ধানমন্ডি লেক| ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1342

ধানমন্ডি লেক ঢাকার ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত একটি লেক। লেকটি প্রাথমদিকে কাওরান বাজার নদীর একটি পরিত্যক্ত খাল ছিল যা তুরাগ নদীর সাথে মিলিত হয়েছিল। লেকটি আংশিকভাবে বেগুনবাড়ি খালের সাথে মিলিত হয়েছে। ১৯৫৬ সালে ২৪০.৭৪ হেক্টর জমিতে ধানমন্ডি লেকের আশেপাশের এলাকাকে আবাসিক এলাকা হিসেবে উন্নীত করা হয়।

বিকালে সময় কাটানোর জন্য বেশ জনপ্রিয় ধানমন্ডির প্রাণ ধানমন্ডি লেক। ঢাকার অন্যান্য আবাসিক এলাকার মত ধানমন্ডি একটি অভিজাত পাড়া। আজকের এই আবাসিক এলাকা ধানমন্ডিতে ব্রিটিশ আমলে চাষাবাদ হতো। তবে সেইসময় ধানমন্ডিতে কিছু কিছু বসতিও ছিল তবে পরিমাণে খুবই সামান্য। সেই সময় ধান উৎপন্ন হতো বলেই কিন্তু এর নামকরণ ধানমন্ডি হয় নি। এলাকাটিতে ধানের এবং অন্যান্য শস্যের বীজের হাট বসতো। হাট বাজারকে ফার্সী এবং উর্দু ভাষায় মন্ডি বলা হয়। সেখান থেকেই এলাকাটির নাম ধানমন্ডি হয়।

ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, ধানমন্ডির পাশেই একটি খাল ছিল যা তুরাগ নদীর এবং বুড়িগঙ্গা-এর সাথে সংযুক্ত ছিল। এটা কাওরণ বাজার নদী হিসাবে পরিচিত ছিল। উনিশ শতকের দিকে হয়তো খালটি শুকিয়ে গিয়েছিল। সেই কারণে হাট হিসাবে ধানমন্ডির গুরুত্ব কমে গিয়েছিল। ধানমন্ডি তখন জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে পড়েছিল। গত শতকের প্রথম পঞ্চাশ-ষাট বছরেও এ অবস্থার পরিবর্তণ ঘটে নি। ধানমন্ডি লেক 2পরবর্তীতে পাকিস্তান আমলের শেষের দিকে, ১৯৫০ এর দশকে ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সরকারী উদ্যোগে, অভিজাতদের আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে উঠে ধানমন্ডি। ধানমন্ডি এখন ঢাকার অভিজাতদের অনেকগুলো আবাসিক এলাকার মধ্যে একটি। তবে ধানমন্ডির কিছু কিছু এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

বিশেষত সকালে এবং বিকালে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের আনাগোনা বেশ চোখে পড়ে। এছাড়াসংক্ষিপ্ত পথে পথচারী গন্তব্যে পৌছাতে অনেক পথচারী এই লেকটি ব্যবহার করেন। তাছাড়া ১লা বৈশাখের মত উৎসবের দিনগুলোতে লেকে লোক সমাগম বেশি হয়। বিভিন্নসাংস্কৃতিক সংগঠন প্রায়শ তাদের কিছু কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনকরে এই লেকে।

কৃষ্ণচূড়া, বটগাছ, রেইন্ট্রি, আমগাছ, কাঁঠাল গাছ, নিমগাছ, বকুল গাছ, কদম গাছসহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে এই লেক সংলগ্ন পার্কে।

খাবার ব্যবস্থা পার্কটিতে রেষ্টুরেন্ট ও ফাষ্টফুড শপ রয়েছে। এছাড়া পার্কটির প্রবেশমুখে কিছু অস্থায়ীদোকান এবং ভেতরেও ফেরিওয়ালারা চা, কফি, বাদাম, ঝালমুড়ি ইত্যাদি বিক্রি করে। বিবিধ সৌখিন মৎস্য শিকারীদের জন্য অর্থের বিনিময়ে মাছ শিকারের সুযোগ রয়েছে এখানকার লেকে।

ধানমন্ডিলেকটির নির্দিষ্ট কোন খোলা ও বন্ধের সময়সূচী নেই তবে ভোর ৫.০০টা থেকে রাত১০.০০টা পর্যন্ত দর্শনার্থী অবস্থান করতে পারবেন। লেকটিতে প্রবেশের জন্যকোন টিকেটের প্রয়োজন হয় না।

কীভাবে যাবেন:

ঢাকা শহরের যে কোন প্রান্ত থেকে ধানমন্ডিলেক আসা যায়। বাসে আসলে নামতে হবে ঝিগাতলা। সেখান থেকে রিক্সা করে ধানমন্ডিলেক যাওয়া যায়।