অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্য

1530

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের প্রতীক অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যটি। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলার নারী-পুরুষের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং বিজয়ের প্রতীক এই ভাস্কর্য। বাংলাদেশের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের সাথে জড়িয়ে থাকা স্থান প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে এটি অবস্থিত। ১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটির কাজ শুরু হলেও তা শেষ হতে সময় লেগেছিল দীর্ঘ। ৬ ফুট বেদির উপর নির্মিত এ ভাস্কর্যটির উচ্চতা ১২ ফুট এবং প্রশস্থতা ৮ ফুট । রক্তক্ষয়ী পঁচাত্তরের পর দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রাখা হয়েছিল ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ। পরবর্তীতে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১৯৭৯ সালের জানুয়ারী মাসে পুনরায় ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ শুরু হয় এবং একই বছরের ১৬’ই ডিসেম্বর ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করা হয়।এর নির্মাতা মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ।

ভাস্কর্যটিতে তিনজন তরুণের মূর্তি প্রতীয়মাণ। এদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং একজন নারী। মূর্তির সর্ব ডানে রয়েছে কুচি দিয়ে শাড়ি পরিহিতা প্রত্যয়ী এক যোদ্ধা নারী সেবিকা। তারপাশে কাঁধে রাইফেলের বেল্ট ধরা, কাছা দেওয়া লুঙ্গি পরনে এক যুবক যার ডানহাতে একটি গ্রেনেড- তিনি বৃহত্তর গ্রাম-বাংলার জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি। আর তার বামপাশে জিন্সপ্যান্ট পরা অপেক্ষাকৃত খর্বকায় তরুণ যার হাতে থ্রি-নট রাইফেল এবং চোখে-মুখে স্বাধীনতার দীপ্ত চেতনা।

ভাস্কর্যটির নাম “অপরাজেয় বাংলা” হওয়ার কৃতিত্ব সে সময়ের “দৈনিক বাংলার” সাংবাদিক সালেহ চৌধুরীর। তিনি ভাস্কর্য নিয়ে সেসময় দৈনিক বাংলাতে একটি প্রতিবেদন লিখেছিলেন যার শিরোনাম ছিল “অপরাজেয় বাংলা”। পরবর্তীতে এ নামটিই সর্বসম্মতি ক্রমে গ্রহণ করা হয়।
“অপরাজেয় বাংলা” ভাস্কর্যটি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক, প্রেরণার উৎস এবং সকল আন্দোলনের প্লাটফর্ম হিসাবে কতটা যে গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝাতে মিশুক মনিরের খুব অসাধারণ একটি বক্তব্য অসামান্য- “ অপরাজেয় বাংলা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছাতে কোন লিফ্লেটের দরকার পড়েনি।

যেভাবে যাবেনঃ

ঢাকা শহরের যেকোন প্রান্ত থেকে বাসে করে শাহাবাগ পর্যন্ত যেতে হবে। সেখান থেকে রিক্সায় করে সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে গেলেই চোখে পড়বে অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যটি।