এই বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছেন এমন অনেক মানুষ আছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন বাউল সম্রাট লালন ফকির। তার বাস্তবিক জীবন বোধ, কুসংস্কারের বিরুদ্ধ্যে সাহসী অবস্থা, অসাম্প্রদায়িকতা তার গানের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। তাই তিনি মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয়।
লালন ফকিরের জীবন সম্পর্কে বিশদ বিবরণ পাওয়া যায় না। তার সবচেয়ে অবিকৃত তথ্যসূত্র তার নিজের রচিত অসংখ্য গান। লালনের কোন গানে তার জীবন সম্পর্কে কোন তথ্য দেয়া নেই বলে জানা যায়। তিনি একজন বাঙালী যার জন্মস্থান বর্তমান বাংলাদেশের যশোর জেলার ঝিনাইদহ মহকুমার হারিশপুর গ্রামে। লালন শাহের জাতি বা সম্প্রদায় নিয়ে অনেক মতভেদ আছে। এই প্রশ্ন তাঁর জীবদ্দশায়ও বিদ্যমান ছিল।
লালন ফকিরকে এখন আদর করে বলা হয় বাউল সম্রাট। আমাদের কোন আপত্তি নেই; আমরা বরং এই ভেবে খুশীই যে, আমাদের এই দরিদ্র দেশে এমন একজন সম্রাটের জন্ম যার গানের ছত্রছায়া এখনো আমাদের উপর ছায়া বিস্তার করে আছে। কিন্তু কেউ অস্বীকার করেন না, করতেও পারেন না যে, অদ্যকার এই বাউল সম্রাট তার স্বসময়ে এবং পরবর্তীকালেও অনেকদিন পর্যন্ত বেশরা ন্যাড়ার ফকির বলেই আখ্যায়িত হয়ে এসেছেন। এবং আজ যাকে বলা হচ্ছে মাজার; কিছুদিন মাত্র আগেও তার নাম ছিল লালনের আখড়া; আর ঝোপজঙ্গল পরিকীর্ণ সেই আখড়াটি ছিল গঞ্জিকাসেবী-প্রেমী রসিকজনের নিরিবিলি আশ্রয়স্থল। এই আখড়াই পরিবর্তিত বর্তমান রূপ হলো লালন শাহের মাজার।
যেভাবে যাবেনঃ-
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার ছেউড়িয়া নামক স্থানে লালনের আখড়ার অবস্থান। বাউল সম্রাট লালনকে সমাহিত করা হয় ছেঁউড়িয়ার মাটিতেই। তার মৃত্যুর পর শিষ্যরা এখানেই গড়ে তোলে মাজার বা স্থানীয়দের ভাষায় লালনের আখড়া। বিশাল গম্বুজে তার সমাধি ঘিরে সারি সারি শিষ্যের কবর রয়েছে। এ মাজারটি বাউলদের তীর্থস্থান।