স্বাধীনের পর এখানে এরশাদ সরকার গডে তোলেন ১০০ পরিবারের গুচ্ছগ্রাম।বর্তমানে এই দিঘীর পাড়ে গুচ্ছগ্রামকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে হোটেল রেস্তোরা সহ নানারকম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।

দিঘীর পশ্চিমে রাস্তার পাশে রয়েছে সুনামধন্য ঐতিহাসিক নারানকরা জামেয়া মাদ্রাসা এবং সাথেই গড়ে উঠছে একটি কলেজ(নির্মাণাধীন)। দিঘীর পশ্চিম পাড়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক,পূর্ব ও দক্ষিন পাড়ে গুচ্ছগ্রাম,উত্তরে গণকবর।দক্ষিন পাড়ের পশ্চিম কোনে রয়েছে সরকারী ডাক বাংলো।ছায়া সুনিবিড় এই দিঘীর পাড়ে যাত্রা পথে অনেকেই বসে জিরিয়ে নেন।উপভোগ করেন মনোরম পরিবেশ।পাখির কল কাকলী।সব মিলিয়ে কুমিল্লার অন্যতম প্রাচীন এবং বাঙলাদেশের সবচেয়ে বড় দিঘী এই ঐতিহাসিক পরীর দিঘী জগন্নাথ দিঘী।

যেভাবে যাবেনঃ

ঢাকার গুলিস্তান,মতিঝিল কিংবা কলাবাগান থেকে কুমিল্লা গামী বাসে করে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলাতে পৌছাতে হবে। সেখান থেকে রিক্সা যোগে পরীর দিঘি যাওয়া যায়।