করোনা তান্ডবে লকডাউনের কারণে আটকে পড়া প্রায় এক লাখ প্রবাসীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চালু করা হচ্ছে আর্ন্তজাতিক বিশেষ ফ্লাইট। কাল শনিবার থেকেই চালু করা হবে এই ফ্লাইট। প্রবাসী কর্মীদের বিষয়টি মাথায় রেখে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর জন্য এসব বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার করা হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান সন্ধ্যায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বৃহস্পতিবার দিনভর বেবিচক কার্যালয়ে সংশিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে পাঁচটি দেশে ১০০ থেকে ১২০টি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।জানা গেছে, লকডাউনকালীন বিদেশগামী কর্মীদের গন্তব্য দেশে যাওয়া বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্মকর্তা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, বিমানের এমডিসহ পদস্থ কর্মকর্তারা।
বৈঠকের পর সন্ধ্যায় জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন- প্রাথমিকভাবে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে সবারই ইতিবাচক সাড়া দিযেছে। এই বিষয়ে রাতে মন্ত্রী পর্যায়ের আরেকটি বৈঠকে চূড়ান্ত ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হতে পারে। তবে এরই মধ্যে কিভাবে কোন ফ্লাইট কতোদিন চালানো হবে- সেটাও নির্ধরিত করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার প্রবাসী কর্মীদের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার বিষয়ে সমস্যা নিরসনে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্র সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান, বিমানের এমডিসহ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়-সৌদি আরব, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সিঙ্গাপুরের জন্য বিশেষ ফ্লাইট চালু করা হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বিস্তারিত ওয়ার্ক প্ল্যান বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করে।
রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা নেগেটিভ সনদসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এয়ারপোর্টে আনার দায়িত্ব পালন করবে। প্রবাসী কর্মীরা কেবল জরুরি প্রয়োজনে বাংলাদেশ মিশনের ছাড়পত্র গ্রহণ করে এবং দেশে প্রযোজ্য কোয়ারেন্টিন শতর্ মেনে কোভিড নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে আসতে পারবেন।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধের নির্দেশনা জারি করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে গত ৪ এপ্রিল থেকে বন্ধ আছে দেশের সব অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট যা ২০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে প্রবাসী কর্মীদের জন্য ফ্লাইট চালু রাখার দাবি জানিয়ে আসছিল আটাব, বায়রা ও হাব সহ বেশ কয়েকটি সংগঠন।
জানাগেছে, অনেক প্রবাসী কর্মী ছুটিতে এসে আটকা পড়েছেন ১৩-১৪ মাস ধরে। তারপরেও অনেক চেষ্টা করে এবং অর্থ খরচ করে রি-এন্ট্রি পারমিট পেয়ে গন্তব্য দেশের শর্ত অনুযায়ী কোয়ারেন্টিনের হোটেল বুকিং দিয়েছেন। বিদেশ গমনে সেখানে যুক্ত হয়েছে অতিরিক্ত খরচ। তারপর টিকেট কেটেও এখন ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার খবরে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে প্রবাসী কর্মীদের। শুধু কর্মী নন বিদেশ থেকে অনেক পেশারই চাকরিজীবীরা দেশে এসেছেন ছুটিতে। তাদেরও এখন হোটেল বুকিং আর টিকেটের খরচ দিয়ে মাথায় হাত। কারণ অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকেট রি-ইস্যু করা গেলেও কোয়ারেন্টিনের টাকা কোনোভাবেই ফেরত যোগ্য না।
তেমনই একজন কাতারের দোহা থেকে ছুটিতে আসা রানা বলেন- ছুটিতে এসে ১৩-১৪ মাস আটকা পড়েছি। অনেক সময় পরে রি-এন্ট্রি পারমিট পেলেও এখন ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেলে কোয়ারেন্টিনের জন্য যে টাকা আমরা হোটেলকে দিয়েছি সেটা পুরাটাই লস যাবে। তারপর টিকেট রি-ইস্যু করতে লাগবে অতিরিক্ত টাকা। আমাদের তো মরার ওপর খাড়ার ঘা অবস্থা।
জানা গেছে, ফ্লাইট বন্ধের এই সিদ্ধান্তে প্রবাসী কর্মীদের মতো বিপদে পড়েছেন জনশক্তি রফতানিকারকরা। আটাব মহাসচিব মাজহারুল হক ভুইয়া বলেন- এই মুহূর্তে ৫০-৬০ হাজার ভিসা প্রক্রিয়াধীন আছে, ২০-২৫ হাজার কর্মীর টিকেট ইস্যু করা আছে। কোনও অগ্রিম নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়াটা অপেশাদার আচরণ।
দেশের জন্য এটি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কাতার এবং ওমানের হাজার হাজার যাত্রীরা লাখ লাখ টাকা দিয়ে কোয়ারেন্টিন হোটেল বুকিং করে রেখেছে যেগুলো নন রিফান্ডেবল, যাত্রীরা যেতে না পারলে প্রত্যেকের লাখ টাকার ওপর লোকসান হয়ে যাবে।
যেকোনো দেশের এয়ার টিকেট, হোটেল বুকিং, হেলিকপ্টার সার্ভিস, টুরিস্ট ভিসা প্রসেসিং এবং প্যাকেজ ট্যুর করে থাকি। বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন নিচের ঠিকানায়।
zooFamily (community of aviation & travel)
রোড ৩, হোল্ডিং ৩, সুইট ৩৪,হ্যাপি আর্কদিয়া শপিং মল,ধানমণ্ডি,ঢাকা ১২০৫, বাংলাদেশ।
মোবাইল নাম্বার: ০১৯৭৮৫৬৯২৯৪